চুয়াডাঙ্গা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে চোরাগোপ্তা হামলার নীলনকশা আওয়ামী লীগের


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। তার পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাস পার হলেও এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানামুখী চক্রান্ত করে যাচ্ছে দলটি। ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত উসকানি দিচ্ছেন হাসিনা।

এ ছাড়া লন্ডন, আমেরিকা, ইউরোপসহ আওয়ামী লীগের প্রবাসী কয়েকজন নেতা তার সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। জুম মিটিংয়ে দায়িত্ব ভাগ করাসহ নাশকতার পরিকল্পনা করছেন হাসিনা ও তার দলবল।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগও তাদের অফিসিয়াল প্যাডে অনুরূপ কর্মসূচি প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে অপতথ্যমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি তারা চোরাগোপ্তা হামলা করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে পুলিশ।

বাহিনীটির সদর দপ্তরের এক গোপন নথিতে এই তথ্য জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পূর্ব-নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ সদর দপ্তর। ওই স্মারকে আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা রোধে ১১টি সুপারিশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অপতৎপরতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ‘যে কোনো অরাজকতা প্রতিহত করা হবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দপ্তরের এক ডিআইজি জানান, গোয়েন্দা টিম মাঠে তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছে। যেসব নেতা দেশে ও প্রবাসে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এতে ১৫ আগস্ট থেকে ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং মন্তব্যে ওই কর্মসূচিতে কেমন সাড়া পাওয়া গেছে সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের যুগপৎ কর্মসূচি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে তথাকথিত দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মামলা প্রত্যাহারসহ আরো কয়েকটি ফেসবুক লাইভের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়, চিরিরবন্দর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক চায়না ধামুর সঙ্গ রাগামাটি সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতা চাকমার আলোচনা হয়। আলোচনাকালে লায়লা ঢাকায় একটি বড় সমাবেশের কথা তাকে জানান। এই সমাবেশে বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে দাবি করা হয়। পাশাপাশি এনজিও পরিচালনার মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ও বিদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছে। সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০ জানুয়ারি কলকাতায়। সেখানে শেখ হাসিনা সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারলেও তার বক্তব্য প্রচার করা হয়। এদিকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন সাবেক এমপি হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া কারাগারে থাকা নেতারা সরকার উৎখাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে পুলিশ সহিংসতা ও উচ্চ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেছে। পুলিশের ধারণা, দলটি বিভিন্ন স্থানে ‘ঝটিকা মিছিল’, চোরাগোপ্তা হামলা বা অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা করতে পারে। এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও এই অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সমর্থক, ছাত্র-জনতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। দলটি সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করতে পারে। রেলপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারি স্থাপনার ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়া চোরাগোপ্তা হামলা বা নাশকতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হতে পারে।

প্রতিবেদনে ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো আওয়ামী লীগ অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে সরকারবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। নেতাকর্মীরা রাতের সময় বিভিন্ন দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দ্রুত স্থান দখল করতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ঝটিকা মিছিলের আয়োজন করতে পারে। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে মিছিলেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থাপনাসহ, দেশের বিভিন্ন স্থানে গুপ্ত হামলার হতে পারে, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপের ব্যবহার হতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার করতে পারে আওয়ামী লীগ।

তবে আওয়ামী লীগের গোপন ও সন্ত্রাসী তৎপরতা রুখে দিতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। এর মধ্যে রয়েছেÑ ফেব্রুয়ারিজুড়ে আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, যৌথ বাহিনী টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো; বাণিজ্য পণ্য পরিবহন ও স্থাপনায় অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন; লিফলেট ও প্রচারপত্র তৈরির ছাপাখানা ও কম্পিউটারের দোকানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো; সব মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে যে কোনো ধরনের সহিংস জমায়েত এড়াতে আগাম তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিরোধমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া; ৫ আগস্টের আগে ও পরে নেতাকর্মীদের গঠিত সামাজিক, রাজনৈতিক ও এনজিওভিত্তিক সংগঠনগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও নজরদারি বাড়ানো; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল, ছাত্র নেতৃত্বসহ সব পক্ষের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাউন্টার কনটেন্ট প্রচার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া; কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপকে টাকার বিনিময়ে যাতে নাশকতায় ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো এবং কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং কারাগারের নিয়ম ভঙ্গের বিষয়ে অনুসন্ধান করা।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ

 





