দামুড়হুদা উপজেলা জুড়ে শোভা পাচ্ছে চাল কুমড়া।পাশাপাশি চলছে বড়ি তৈরির উৎসবও। দামুড়হুদা উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে চলছে সুমিষ্ট স্বাদের কুমড়া বড়ি তৈরি। তাইতো শীতের সকালে গ্রামীণ নববধূ, বৃদ্ধা থেকে শুরু করে সকল বয়সের নারীরা বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্থ সময় পার করছেন। চাল কুমড়ার পাশাপাশি কুমড়া বড়ি বিক্রি করে গ্রমীণ জনগোষ্ঠীর নারীরা বাড়তি আয় করে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।
জানা গেছে, জনপ্রিয় আর পুষ্টিকর সবজি হিসেবে আমাদের দেশে চাল কুমড়া নামটির বেশ পরিচিত।সবজি সাধারণ বসতঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘরের চালে ফলানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত।ছোট সবুজ কচি চাল কুমড়া তরকারি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।আর এটি যখন চুনের মতো সাদা হয়ে যায় তখন ওই চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি কীা হয়।চাল কুমড়ার বড়ি সকলের কাছ জনপ্রিয় একরি তরকারি হিসেবেও সুপরিচিত।
সরেজমিনে দেখা যায়,দামুড়হুদা উপজেলার প্রায় সকল গ্রামের বসতভিটার,রান্নাঘর সহ বসতভিটার আঙ্গিনায় একপাশে মাচা তৈরি করা।মাচার উপর ঝুলছে সাদা পাকা চুনের মতো চাল কুমড়া শোভা পাচ্ছে।শীত মৌসুমে পাড়া -মহল্লায় নারীরা এই চাল কুমড়া আর মাসকলাই ডাল দিয়ে বড়ি তৈরির ধুম ফেলেন।ইতিমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় চলছে বড়ি তৈরির উৎসব। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরেও কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করবেন বলে জানান গ্রামীণ নারীরা।কুমড়া বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ চাল কুমড়া আর মাসকলাই ডাল।দামুড়হুদা উপজেলা সদরের সানজিদা খাতুন,হেমায়েতপুরের মাবিয়া খাতুন,চদ্রবাসের হাসিনা সহ একাধিক বয়স্ক, নবগৃহবধূ সহ সকল বয়সের নারীরা জানান,শীত যত বেশি পড়বে বড়ি তত সুস্বাদু হবে।বর্তমানে চালকুমড়া আকার ভেদ বিক্রি হচ্ছে ৭০-২০০ টাকা, আর কলাই বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৭০ টাকা দরে।শাহিনুর নামের এক গৃহীনি জানান,গত শনিবার বড়ি দিয়েছি,আরো কিছু দিব।এই বড়ি নিজেদের খাবার পাশাপাশি মেয়েদের বাড়িতেও পাঠাবো। এছাড়াও গ্রামঞ্চলের মানুষ তাদের নিজেদের খাবার পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে এই বড়ি পাঠিয়ে থাকেন।পাশাপাশি চাল কুমড়ার মতোন কুমড়া বড়ি শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা দরে বিক্রি করে বাড়তি আয় করে থাকেন অনেকেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,দামুড়হুদা উপজেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম জানান,চালকুমড়ার বড়ি ছোট বড় সব ধরনের মানুষের কাছ প্রিয়।উপজেলার সদর সহ সকল গ্রামে প্রায় বাড়িতেই কমবেশি এই চাল কুমড়ার দেখা পাওয়া যায়।চাল কুমড়া বর্তমান সময়ে অনেক স্থানে বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে,এতে কৃষকরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার।কৃষি খাতে সরকারের সফলতা অর্জন সর্বজনীন স্বীকৃত।সরকারি ভর্তূকির পাশাপাশি দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি বিভাগ সকল পর্যায়ের কৃষক ভায়েদের ভালো বীজ নির্বাচন ও সঠিক পরিচর্যার জন্য সকল ধরনের পরামর্শসহ সহযোগীতা করছেন।
সকলের পরিচিত চাল কুমড়ার গুনা-গুন সহ পুষ্টি বিষয়ে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা:সোহরাব হোসেন বলেন, চাল কুমড়া কচি অবস্থায় তরকারি হিসেবে পাওয়া যায়,আবার বয়স্ক হলে কলাই দিয়ে তৈরি করা হয় চাল কুমড়ার বড়ি।তিনি আরো বলেন, চাল কুমড়ায় বিভিন্ন ভিটামিনে সমৃদ্ধ।এতে আমিষ,চর্বি,ক্যালসিয়াম ও শর্করা রয়েছেন।চাল কুমড়ার বড়ি ফুসফুসের জন্য বেশ উপকারী ও এর বীজ কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।####