সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সৈয়দা মোনালিসাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকার ইস্কাটন রোডের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিজ হেফাজতে রেখেছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। মেহেরপুর সদর থানার ওসি শেখ মেজবাহ উদ্দীন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোনালিসার নামে মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় গত ডিসেম্বরের শুরুতে বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেফতার হন ফরহাদ হোসেনের বড় বোন শামীম আরা হীরা (৫০) ও তার স্বামী আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসকে (৫৫)।
তার আগে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানী ইস্কাটন এলাকা থেকেই সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রী কানাডায় পালিয়ে গেছেন বলেই চাউর ছিল। তবে তাকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ।
আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা মিলে মেহেরপুর জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তাঁরা মানুষকে নানাভাবে শোষণ করেছেন।
মন্ত্রী যতটা না ক্ষমতাধর ছিলেন সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম ছিলেন তার চাইতে বেশি ক্ষমতাধর।
স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা রাশিয়ায় পাচার করেছেন মোনালিসা। অনলাইন জুয়াড়িদের নিরাপত্তা দিতেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মেহেরপুরসহ সারা দেশের টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি ও অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী।
তার দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছেন তারই ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল। সম্প্রতি তিনি এক অডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভাইয়ের দুর্নীতির কারণেই আজ আমরা সবাই ঘরছাড়া, পালিয়ে বেড়াচ্ছি এবং মামলার আসামি হয়েছি। ফরহাদ হোসেন নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য প্রভৃতি দুর্নীতির মাধ্যমে ন্যূনতম দুই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কানাডার বেগমপাড়ায় তার বাড়ি আছে। ঢাকায় একাধিক বাড়ি আছে।
সবকিছুর নিয়ন্ত্রক ছিলেন মন্ত্রী ও তার স্ত্রী। টাকা ছাড়া টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি কিছুই হতো না।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর স্ত্রী মোনালিসা ক্যাসিনো সম্রাজ্ঞী হয়ে পুলিশের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন। ক্ষমতা হারানোর পর ৫০ কোটি টাকা দিয়েছেন মামলা থেকে রক্ষা পেতে। তাই তার নামে কোনো মামলা হয়নি। স্ত্রীর কারণেই আমার ভাই নষ্ট হয়েছে।