সাকিব আল হাসানের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। রাজনৈতিক জটিলতায় দেশে ফিরতে পারছেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। একপ্রকার ব্রাত্য হয়েছেন জাতীয় দলে। এবার নতুন দুঃসংবাদ পেলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ৫০ লাখ টাকা জরিমানার মুখে পড়েছেন সাকিব।
শেয়ার ব্যবসায় কারসাজির মাধ্যমে ৯০ লাখ টাকা মুনাফা করে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হচ্ছে সাকিব ও তার মা শিরিন আক্তারকে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর এই জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি)। জানা গেছে, সাকিব ও তার মায়ের নামে পরিচালিত একটি যৌথ বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে একটি বিমা কোম্পানির কেনাবেচায় কারসাজি করা হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানির নাম প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স।
বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে সংঘটিত কারসাজিতে যুক্ত ছিলেন সাকিব। শেয়ারবাজারে যে বিও হিসাব ব্যবহার করে প্যারামাউন্টের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়, সেটি সাকিব ও তার মায়ের নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহযোগী ব্রোকারেজ হাউসে খোলা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিএসইসি সাকিব আল হাসান, শেয়ারবাজারের বহুল আলোচিত কারসাজিকারক আবুল খায়ের হিরুসহ কয়েক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে। প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় ওই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে ডিএসই। গত বছরের ১৭ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা তদন্ত করে। উল্লেখিত সময়ে, অর্থাৎ এক মাসে বাজারে প্যারামাউন্টের প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ৩৫ টাকা বা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে। ওই সময়ে সিরিজ লেনদেন বা নিজেদের মধ্যে হাতবদল করে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন আবুল খায়ের হিরু, সাকিব আল হাসানসহ তাদের নিকটাত্মীয়, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
শেয়ার ব্যবসায় কারসাজির দায়ে সাকিব ও তার মাসহ সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। জরিমানা করা অন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হলো ইশাল কমিউনিকেশন, আবুল খায়ের হিরু, আবুল খায়ের হিরুর বাবা আবুল কালাম মাতলুব, হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট, লাভা ইলেকট্রোডস ও জাহিদ কামাল। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ইশাল কমিউনিকেশনকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় সাকিবকে। ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় আবুল খায়ের হিরুকে। এছাড়া আবুল কালাম মাতলুবকে ১০ লাখ টাকা, হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্টকে ১ লাখ টাকা এবং লাভা ইলেকট্রোডস ও জাহিদ কামাল নামের একজনকে ১ লাখ করে টাকা জরিমানা করা হয়।