চুয়াডাঙ্গা ০২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে আমরা কি আমলকি চুষব : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাকি গোস্যা হয়েছে, কষ্ট পেয়েছেন। তারা বলছেন, বাংলা, বিহার ও ওডিশাসব দখল করতে এলে আমরা কি ললিপপ খাব? আমি বলে রাখি আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে তাহলে কি আমরা আমলকি চুষব?

 

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে, মুসলিম বিদ্বেষ রাজনীতি করে। এটা সবাই জানে। যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ বিজেপির মতো কথা বলে তখন বোঝা যায়, রসুনের গোড়া এক জায়গায়। ভারতের রাজনীতিবিদের গোড়াও এক জায়গায়। ভারতের এক নেতা বলছেন, এবার চট্টগ্রাম আমরা দাবি করব। আরে আপনাদের তো উদ্দেশ্য খারাপ। একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের একটি অংশ আপনারা দাবি করবেন। আপনারা প্রথমে এ কথা বলেছেন, এগুলো আপনাদের দায়িত্বশীল একজন নেতার কথা। আমি বলেছিলাম, আপানারা যদি দাবি করেন, তাহলে আমাদের নবাবের যে অংশ বাংলাবিহার, উড়িষা সেটাও আমরা দাবি করব।

 

রিজভী বলেন, আমাদেরকে বিজেপি মনে করে তাদের অধীনস্থ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। আমরা ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি, আমরা আমাদের স্বাধীনতা কিনেছি এতো মানুষের আর্তনাদ, এতো নারীর সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের কথা শুনে মনে হয়- বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের সার্বভৌম কিছুই তাদের কাছে বিবেচ্য নয়। আমি ভারতের জনগণকে বলছি না, আমি বলছি সম্প্রদায়িক শাসকগণকে।

 

 

‘আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমরা জানতাম আপনি ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ, অসম্প্রদায়িক মানুষ। আপনাদের গভীরে যে কট্টর হিন্দুত্ববাদ রয়েছে সেটা আমরা দেখলাম। আপনি বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো দরকার। কি কারণে আপনি পাঠাবেন? আপনি অন্যদেশকে এই কথা বলতে পারেন না। আপনি আন্তর্জাতিক আইনকানুন জানেন না। আপনার এই কথায় ভারতের কেউ কেউ প্রতিবাদ করেছে। আপনারা সবসময় মনে করেন- বাংলাদেশ আপনাদের তাবেদার। এই কারণে আপনারা শেখ হাসিনাকে অত্যন্ত প্রিয়পাত্র মনে করেন। শেখ হাসিনা যেহেতু পালিয়ে গেছে। সেই কষ্ট নিয়ে আপনাদের শাসকগোষ্ঠীর প্রত্যেকেই মন খারাপ হয়ে বসে আছেন। তারা এখন অপপ্রচার-অপতথ্যগুলো মিডিয়ার মাধমে প্রচার করছে। তাতে কোনো লাভ হবে না।’

 

চিকিৎসা প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো চিচিকৎসক আছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। একসময় ভারতের মুর্শিদাদ থেকে বাংলাদেশের রাজশাহীতে চিকিৎসা করাতে আসত অনেক মানুষ। ৬০ এর দশকে ডা. কায়সার রহমান চৌধুরীর মতো চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমাদের শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমাদের অনেক চিকিৎসক দেশ ও বিদেশে লেখাপড়া করেছে। শুধু মাত্র একটু কেয়ারফুলি যত্ন দিলে একটা লোকও ভারতে যাবে না। আমাদের চক্ষু বিষেশজ্ঞ, অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি, নিউরোলজির ভালো ভালো চিকিৎসক আছেন। আপানারা তো ভিসা বন্ধ করে রেখেছেন। আমাদের দেশের মানুষ তো দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা- সাবর্ভৌমত্বের প্রশ্নে এদেশের মানুষ কেউ ছাড় দেবে না। যার সঙ্গে যার মনমালিন্য থাক, ঝগড়া থাক, কিন্তু অন্যদেশ আমাদের দেশের ওপরে খবরদারি করবে তা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

 

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না। তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে। বাংলাদেশের ২৭ লাখ টন পেঁয়াজ চাহিদা। উৎপাদন করি ৩৭ লাখ টন। নানা কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় এবং ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি ঠিক করা যায়, তাহলে কেউ পেঁয়াজ নেবে না। ওরা মনে করেছে, আমরা ওদের ওপর নির্ভরশীল। ওদের ছাড়া আমাদের চলবে না। এখন দেখছে কলকাতা নিউমার্কেট বন্ধ, দোকানগুলো চলে না। আমরা আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। এটা আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই।

 

 

তিনি বলেন, আমাদের টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমারখালির লুুঙ্গি-গামছা সারা পৃথিবীতে এক্সপোর্ট হয়। আমাদের জামদানি শাড়ি, তাঁতের শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক পৃথিবী বিখ্যাত। এখনও বিয়েশাদি হলে রাজশাহী সিল্ক পরিধান করে অনেকে। তাহলে কেন এ দেশের মহিলারা ভারতীয় শাড়ি কিনবে? কিনতে আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যখন আমাদের উপহাস করে, তখন আমরা কেন কিনব? কেন আমরা মুখাপেক্ষী থাকব? অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা। উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগরের সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, ওয়ালিউর রহমান রানা প্রমুখ।

সুত্র লিংক

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে আমরা কি আমলকি চুষব : রিজভী

আপডেটঃ ০৬:৩১:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাকি গোস্যা হয়েছে, কষ্ট পেয়েছেন। তারা বলছেন, বাংলা, বিহার ও ওডিশাসব দখল করতে এলে আমরা কি ললিপপ খাব? আমি বলে রাখি আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে তাহলে কি আমরা আমলকি চুষব?

