অবশেষে ভারতের পার্লামেন্টে প্রবেশ করলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্ট লোকসভার এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কেরালার ওয়ানাড় আসনের উপনির্বাচনে জয়ের সুবাদে জীবনে প্রথমবারের মতো আইনপ্রণেতা হলেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রমাতামহ জওহরলাল নেহেরু ছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার দাদি ইন্দিরা গান্ধী ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতা থাকা প্রধানমন্ত্রী, বাবা রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সাংবিধানিক জটিলতার কারণে তার মা সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নি, তবে দীর্ঘদিন কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন। বর্তমানে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য তিনি। প্রিয়াঙ্কার ভাই রাহুল গান্ধী বর্তমানে ভারতের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা।
অর্থাৎ, গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা— সবাই এখন পার্লামেন্টের এমপি। কংগ্রেস, নেহেরু-গান্ধী পরিবার এবং ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার এমন ঘটল।
ওয়ানাড় আসনটি অবশ্য এমনিতেই কংগ্রেসের অন্যতম ঘাঁটি এলাকা হিসেবে পরিচিত। উপনির্বাচনে প্রিয়াঙ্কার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির স্থানীয় নেতা ও প্রার্থী নব্য হরিদাস এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই) প্রার্থী সত্যায়ন মোকেরি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নব্য হরিদাসকে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯৩১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন প্রিয়াঙ্ক।
এদিকে প্রিয়ঙ্কা লোকসভায় আসছেন, এই খবর পেয়ে বুধবার পার্লামেন্ট চত্বরে হাজির হয়েছিলেন সংসদ চত্বরে কংগ্রেসের অন্যান্য এমপিরা। ‘প্রিয়াঙ্কা স্বাগতম’ বলে স্লোগানও দিচ্ছিলেন তারা। গাড়ি থেকে নেমে প্রিয়ঙ্কা জানান, তিনি খুবই খুশি। তার পরেই বড়ভাই রাহুল, মা সোনিয়া এবং স্বামী রবার্ট বাট্রার সঙ্গে পার্লামেন্টের ভেতর প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে ডান হাতে লাল-কালো মলাটের সংবিধান হাতে নিয়ে শপথ নেন। শপথ শেষে বড়ভাই রাহুল গান্ধীর পাশের আসনে বসেন প্রিয়াঙ্কা।
২০০৪ সালের লোকসভা ভোট থেকে নিয়মিত সোনিয়া-রাহুলের প্রচারে অংশ নিলেও প্রিয়াঙ্কা আনুষ্ঠানিক ভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী এবং কেরলের ওয়েনাড়, দুই আসন থেকেই জয়ী হওয়ায় দ্বিতীয় আসনটি ছেড়ে দেন রাহুল। আর বড় ভাইয়ের ছেড়ে দেওয়া আসনে কংগ্রেস প্রার্থী হন প্রিয়ঙ্কা এবং বিশাল জয় পান। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস