বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত এমন দেশ চায়, যেখানে দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজি থাকবে না। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রংপুরের মিঠাপুকুর কলেজ মাঠে আয়োজিত পথসভায় এ বক্তব্য দেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ২৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে, যা বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেটের ৫ গুণ। আমরা এমন এক দেশ চাই, যে দেশে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, দুর্নীতি-টেন্ডারবাজি থাকবে না। এই সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ প্রত্যেককে সম্মান করবে। যে দেশে আমার মায়েরা ইজ্জতের নিরাপত্তার সহিত কর্মক্ষেত্রে কাজ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জোর করে নারীকে বোরকা পরাব না। এ সমাজে অনেক অমুসলিমও আছে। মুসলমানদের মধ্যে যারা পর্দা করবে না, তাদেরকে আমরা বোঝাবো। আমরা মেজরিটি-মাইনরিটির পার্থক্য মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে চাই। আগামীর বাংলাদেশ আমরা তরুণদের হাতে তুলে দিতে চাই।’
আওয়ামী দুঃশাসনের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াত আমির বলেন, ‘তারা দেশের মালিক বনেছিল। আমাদের সবাইকে ভাড়াটিয়া মনে করেছিল। এ জন্য হেফাজতে ইসলামের ওপর নারকীয় হত্যাকান্ড ও ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যার পর জামায়াতের ওপর হাত দিয়েছিল। তাদের খুন, গুম, ধর্ষণ সীমা ছাড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সহ্য করতে পারে না বলেই আয়নাঘর বানিয়ে গুম-খুন শুরু করেছিল। তারা কোনো মানুষকে সম্মান দিতে শেখেনি। খালেদা জিয়ার মতো একজন প্রবীণ মানুষকেও তারা জেলে রেখেছিল।’
শহীদ আবু সাঈদের কথা স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাকে গুলি করা হয়েছে। তার প্রত্যেক ফোটা রক্ত কথা বলছে। তখন যুবকরা রাস্তায় নেমেছে, “বলেছে বুকের ভিতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর”। তার পথ ধরে রাস্তায় নেমেছিল লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী। ১০ মাসের শিশু নিয়ে মাও এসেছিল রাস্তায়।’ বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কথা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাঈদী সাহেবকে উদ্দেশ্য করেও এই কালা মানিক হুঙ্কার দিয়েছিল। শেষমেশ নিজে ভারত পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন। আমাদের কোনো দিদিবাড়ি নাই, মামাবাড়ি নাই। পালানোর প্রয়োজন নাই।’
জামায়াতে আমির বলেন, ‘বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগ ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছে। বিচারের আসনে বসে তারা রাজনীতি চর্চা করেছে।’ ১৭ বছর পর রংপুরের মিঠাপুকুর কলেজ মাঠে বড় পরিসরে আয়োজিত পথসভায় আগামী নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংষ্কার নিয়ে আলোচনা করেন ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় দেশের সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু খেলা বন্ধ করার আহবান জানিয়ে দেশের সব মানুষকে সমান অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ad_2]