চুয়াডাঙ্গা ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের বিনিময়ে জান্নাত! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।


মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে,তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে।সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিৎ সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।
সুন্দর ব্যবহার ও আচার-আচরণ বলতে আমরা বুঝি কারও সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলা,দেখা হলে সালাম দেওয়া,কুশলাদি জিজ্ঞেস করা,কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত না হওয়া,ধমক বা রাগের সুরে কথা না বলা,পরনিন্দা না করা,অপমান-অপদস্ত না করা,উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা,গম্ভীর মুখে কথা না বলা,সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা,অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া।এছাড়া কারও বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা ও সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত।
সুন্দর আচরণ আমরা সবাই প্রত্যাশা করি।কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্যের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যাই।সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে।তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত; যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়।
যার আচরণ যত বেশি সুন্দর সবাই তাকে তত বেশি ভালোবাসে,সম্মান ও শ্রদ্ধা করে।যার আচরণ ভালো নয় সবাই তাকে ঘৃণা করে ও এড়িয়ে চলে।সুন্দর ব্যবহার সুন্দরভাবে কথা বলা সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে।
মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে,তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে।সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিৎ সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।
সুন্দর ব্যবহারের কারণে যে মুখটি প্রিয় হয়,বিপরীতভাবে অসুন্দর ব্যবহার করায় একই মুখটি অপ্রিয় হয়ে যায়।তাই সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়, পরকালে বিনিময় হিসেবে মেলে অনন্ত সুখের জান্নাত।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না।যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে,তাকে আল্লাহতায়ালা ঘৃণা করেন।আর যার ব্যবহার সুন্দর সে তার ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন,‘সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো-আল্লাহতায়ালার ভয় ও সুন্দর আচরণ।আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো-(মানুষের) মুখ এবং লজ্জাস্থান।’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন,‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’–সহিহ মুসলিম
হাদিসে রাসূল (সা.) আরও বলেছেন,‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর,সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’-সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেন,‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।’ -মুসনাদে আহমদ
আরেক হাদিসে আছে,রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর,আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।-সুনারে আবু দাউদ
হজরত রাসূল (সা.) আরও বলেছেন,‘যদি কেউ বিনম্রতা ও নম্র আচরণ লাভ করে তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের পাওনা সব কল্যাণই লাভ করল।আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়িঘর ও জনপদে বরকত দেয় এবং আয়ু বৃদ্ধি করে।’–আহমদ
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।



Source link

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ
avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের বিনিময়ে জান্নাত! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

প্রকাশ : ০৫:৩৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪


মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে,তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে।সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিৎ সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।
সুন্দর ব্যবহার ও আচার-আচরণ বলতে আমরা বুঝি কারও সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলা,দেখা হলে সালাম দেওয়া,কুশলাদি জিজ্ঞেস করা,কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত না হওয়া,ধমক বা রাগের সুরে কথা না বলা,পরনিন্দা না করা,অপমান-অপদস্ত না করা,উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা,গম্ভীর মুখে কথা না বলা,সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা,অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া।এছাড়া কারও বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা ও সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত।
সুন্দর আচরণ আমরা সবাই প্রত্যাশা করি।কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্যের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যাই।সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে।তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত; যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়।
যার আচরণ যত বেশি সুন্দর সবাই তাকে তত বেশি ভালোবাসে,সম্মান ও শ্রদ্ধা করে।যার আচরণ ভালো নয় সবাই তাকে ঘৃণা করে ও এড়িয়ে চলে।সুন্দর ব্যবহার সুন্দরভাবে কথা বলা সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে।
মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে,তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে।সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিৎ সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।
সুন্দর ব্যবহারের কারণে যে মুখটি প্রিয় হয়,বিপরীতভাবে অসুন্দর ব্যবহার করায় একই মুখটি অপ্রিয় হয়ে যায়।তাই সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়, পরকালে বিনিময় হিসেবে মেলে অনন্ত সুখের জান্নাত।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না।যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে,তাকে আল্লাহতায়ালা ঘৃণা করেন।আর যার ব্যবহার সুন্দর সে তার ব্যবহারের কারণে নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াব লাভ করবে।’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন,‘সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তা হলো-আল্লাহতায়ালার ভয় ও সুন্দর আচরণ।আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে তা হলো-(মানুষের) মুখ এবং লজ্জাস্থান।’ -সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন,‘সুন্দর আচরণই নেক আমল।’–সহিহ মুসলিম
হাদিসে রাসূল (সা.) আরও বলেছেন,‘তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর,সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।’-সুনানে তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেন,‘অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।’ -মুসনাদে আহমদ
আরেক হাদিসে আছে,রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘যার আচার-ব্যবহার সুন্দর,আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।-সুনারে আবু দাউদ
হজরত রাসূল (সা.) আরও বলেছেন,‘যদি কেউ বিনম্রতা ও নম্র আচরণ লাভ করে তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের পাওনা সব কল্যাণই লাভ করল।আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়িঘর ও জনপদে বরকত দেয় এবং আয়ু বৃদ্ধি করে।’–আহমদ
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।



Source link