Source link

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

দেশে চোরাগোপ্তা হামলার নীলনকশা আওয়ামী লীগের

আপডেটঃ ০২:৫৫:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। তার পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাস পার হলেও এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানামুখী চক্রান্ত করে যাচ্ছে দলটি। ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত উসকানি দিচ্ছেন হাসিনা।

এ ছাড়া লন্ডন, আমেরিকা, ইউরোপসহ আওয়ামী লীগের প্রবাসী কয়েকজন নেতা তার সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। জুম মিটিংয়ে দায়িত্ব ভাগ করাসহ নাশকতার পরিকল্পনা করছেন হাসিনা ও তার দলবল।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগও তাদের অফিসিয়াল প্যাডে অনুরূপ কর্মসূচি প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে অপতথ্যমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি তারা চোরাগোপ্তা হামলা করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে পুলিশ।

বাহিনীটির সদর দপ্তরের এক গোপন নথিতে এই তথ্য জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পূর্ব-নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ সদর দপ্তর। ওই স্মারকে আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা রোধে ১১টি সুপারিশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অপতৎপরতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ‘যে কোনো অরাজকতা প্রতিহত করা হবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদর দপ্তরের এক ডিআইজি জানান, গোয়েন্দা টিম মাঠে তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছে। যেসব নেতা দেশে ও প্রবাসে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এতে ১৫ আগস্ট থেকে ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং মন্তব্যে ওই কর্মসূচিতে কেমন সাড়া পাওয়া গেছে সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের যুগপৎ কর্মসূচি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে তথাকথিত দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মামলা প্রত্যাহারসহ আরো কয়েকটি ফেসবুক লাইভের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়, চিরিরবন্দর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক চায়না ধামুর সঙ্গ রাগামাটি সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিতা চাকমার আলোচনা হয়। আলোচনাকালে লায়লা ঢাকায় একটি বড় সমাবেশের কথা তাকে জানান। এই সমাবেশে বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে দাবি করা হয়। পাশাপাশি এনজিও পরিচালনার মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ও বিদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছে। সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০ জানুয়ারি কলকাতায়। সেখানে শেখ হাসিনা সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারলেও তার বক্তব্য প্রচার করা হয়। এদিকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন সাবেক এমপি হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া কারাগারে থাকা নেতারা সরকার উৎখাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে পুলিশ সহিংসতা ও উচ্চ ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেছে। পুলিশের ধারণা, দলটি বিভিন্ন স্থানে ‘ঝটিকা মিছিল’, চোরাগোপ্তা হামলা বা অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা করতে পারে। এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও এই অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সমর্থক, ছাত্র-জনতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। দলটি সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করতে পারে। রেলপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারি স্থাপনার ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়া চোরাগোপ্তা হামলা বা নাশকতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হতে পারে।

প্রতিবেদনে ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো আওয়ামী লীগ অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে সরকারবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। নেতাকর্মীরা রাতের সময় বিভিন্ন দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দ্রুত স্থান দখল করতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ঝটিকা মিছিলের আয়োজন করতে পারে। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে মিছিলেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থাপনাসহ, দেশের বিভিন্ন স্থানে গুপ্ত হামলার হতে পারে, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপের ব্যবহার হতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার করতে পারে আওয়ামী লীগ।

তবে আওয়ামী লীগের গোপন ও সন্ত্রাসী তৎপরতা রুখে দিতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। এর মধ্যে রয়েছেÑ ফেব্রুয়ারিজুড়ে আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, যৌথ বাহিনী টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো; বাণিজ্য পণ্য পরিবহন ও স্থাপনায় অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন; লিফলেট ও প্রচারপত্র তৈরির ছাপাখানা ও কম্পিউটারের দোকানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো; সব মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে যে কোনো ধরনের সহিংস জমায়েত এড়াতে আগাম তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিরোধমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া; ৫ আগস্টের আগে ও পরে নেতাকর্মীদের গঠিত সামাজিক, রাজনৈতিক ও এনজিওভিত্তিক সংগঠনগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও নজরদারি বাড়ানো; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল, ছাত্র নেতৃত্বসহ সব পক্ষের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাউন্টার কনটেন্ট প্রচার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া; কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপকে টাকার বিনিময়ে যাতে নাশকতায় ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো এবং কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং কারাগারের নিয়ম ভঙ্গের বিষয়ে অনুসন্ধান করা।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ

 





Source link