চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি সিমেন্ট তৈরীর কাঁচামাল (ফ্রাই এ্যাস) ও খৈল (ডিওসি) ছাড়া সব ধরনের মালামাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর কাজ না থাকায় প্রায় বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দর শ্রমিকরা কমেছে রাজস্ব আয়।
ভারত থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলপথ দিয়ে মালবাহী ওয়াগনে করে পণ্য আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। দ্রুত সময়ে পণ্য আমদানি ও খালাসের পর সেগুলো নির্দিষ্ট স্থানে চাহিদামতো সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ও পোল্ট্রি ফিড তৈরির খৈল ছাড়া অন্য কোন পণ্য আমদানি হচ্ছে না। তাও আবার আমদানির পরিমাণ খুবই কম। মাসে ৪ থেকে ৫ টির বেশি হচ্ছে না।
এছাড়া দর্শনা রেলবন্দরে ভারতীয় কোনো মালবাহী ট্রেন প্রবেশ না করায় বন্দরের শ্রমিক, সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী ও সারাদেশ থেকে আসা ট্রাকচালক-হেলপাররা অলস সময় পার করছেন।
তবে নানা কারণে আমদানি কমেছে এ বন্দরে। তবে ব্যবসায়ীদের মতে, ব্যাংক চাহিদামতো এলসি অনুমোদন না করায় পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। অল্প কিছু পণ্য আমদানি হলেও রেল ইয়ার্ডে নেই আগের মতো সেই কর্মব্যস্ততা।
এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে স্থানীয় অনেক শ্রমিক ও ট্রাকচালক।
শ্রমিক ও ট্রাকচালকরা জানান, কাজ না থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে সংসার খরচে। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।
বন্দরের এক শ্রমিক বলেন, আগের সেই ব্যস্ততা নেই বন্ধুর এলাকায়। শুয়ে-বসে দিন কাটাই। সবকিছু দ্রুত স্বাভাবিক হোক এটাই চাই আমরা। আমাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে এখন।
এ বিষয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলেন, দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দুই হাজার ৭৯৮টি ওয়াগনে ১২ লাখ ৩২ হাজার ৬১৬ মেট্রিক টন খাদ্যদ্রব্য সহ অন্যান্য পণ্য আমদানি হয়েছে। এতে রাজস্ব আদায় হয় ৫৯ কোটি টাকা। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ হাজার ৭শ ৪৯ ওয়াগনে আমদানি হয় পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৫৫৯ মেট্রিক টন পণ্য। যা থেকে রাজস্ব আয় হয় মাত্র ২৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এক হাজার পাঁচশ ৫৪ ওয়াগনে ৯১ হাজার ৯৭৭ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। এতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪কোটি ১২ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার আশিকুর রহমান আশিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের মাস্টার মির্জা কামরুল হক মুঠোফোনে জানান, আপাতত কোন খাদ্যদ্রব্য আমদানি হচ্ছে না। যে দুটি পণ্য আমদানি হচ্ছে তা হলো সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, ও পোল্ট্রি ফিড তৈরির কাঁচামাল খৈল। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য আমদানি কমেছে। এতে রাজস্ব আদায়ও কমেছে।