বৃদ্ধা রহিমা বেগমের (৭২) ছেলে আব্দুর রউব জেলেবন্দি। তার স্বামী ইয়ার উদ্দীন মারা গেছেন প্রায় ১৩ বছর আগে।
প্রতিবেশীদের ভাষ্য, মায়ের নয়নের মণি ছিল রউব। মাকে রেখে রউব কোথাও গিয়ে রাত কাটাতেন না। অথচ পুলিশের দায়ের করা নাশকতার মামলায় সেই ছেলে মায়ের চোখের আড়াল প্রায় ১ মাস। এ কারণে সারাক্ষণ বৃদ্ধা মায়ের চোখের কোণে জল জমে থাকত। হাউমাউ করে কান্না করতেন দুই অবুঝ নাতিদেরকে জড়িয়ে ধরে। ছেলেকে শেষবারের মতো একবার দেখার আকুতি ছিল তাঁর। তবে তা অপূর্ণই থাকল। মা’কে শেষ বিদায় জানাতে রউব বাড়ি ফিরলেন ঠিকই কিন্ত ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে (সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা) মুক্তি নিয়ে।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে বার্ধ্যক্য জনিত কারনে আব্দুর রউফের মা নিজ বাড়িইে মারা জান। গত শুক্রবার (০১ ডিশেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার জানাযা শেষে দাফন করা হয় গ্রাম্য কবরস্থানে। রউবের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহ ইউনিয়নের চারুলিয়া গ্রামে। রউব ১১ টার দিকে নিজ নিজ বাড়িতে পৌছালে তখন পরিবারের লোকজন তার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের কান্না আর আকুতিতে কেদেছেন অন্যরাও। এসময় আবেগপ্রবন হয়ে পড়ে অনেকেই শিশুদের কান্নায় নিজেদের চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি।
পরিবার ও প্রতিবেশী সুত্রে জানাযায়, রউবের মা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন এবং শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। ছেলে জেলে থাকায় সব সময় চিন্তা করতেন। মৃত্যুর আগে এক নজর ছেলের মুখটা দেখার আকুতি ছিল মা রহিমার। কিন্তু তাঁর সে আশা পূরণ হলো না। গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এসময় জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম সহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মাকে শেষবারের মত দেখতে ৩ ঘন্টার প্যারোলে মুক্তি পান জামায়াত নেতা আব্দুর রউফ। মুক্তিতে মায়ের জানাযা নামাজে শরিক শেষে দাফন কার্য সম্পন্ন করে পরিবারের লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, মায়ের মৃত্যুর কারণে রউবকে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে সঙ্গে থাকা জেলা পুলিশ তাঁকে নিয়ে পুনরায় জেল হাজতে পাঠান