১
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে জমে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি। রেমিট্যান্স, কৃষি, ব্যবসা ও চাকরি নির্ভর এ অর্থনীতিতে ঈদের সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
মার্চ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স স্বজনদের হাতে পৌঁছে গেছে। আত্মীয়–স্বজনদের খরচের জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ ঈদ কেনাকাটার মাধ্যমে বাজারে ঘুরছে। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করেছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়েছে। মফস্বল থেকে থানা সদর পর্যন্ত সর্বত্র ইফতার ও সেহরির বাজার, ঈদের জামা থেকে শুরু করে জুতো পর্যন্ত নানা পণ্যের জমজমাট ব্যবসা চলছে। ঈদকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে অনেকটা থমকে থাকা গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাঙাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। থানা সদর এবং গ্রামের বাজারগুলোতে লোকজনের উপস্থিতি এবং দোকানে দোকানে বেচাবিক্রি বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাজারগুলো সরগরম থাকছে। কেউ কেউ ইফতারের আগে ঈদ শপিং সেরে ঘরে ফিরলেও কেউ কেউ তারাবির নামাজ পড়ে বের হন। ফিরেন সেহরির সময়। এতে করে সকাল থেকে সেহরি পর্যন্ত ২০ ঘণ্টার বেশি সময় দোকানপাট খোলা থাকছে, চলছে ব্যবসা। প্রচুর ক্রেতা বাজারে যাওয়া–আসায় ব্যবহার করছেন নানা পরিবহন; যা পরিবহন খাতে গতি এনেছে। ইফতার সামগ্রী, ঈদ সামগ্রী, কাপড় চোপড়সহ উপহার সামগ্রী বিক্রি এবং মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে পরিবহন। বেড়েছে জ্বালানির ব্যবহার। সবকিছু মিলে বাজারে টাকার যোগান বেড়েছে। প্রচুর টাকা হাতবদল হচ্ছে। এটা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি এনেছে।
যারা চাকরি করছেন তারা ঈদ বোনাস পেয়েছেন। কৃষিতে শাকসবজির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূলের ফলন ফলেছে। যা বিক্রি করে কৃষকের হাতে টাকা এসেছে। যে টাকা হাত ঘুরে রোজা এবং ঈদের বাজারে খরচ হচ্ছে। নানা খাতের ব্যাবসাও এবার জমে উঠেছে।
গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক হচ্ছে রেমিট্যান্স। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে এক কোটি নাগরিক বসবাস করেন। ঈদকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স পাঠানোর হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান ইসলামী ব্যাংক সোনাগাজী (ফেনী) শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ এমদাদুল হক। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, প্রবাসীরা প্রচুর টাকা পাঠাচ্ছেন। এখান পরিবার পরিজন তা তুলে কেনাকাটা করছেন। যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙা করছে। গত বছর ঈদ–রোজায় দেশে ২৬ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার এর পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি। এমদাদুল হক বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে অন্তত ৩০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে একাধিক ব্যাংকার জানিয়েছেন, এর একটি বড় অংশ খরচ হচ্ছে গ্রামে।