উপস্থাপনা, অভিনয়, বিজ্ঞাপনচিত্র সব মাধ্যমেই অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস প্রশংসিত হয়েছেন। এবার তিনি এলেন অন্যভাবে। ব্র্যাকের কমিউনিটি-ভিত্তিক ভ্রমণবিষয়ক সেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম ‘অতিথি’। যার কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছেন অভিনেত্রী নিজেই। সে প্রসঙ্গেই মূলত আলাপ করলেন তিনি। পাশাপাশি এসেছে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়। কথা বলেছেন তারেক মোহাম্মদ।
ব্র্যাকের আসিফ সালেহ ভাই ‘অতিথি’র মূল উদ্যোক্তা। তিনি একদিন আমাকে এ প্রজেক্টে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন। আমার শুরু হয়েছিল ভ্রমণবিষয়ক অনুষ্ঠান দিয়ে। ১০ বছর বাদে আরেকটি শো করি। অভিজ্ঞতা ছিল সেটির। সে আলোকে বিশ্বাস ছিল এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করলে ভালো লাগবে। কাজের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। সকলে আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে ভ্রমণ বলতে কক্সবাজার, সুন্দরবন, সাজেক কিংবা সিলেট বুঝি। কিন্তু আমরা রাজশাহীকে তুলে ধরেছি। ওখানে ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে ছিলাম। যারা ভ্রমণ করতে এসেছে তারা চমৎকার স্মৃতি নিয়ে ফিরেছে। এমন ব্যবস্থা ছিল যাতে করে তাদের মন ভালো হয়ে যায় ভ্রমণ করে।
দীর্ঘদিন বাদে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন। যেখানে নিজেই পরামর্শ দিচ্ছেন। কেমন লাগছিল?
‘অতিথি’র জন্য বহুদিন বাদে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। শঙ্কিত ছিলাম। কী হবে না হবে। কাজগুলো আপলোড হওয়ার পর যে প্রশংসা পেয়েছি তা আশা করিনি।
অভিনয় থেকে দূরে আছেন। কী নিয়ে আপনার ব্যস্ততা?
এ বছরের জানুয়ারিতে বাবাকে হারিয়েছি। তিনি অবসরের পর গ্রামের বাড়িতে কৃষিকাজ করতেন। তার অবর্তমানে আমি সে দায়িত্ব পালন করছি। গেল এক বছর ঢাকা-খুলনা-রাজশাহী যাতায়াত করেছি। ব্র্যাকের এ কাজের সঙ্গে গ্রামের বাড়ির কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে।
অভিনয়ের ব্যস্ততা নেই?
অভিনয়ের কথা বলতে গেলে, নিয়মিত সিনেমার প্রস্তাব পাই। গল্প পছন্দ হয় না। তাই বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিতে হয়। তবে একটি সিনেমার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেটি শুটিং পিছিয়েছে। অন্যদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যেমন চিত্রনাট্য আসে তাতে আগ্রহ জাগে না। আমি যেমন চাই তেমন চরিত্রের প্রস্তাব আসছে না।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। শিল্পীদের মাঝেও যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আপনি এ প্রসঙ্গে কী বলবেন?
দীর্ঘদিন ধরে শিল্পচর্চা হচ্ছে না। বরং শিল্প নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে বেশি। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশপ্রেম ছিল। এখন মুখে দেশপ্রেমের বুলি আওড়ালেও অন্তরে অর্থপ্রেম। এমন শিল্পীকে দিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। ক্ষমতার কাছে থাকলে তাদের লাভ। এটা চলতেই থাকবে। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার লোভ থাকার কারণে কাজের মান কমছে। অনেক বছর ধরে এটি হয়ে আসছে। এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে। আমরা অন্যের বিচার করলেও নিজের বিচার করছি না। যেসব শিল্পীর মনে দেশপ্রেম ও সততা আছে তারা চুপচাপ কাজ করছেন।