চুয়াডাঙ্গা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিক্ষুক আয়েশার পায়ে ৩ মাস ধরে গুলি, দেখার কেউ নেই


সত্তরোর্ধ্ব আয়েশা বেগমের (৭৬) স্বামী মারা গেছেন ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে। সন্তান নেই। জীবিকা নির্বাহ করেন ভিক্ষাবৃত্তি করে। গত ৪ আগস্ট পেটের তাগিদে রাস্তায় বের হয়েছিলেন। তবে ছাত্র আন্দোলনের মাঝখানে পড়ে যান তিনি। পায়ে গুলি লাগে।

এ ঘটনার তিনমাস পার হলেও এখনো গুলি রয়ে গেছে আয়েশা বেগমের বাম পায়ে। বেঁচে থাকার তাগিদে জীবন চালানোর জন্য গুলিবিদ্ধ পা নিয়েই ভিক্ষার জন্য রাস্তায় বের হতে হচ্ছে তাকে। তার দেখার কেউ নেই। বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা।

মুন্সিগঞ্জের মানিকপুরের সাব্বির আহমেদ নামের একজনের বাড়িতে আশ্রয়ে আছেন আয়েশা বেগম। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, দোচালা একটি ঘরে আয়েশার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। সেখানে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও শরীরে বহন করছেন জুলাই আন্দোলনের নির্মমতা। পায়ের ঘা অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে তাকে।

কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি পায়ের ব্যথা বাড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক্সরে করান আয়েশা বেগম। এক্সরে রিপোর্টে ধরা পড়ে বাম পায়ের ভেতর এখনো রয়ে গেছে গুলি।

ভিক্ষুক আয়েশার পায়ে ৩ মাস ধরে গুলি, দেখার কেউ নেই

পায়ে গুলি রয়ে যাওয়ায় এখনো যন্ত্রণায় কাতরান আয়েশা বেগম। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আয়েশা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি চাইয়া খাই বাবা। মানুষ কাছে ভিক্ষার জন্য গেছিলাম। রাস্তায় ওরা গুলি করছে। আমার পায়ে লাগছে। কয়েকজন আমারে হাসপাতালে নিয়া গেছিল। পরে বাইত (বাড়ি) আইয়া পড়ি। কয়দিন ধইরা পা ব্যথা করতাছে, জ্বর আহে।’

আয়েশা বেগমকে আশ্রয় দেওয়া সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বহু আগে ক্যানসারে মারা গেছেন আয়েশার স্বামী লতিফ সরদার। সন্তান নেই। তার বাড়ি চাঁদপুর হলেও বহুবছর ধরেই মুন্সিগঞ্জে থাকেন। ভিক্ষা করে জীবন চলে। সরকারের উচিত ওনার যথাযথ চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আওয়াতিফ ইবনে মাতিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক্সরে রির্পোট বলছে পিস্তলের গুলি এটি, দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে গুলিটি বের করতে হলে সি আর্ম নামে একটি মেশিন প্রয়োজন। জেলার হাসপাতালে এটি নেই। ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো গেলে চিকিৎসা ভালো হবে।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। তার নাম জুলাই-আগস্টে আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত সব সুবিধাই তিনি পাবেন।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

ভিক্ষুক আয়েশার পায়ে ৩ মাস ধরে গুলি, দেখার কেউ নেই

আপডেটঃ ০৪:৫১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪


সত্তরোর্ধ্ব আয়েশা বেগমের (৭৬) স্বামী মারা গেছেন ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে। সন্তান নেই। জীবিকা নির্বাহ করেন ভিক্ষাবৃত্তি করে। গত ৪ আগস্ট পেটের তাগিদে রাস্তায় বের হয়েছিলেন। তবে ছাত্র আন্দোলনের মাঝখানে পড়ে যান তিনি। পায়ে গুলি লাগে।

এ ঘটনার তিনমাস পার হলেও এখনো গুলি রয়ে গেছে আয়েশা বেগমের বাম পায়ে। বেঁচে থাকার তাগিদে জীবন চালানোর জন্য গুলিবিদ্ধ পা নিয়েই ভিক্ষার জন্য রাস্তায় বের হতে হচ্ছে তাকে। তার দেখার কেউ নেই। বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা।

মুন্সিগঞ্জের মানিকপুরের সাব্বির আহমেদ নামের একজনের বাড়িতে আশ্রয়ে আছেন আয়েশা বেগম। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, দোচালা একটি ঘরে আয়েশার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। সেখানে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও শরীরে বহন করছেন জুলাই আন্দোলনের নির্মমতা। পায়ের ঘা অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে তাকে।

কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি পায়ের ব্যথা বাড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক্সরে করান আয়েশা বেগম। এক্সরে রিপোর্টে ধরা পড়ে বাম পায়ের ভেতর এখনো রয়ে গেছে গুলি।

ভিক্ষুক আয়েশার পায়ে ৩ মাস ধরে গুলি, দেখার কেউ নেই

পায়ে গুলি রয়ে যাওয়ায় এখনো যন্ত্রণায় কাতরান আয়েশা বেগম। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আয়েশা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি চাইয়া খাই বাবা। মানুষ কাছে ভিক্ষার জন্য গেছিলাম। রাস্তায় ওরা গুলি করছে। আমার পায়ে লাগছে। কয়েকজন আমারে হাসপাতালে নিয়া গেছিল। পরে বাইত (বাড়ি) আইয়া পড়ি। কয়দিন ধইরা পা ব্যথা করতাছে, জ্বর আহে।’

আয়েশা বেগমকে আশ্রয় দেওয়া সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বহু আগে ক্যানসারে মারা গেছেন আয়েশার স্বামী লতিফ সরদার। সন্তান নেই। তার বাড়ি চাঁদপুর হলেও বহুবছর ধরেই মুন্সিগঞ্জে থাকেন। ভিক্ষা করে জীবন চলে। সরকারের উচিত ওনার যথাযথ চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আওয়াতিফ ইবনে মাতিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক্সরে রির্পোট বলছে পিস্তলের গুলি এটি, দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে গুলিটি বের করতে হলে সি আর্ম নামে একটি মেশিন প্রয়োজন। জেলার হাসপাতালে এটি নেই। ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো গেলে চিকিৎসা ভালো হবে।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। তার নাম জুলাই-আগস্টে আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত সব সুবিধাই তিনি পাবেন।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link