২৬
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দঘন সময় কাটাতে ব্যস্ত থাকলেও দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। বরং ছুটির দিনগুলোয় দায়িত্ব আরও বেড়ে যায় এসব পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের। উৎসবের প্রতিটা মুর্হূত যেন রঙিন হয়ে উঠে: তাতে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে। সেজন্য নিরাপত্তা প্রদানে সদাপ্রস্তুত থাকেন আইনশৃঙ্খলারকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া সাংবাদিক, চিকিৎসক, চালক ও রান্না করা খাদ্য সরবরাহকারীরাও রয়েছেন এই তালিকায়।
উৎসবের দিনও দায়িত্বপালন করেন পুলিশ, সেনা, আনসার ও বেসরকারি কোম্পানির গার্ডরা। হাতিরঝিল মোড়ে কথা হয় আনসার সদস্য আসাদুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে জানান, ঈদে ছুটি হয় না আমাদের। তবে ভাগ করে দায়িত্ব পালন করি আমরা। এখন ঢাকায় ঈদ করছি। পরে সময়-সুযোগ পেলে ছুটি নেব।
ফাঁকা ঢাকার হাতিরঝিলে ট্রাফিকের দায়িত্বপালন করছেন একজন আনসার বাহিনীর সদস্য, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
আপনি কি একা দায়িত্ব পালন করছেন, অন্য কোনো ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাকে দেখছি না যে, এই প্রশ্নের উত্তরে খানিক হেসে তিনি জানান, না, না। আছে। উনারা মুগদা আর মধুবাগ গেছে। ওখান থেকে দায়িত্ব পালন শেষে আবার এখানে আসবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আছি।
ঈদের আগের রাতে (চাঁদ রাত) ফাঁকা রাস্তায় একজন ট্রাফিক পুলিশ. ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
রাজধানীর সবখানে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে। উৎসবের ক্ষণে মিলেমিশে সহকর্মীদের সঙ্গে দায়িত্বপালন করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। লোকজন কম থাকায় ঢাকার ব্যস্তসড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ। তাই কিছুটা স্বস্তিতে আছেন ট্রাফিকের কর্মকর্তারা। অনেকটা ঢিলেঢালাভাবেই কাজ করছেন তারা।
ব্যাংকের বুথের পাহারা দিচ্ছেন একজন নিরাপত্তাকর্মী, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
পান্থপথ সিগন্যালে কথা হয় পুলিশ কর্মকর্তা আবু রাসেলের সঙ্গে। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, বাড়ি যাব না। ঢাকায় আছি। এখানেই ঈদ উদযাপন করব। অবশ্য এটা নতুন নয়, এর আগেও একইভাবে ঈদ পালন করেছি। পরে ছুটি নিয়েছি।
যাত্রী নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা বেশ কয়েকটি কার, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
পুলিশ ও আনসার ছাড়াও রাজধানীর রাস্তায় দেখা গেছে সেনাসদস্যদের। কারওয়ান বাজার সংলগ্ন মেট্রো রেলের সামনে পজিসন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের। মূলত মানুষ যেন নির্বিঘ্নে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, সেজন্য এমন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
বন্ধের সময়ও খোলা আছে খাবারের প্রতিষ্ঠান আজোয়া, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও কর্মতৎপর দেখা গেছে সাংবাদিকদের। কথা হয় এটিএন নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি আবুল কামাল আজাদের সঙ্গে। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে জানান, ঈদে ছুটি থাকলেও অফিসে আছি। আসলে বার্তা কক্ষে ছুটি বলতে তো কিছু নেই। তাই রোস্টার করে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছি।
জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল হ্যালো বাংলাদেশের বার্তা কক্ষ, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
এদিকে ঈদের দিনও খোলা থাকবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ। পাশাপাশি অনলাইনে অর্ডার করা যাবে রান্না করা খাবার বিক্রয়কারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোয়। একইসঙ্গে উৎসবের সময় বিভিন্ন জায়গায় যেতে ব্যবহৃত গাড়ি বা পরিবহনের চালকরা ছুটি পান না এই সময়। বরং তাদের চাহিদা আরও বাড়ে। তাই ঈদের দিনও কর্মব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।