গাইবান্ধায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার হয়ে ফেসবুক লাইভে শাকিল মিয়া (২২) নামের এক যুবক ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (৮) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা শহরের ২ নম্বর রেলগেটে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যার আগে নিজ ফেসবুক আইডিতে লাইভে শ্বশুরবাড়ির হুমকি-ধমকিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা শেয়ার করেন শাকিল। যা সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
নিহত শাকিল মিয়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভগবানপুর (বালুয়া হাসপাতাল) গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় অটোরিকশাচালক ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় রংপুর এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি গাইবান্ধা শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনের নিচে লাফ দেন শাকিল। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
নিহতের স্বজনরা জানান, একমাস আগে শাকিল প্রেম করে প্রতিবেশী শাহিন মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তারকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর শাকিলকে মেনে নিচ্ছিল না শারমিনের পরিবার। উল্টো শারমিনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছিল। ঘটনার দিন সকালে শাকিলের গায়ে হাত তোলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল বলেও জানান স্বজনরা।
নিহতের মামা মাসুম মিয়া বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট, ভিসাসহ প্রায় সব প্রস্তুত হয়েছিল। এক মাসের মধ্যেই বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার, নির্যাতনে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে শাকিল।’
বড় ভাই সৌরভ মিয়া বলেন, ‘মীমাংসার কথা বলায় শনিবার সকালে শাকিল এবং আমাকে মারধর করে শ্বশুর শাহিন ও তার লোকজন। ওদের অত্যাচারেই শাকিল আত্মহত্যা করেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সেতাফুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, শাকিলের মৃত্যুর বিষয় আমরা কোনো অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।