যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ইলিয়াস হোসেন নামে এক কলেজ ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মারা যাওয়া প্রেমিকের প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল হক দফাদারের বাড়ির জানালার পাশ থেকে ইলিয়াসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পরিবারের দাবি- ইলিয়াসকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত প্রেমিকা ও তার বাবা।
নিহত ইলিয়াস হোসেন একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ও চৌগাছার পাশাপোল আমজামতলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
অভিযুক্ত তরুণীর পরিবারের দাবি, ইলিয়াস আত্মহত্যা করেছেন। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ ইলিয়াসের পরিবার। তাদের দাবি ইলিয়াসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল হকের মেয়ে কলেজছাত্রী লুইস পারভীন লিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী ফারুক হোসেনের ছেলে ইলিয়াস হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের দু’জনের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকার অনেকেই জানতেন। শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে লুইস পারভীন লিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান ইলিয়াস হোসেন। ঘরের জানালা দিয়ে তারা দুজন কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে ইলিয়াস পড়ে যান। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরুণী লুইস পারভীন লিয়ার দাবি, ইলিয়াস রাতে তার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তাকে তিনি জানিয়ে দেন তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। তাকে বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। এক পর্যায়ে ইলিয়াস জানালা দিয়ে হাত ভেতরে দিয়ে তার ওড়না কেড়ে নেন। সেই ওড়না পেঁচিয়ে বাইরে থেকে জানালায় গলায় ফাঁস দেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি ওড়না কেটে দেন। এতে ইলিয়াস নিচে পড়ে যান। এরপর তাদের এক বন্ধুকে ফোন করে খবর দেন। পরে লোকজন এসে ইলিয়াসের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের বন্ধু ইয়াসিন বলেন, লিয়ার ফোনে খবর পেয়ে এসে দেখি লাশের পাশে লিয়া কাঁদছে। আমি ইলিয়াসের পালস চেক করে দেখি চলছে না। এরপর ইলিয়াস ভাইয়ের আম্মুকে খবর দিই। তারা এসে দেখে লাশ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে দড়ি বা অন্য কিছু দেখিনি।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে অভিযুক্ত মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ছেলেটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।