চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ডায়মন্ড ওয়াল্ডের এমডি দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নির্বাচনি জনসভা জনসমুদ্রে পরিনত হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা ৩ টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকার আলমডাঙ্গা এটিম মাঠে ঈগল প্রতীকের বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দুপুরের পর থেকে সাধারণ মানু্ষের ঢল নামে আলমডাঙ্গা এটিম মাঠে। বেলা ৩ টায় সমাবেশ শুরুর আগেই হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। বেলা ৪ টার সভামঞ্চে উপস্থিত হন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তার আগেই আলমডাঙ্গার বিশাল এ মাঠটি কানায় কানায় মানুষেপূর্ণ হয়ে যায়।
আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র হাসান কাদির গনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথি ও প্রার্থীর বক্তব্যে দিলীপ কুমার বলেন,
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমি এমপি হতে চাই। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার মানুষকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করার জন্য আমি এমপি হতে চাই। আমি আপনাদের কথা চিন্তা করে এখানে এসেছি। আমাকে সৃষ্টিকর্তা যতটুকু দিয়েছে। তা দিয়ে আমার পরবর্তী তিন প্রজন্ম সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে। কিন্তু সবকিছু ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
নির্বাচনী প্রচারণার বাধাঁ পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দিলীপ আগরওয়ালা বলেন, আমার কর্মীরা পোস্টার লাগাতে গেলে, লাগাতে পারছে না। আমার কর্মীদের লাগানো পোস্টার ব্যানার তারা কেটে দিচ্ছে। আমার কর্মীকে তারা মারধর করছে। হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা এবং আলমডাঙ্গা থানায় ১০ টি জিডি ও মামলা করেছি। ৬ টি অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা আমাকে টার্গেট করেছে। আপনারা পেপার পত্রিকায় দেখেছেন, শংকরচন্দ্র ইউনিয়নে আমি নির্বাচনী প্রচারে গেলে, আমার উপর হামলা করা হয়।
পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানিক অস্ত্র উঁচিয়ে আমাকে হত্যা ও অপহরণ চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। আমি তাদের নিকট কৃতজ্ঞ। মানিক এরেস্ট হয়। কিন্তু জামিনে মুক্তি পেয়েই প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। আমার কর্মীদেরকে ডেকে নিয়ে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু আমার কর্মীরা ভয় পেলে চলবে না, আপনাদেরও আমার মতোই সাহসী হতে হবে।
তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এই সরকারই দিয়েছে। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গায় বন্টন সমানভাবে হচ্ছে না। আমি নির্বাচিত হলে এসব অনিয়ম, বৈষম্য থাকবে না। আমি এমপি হলে প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি মডেল মসজিস , একটি মডেল মাদ্রাসা ও একটি মডেল পাবলিক কবরস্থান করবো। এছাড়াও প্রতিটা ইউনিয়নে একটি মডেল শ্মশান ও মডেল মন্দির করবো। কর্মমুখী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কর্মসংস্থান নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি; বেকার মুক্ত হবে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা। কর্মসংস্থান পেলে হাত পেতে অনুদান নেয়ার সংস্কৃতি বন্ধ হবে। সৃষ্টিকর্তা যদি সুযোগ দেয় , চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ৩ টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করবো।
তথ্য-প্রযুক্তি উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরে দিলীপ আগরওয়ালা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ফ্রি ওয়াইফাই জোন করে দেবো। অনলাইনে আউটসোর্সিং ট্রেনিং সেন্টার করে দেবো। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনা করা অবস্থাতেই অনলাইনে ইনকাম করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দেবো। সৃষ্টিকর্তা যদি সুযোগ দেয়, ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা আমি উপহার দেবো।
তিনি আরো বলেন, এছাড়াও কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী জাগরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, সন্ত্রাসমুক্ত জনপদ, অসাম্প্রদায়িক চুয়াডাঙ্গা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দলিত ও অবহেলিত জনগোষ্ঠী, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে আমি কাজ করবো।
পরিবেশেষ আলমডাঙ্গাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৫২ বছরের ইজারা শেষ করতে হলে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। আর এইবার যদি ভোটকেন্দ্রে না যান, তবে ওই পরিবার ১০০ বছরের চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার ইজারা নিবেন। কী করবেন? সিদ্ধান্ত আপনাদের।
ভিডিও দেখতে এই লেখার উপর ক্লিক করুন:-