৬
রাজনৈতিক সম্পর্কে বৈরিতার মধ্যেও ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে ১২৫ কোটি ১৭ লাখ (১.২৫ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ কোটি ২৯ লাখ ডলার বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে ভারতে ১০৮ কোটি ৮৮ লাখ (১.০৮ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ভারতে রপ্তানি বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪ শতাংশ। এই আয়ের মধ্যে ৪৭ কোটি ৮২ লাখ ডলার এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানি থেকে এসেছে ১২ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে এসেছে ৭ কোটি ৪ লাখ ডলার। প্লাস্টিক দ্রব্য থেকে এসেছে ৪ কোটি ৫২ লাখ ডলার এবং সুতাজাত দ্রব্য রপ্তানি থেকে এসেছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
ইপিবির তথ্যে মতে, চলতি অর্থ বছরের আট মাসে অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে পোশাক রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ভারতের বাজারে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স— এ সব বড় বাজারের চেয়েও ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য বলছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের প্রভাব পড়েনি বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে। ভারত থেকে পণ্য আসা যেমন কমেনি; তেমনি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি তো কমেইনি, বরং বাড়ছে।
নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকের খুবই সম্ভাবনা এবং ভালো বাজার হয়ে উঠছে ভারত। সার্বিক রপ্তানি ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাঝে হোঁচট খেয়েছিল। এখন আবার বাড়ছে। এটা ধরে রাখতে হবে। সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে যে সম্পর্ক দেখা দিয়েছে, তার সম্মানজনক সমাধান করতে হবে।”
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে ২১৩ কোটি (২.১৩ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। ভারতে রপ্তানি করে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় বাংলাদেশের সেটাই প্রথম। তবে পরের অর্থ বছরে সেই রপ্তানিতে ভাটা পড়ে; আয় নেমে আসে ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ (১.৫৭ বিলিয়ন) ডলারে। এরপর আবার ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।