 

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে, মুসলিম বিদ্বেষ রাজনীতি করে। এটা সবাই জানে। যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ বিজেপির মতো কথা বলে তখন বোঝা যায়, রসুনের গোড়া এক জায়গায়। ভারতের রাজনীতিবিদের গোড়াও এক জায়গায়। ভারতের এক নেতা বলছেন, এবার চট্টগ্রাম আমরা দাবি করব। আরে আপনাদের তো উদ্দেশ্য খারাপ। একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের একটি অংশ আপনারা দাবি করবেন। আপনারা প্রথমে এ কথা বলেছেন, এগুলো আপনাদের দায়িত্বশীল একজন নেতার কথা। আমি বলেছিলাম, আপানারা যদি দাবি করেন, তাহলে আমাদের নবাবের যে অংশ বাংলাবিহার, উড়িষা সেটাও আমরা দাবি করব।

 

রিজভী বলেন, আমাদেরকে বিজেপি মনে করে তাদের অধীনস্থ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। আমরা ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি, আমরা আমাদের স্বাধীনতা কিনেছি এতো মানুষের আর্তনাদ, এতো নারীর সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের কথা শুনে মনে হয়- বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের সার্বভৌম কিছুই তাদের কাছে বিবেচ্য নয়। আমি ভারতের জনগণকে বলছি না, আমি বলছি সম্প্রদায়িক শাসকগণকে।

 

 

‘আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমরা জানতাম আপনি ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ, অসম্প্রদায়িক মানুষ। আপনাদের গভীরে যে কট্টর হিন্দুত্ববাদ রয়েছে সেটা আমরা দেখলাম। আপনি বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো দরকার। কি কারণে আপনি পাঠাবেন? আপনি অন্যদেশকে এই কথা বলতে পারেন না। আপনি আন্তর্জাতিক আইনকানুন জানেন না। আপনার এই কথায় ভারতের কেউ কেউ প্রতিবাদ করেছে। আপনারা সবসময় মনে করেন- বাংলাদেশ আপনাদের তাবেদার। এই কারণে আপনারা শেখ হাসিনাকে অত্যন্ত প্রিয়পাত্র মনে করেন। শেখ হাসিনা যেহেতু পালিয়ে গেছে। সেই কষ্ট নিয়ে আপনাদের শাসকগোষ্ঠীর প্রত্যেকেই মন খারাপ হয়ে বসে আছেন। তারা এখন অপপ্রচার-অপতথ্যগুলো মিডিয়ার মাধমে প্রচার করছে। তাতে কোনো লাভ হবে না।’

 

চিকিৎসা প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো চিচিকৎসক আছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। একসময় ভারতের মুর্শিদাদ থেকে বাংলাদেশের রাজশাহীতে চিকিৎসা করাতে আসত অনেক মানুষ। ৬০ এর দশকে ডা. কায়সার রহমান চৌধুরীর মতো চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমাদের শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমাদের অনেক চিকিৎসক দেশ ও বিদেশে লেখাপড়া করেছে। শুধু মাত্র একটু কেয়ারফুলি যত্ন দিলে একটা লোকও ভারতে যাবে না। আমাদের চক্ষু বিষেশজ্ঞ, অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি, নিউরোলজির ভালো ভালো চিকিৎসক আছেন। আপানারা তো ভিসা বন্ধ করে রেখেছেন। আমাদের দেশের মানুষ তো দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা- সাবর্ভৌমত্বের প্রশ্নে এদেশের মানুষ কেউ ছাড় দেবে না। যার সঙ্গে যার মনমালিন্য থাক, ঝগড়া থাক, কিন্তু অন্যদেশ আমাদের দেশের ওপরে খবরদারি করবে তা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

 

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে না। তাদের বন্ধুত্ব শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে। বাংলাদেশের ২৭ লাখ টন পেঁয়াজ চাহিদা। উৎপাদন করি ৩৭ লাখ টন। নানা কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় এবং ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনা যদি ঠিক করা যায়, তাহলে কেউ পেঁয়াজ নেবে না। ওরা মনে করেছে, আমরা ওদের ওপর নির্ভরশীল। ওদের ছাড়া আমাদের চলবে না। এখন দেখছে কলকাতা নিউমার্কেট বন্ধ, দোকানগুলো চলে না। আমরা আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। এটা আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই।

 

 

তিনি বলেন, আমাদের টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমারখালির লুুঙ্গি-গামছা সারা পৃথিবীতে এক্সপোর্ট হয়। আমাদের জামদানি শাড়ি, তাঁতের শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক পৃথিবী বিখ্যাত। এখনও বিয়েশাদি হলে রাজশাহী সিল্ক পরিধান করে অনেকে। তাহলে কেন এ দেশের মহিলারা ভারতীয় শাড়ি কিনবে? কিনতে আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যখন আমাদের উপহাস করে, তখন আমরা কেন কিনব? কেন আমরা মুখাপেক্ষী থাকব? অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা। উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগরের সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, ওয়ালিউর রহমান রানা প্রমুখ।

সুত্র লিংক