রূপকুমারের কাজকর্মে অতিষ্ঠ স্বজনরা, প্রতিবাদে মানববন্ধন

Oct 12, 2025 - 18:00
রূপকুমারের কাজকর্মে অতিষ্ঠ স্বজনরা, প্রতিবাদে মানববন্ধন
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মিথ্যা মামলা দায়ের ও মামলা থেকে নাম বাদ দিতে অর্থ নেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মিঠাপুর বাজারে এ কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। এতে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন রূপকুমারদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তারই আপন বড় ভাই পরিতোষ বিশ্বাস, ছোট ভাই নিতাই বিশ্বাস, ভাতিজা উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং ভুক্তভোগী চম্পা রাণী, আলিম মোল্যা, হাসান শেখ, রকিবুল শেখ, পচা বিশ্বাস, মনিরুল শেখ এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান প্রমুখ। মানববন্ধকারীরা বলেন, গত ৪ অক্টোবর বিকেলের দিকে মিঠাপুর বাজারের পাশে নিজ বাড়িতে রুপকুমার ও তার ছেলে হৃদয় মারামারি করছিল। তখন হাসিবুল নামে এলাকার একটি ছেলে সেখানে দাঁড়িয়ে মারামারি দেখছিল। এসময় মারামারি ভিডিও করার ‘মিথ্যা দাবি’ করে হাসিবুলকে মারধর করে ফোন ও টাকা পয়সা কেড়ে নেয় রূপকুমার, তার ছেলে হৃদয় ও পরিবারের সদস্যরা। পরে বাজারের দুই-তিনজন ব্যবসায়ী রূপকুমারের কাছে যান হাসিবুলের ফোনটি ফেরত আনতে। এসময় ব্যবসায়ীদের ওপর তেড়ে আসে রূপকুমাররা। বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ ও গায়ে হাতও তোলেন। পরেরদিন ৫ অক্টোবর লোহাগড়া থানায় নিজেদের স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকার ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। রুপকুমারের ভাতিজা উজ্জ্বল বিশ্বাস ও প্রতিবেশী পচা বিশ্বাস বলেন, রুপকুমার যে মামলা করেছে, সেদিন আমরা ঢাকা বাজাতে এলাকার বাইরে গিয়েছিলাম। বাড়ি এসে শুনি আমাদের নামে মামলা হয়েছে। অথচ ঘটনার বিষয়ে আমরা কিছু জানিই না। রূপকুমারদের অত্যাচারে আমরা অন্য ঋষি পরিবারগুলো অতিষ্ঠ। মানববন্ধনকারীরা আরও বলেন, মারামারি করেছে তারা বাপ-ছেলে। অথচ টাকা খাওয়ার জন্য অন্যদের নামে মামলা করেছে। স্থানীয় কিছু লোকের সহযোগিতায় এর আগেও হয়রানিমূলক মামলা করে টাকা-পয়সা নিয়েছে রুপকুমার। আবার এখন নিরীহ মানুষদের আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে, এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করছে তারা। আমরা চাই, প্রশাসন তদন্ত করে এই মামলা থেকে সবাইকে অব্যাহতি দিক। আমরা শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে বসবাস করতে চাই। আর রূপকুমার ও তার এসব অপকর্মে যারা ইন্ধন দেয় তাদের শাস্তি চাই। আরও পড়ুন পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি প্রদান মিঠাপুর বাজারের ব্যবসায়ী আলিম মোল্যা, হাসান শেখ ও মনিরুল শেখ বলেন, মামলা করার আগেও নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে মানুষের মাধ্যমে আমাদের কাছে টাকা দাবি করেছিল। মামলা হওয়ার পর ফের টাকা-পয়সা চেয়েছে, মামলা তুলে নেবে বলে। কিন্তু আমরা কেউ টাকা দেয়নি। রূপকুমারের আপন ছোট ভাই নিতাই বলেন, আমার আপন বড় ভাই রূপকুমারের কাজকর্মে মানুষ অতিষ্ঠ। মাদকসহ নানা অপকর্মে জড়িত সে। এসব কাজে আমরা কেউ বাধা দিতে গেলে ওরা পরিবারের সবাই মিলে তাকে অত্যাচার করে৷ রূপকুমাররের নির্যাতনে আমি তাই এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গা বসবাস করছি। এখন মানুষ তার অপকর্মের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে শুনে এখানে এসে অংশ নিয়েছি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে রূপকুমারের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে হৃদয়ের করা মামলার এজাহারে তারা দাবি করেছেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে ৪ অক্টোবর আসামিরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে রূপকুমার, তার ছেলে হৃদয় ও স্ত্রীকে মারধর করে। এসময় রূপকুমারের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করে এক আসামি এবং তার গলার স্বর্ণের চেইনও ছিনিয়ে নিয়ে যায় আরেক আসামি। পরেরদিন ৫ অক্টোবর রাতে ফের তাদের বাড়ির টিনের বেড়া কুপিয়ে এবং ইট দিয়ে আঘাত করেছে আসামিরা। এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) অজিৎ কুমার রায় বলেন, মামলার পরপরই এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর আর কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে কোনোরকম হয়রানি করা হবে না। আর অবৈধ কোনো লেনদেন হলে সে ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিনিধি/এসএস