চুয়াডাঙ্গা ১১:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় দুটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি জটিলতায় অভিভাবকদের অবস্থান-অনশন

চুয়াডাঙ্গার দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লটারিতে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চান্সপ্রাপ্তদের ভর্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটক অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন অভিভাবকরা। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করে বিধিমতো ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

 

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির লটারিতে চান্স প্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী বয়সের কারণে এখনো ভর্তি হতে পারেনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৯ বছর বয়স অতিক্রম করলে তারা তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে সন্তানদের বয়স ৯ বছর পার হলেও সন্তানদের ভর্তির দাবিতে তাদের অভিভাবকরা এই অনশন করছেন। ফলে অভিভাবকদের মধ্যে লটারি কার্যক্রম নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একযোগে দেশের সব সরকারি বিদ্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে গত ১২ নভেম্বর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়, চলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। গত ১৭ ডিসেম্বর চান্সপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করে নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেয় দুটি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপর ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ভর্তির কার্যক্রম। যা গতকাল ২২ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। ফলাফলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩৫ জন ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৮ চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর বয়স সরকার নির্ধারিত বয়স ৯ বছর পার হয়ে যাওয়ায় তারা ভর্তি হতে পারেনি।

 

অভিভাবকদের অভিযোগ, সরকারি নিতীমালা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় এবং চুয়াডাঙ্গা ভি.জে. সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সালের আগে জন্ম হতে হবে, যা অনেক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি। এ কারণে লটারিতে নির্বাচিত হয়েও ভর্তির যোগ্যতা হারিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।

 

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাইদ হোসেন বলেন, চুয়াডাঙ্গা ভি.জে. সরকারি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারিতে নির্বাচিত হয়েছে তার ভাস্তে আব্দুল আল রোমান। রোমানের বয়স মাত্র ৫ মাস বেশি হওয়ায় তাকে ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। এটা খুবই অন্যায়। স্বর্ণালী খাতুন নামে এক অভিভাবক তার মেয়ে নুসরাত জান্নাত সিনহার চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লটারিতে নির্বাচিত সম্পর্কে বলেন, নুসরাতের জন্ম ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট। বয়স সামান্য কম হওয়ায় তাকে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। স্কুলের নিয়ম এত কঠোর হলে আমরা কোথায় যাব? বকুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবক তার ছেলে ফাহিম বিন ইসলাম (প্রদীপন) সম্পর্কে বলেন, তার সন্তানের জন্ম ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর। মাত্র ২৬ দিনের পার্থক্যের জন্য তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, ফর্ম তোলার সময় কেন আমাদের জানানে হলো না, যদি বয়সের জটিলতায় ভর্তি নেয়া হবে না, তাহলে কেন আবেদন করার সুযোগ দেয়া হলো? আর কেনই বা লটারিতে উত্তীর্ণ করা হলো?

 

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘আমার স্কুলে দুই শিফটে ২১০ জন করে ভর্তি হবে। ভর্তি প্রায় শেষ। তবে কিছু শিক্ষার্থী বয়সজনিত জটিলতায় ভর্তি হতে পারছে না। এটা উর্দ্ধতনরা দেখবেন। আমি ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসক মহোদয় ও শিক্ষা বোর্ডে বিষয়টি জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় জানান, ‘প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দিয়েছি। শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করে বিধি মতো ব্যবস্থা তিনি নিবেন। তারা যেহেতু চান্স পেয়েছে, কিভাবে তাদেরকে ভর্তি নেয়া যায় সেটি বোর্ড বিবেচনা করবে।’

 

Powered by WooCommerce

চুয়াডাঙ্গায় দুটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি জটিলতায় অভিভাবকদের অবস্থান-অনশন

আপডেটঃ ১০:২৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লটারিতে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চান্সপ্রাপ্তদের ভর্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটক অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন অভিভাবকরা। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করে বিধিমতো ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

 

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির লটারিতে চান্স প্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী বয়সের কারণে এখনো ভর্তি হতে পারেনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৯ বছর বয়স অতিক্রম করলে তারা তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে সন্তানদের বয়স ৯ বছর পার হলেও সন্তানদের ভর্তির দাবিতে তাদের অভিভাবকরা এই অনশন করছেন। ফলে অভিভাবকদের মধ্যে লটারি কার্যক্রম নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একযোগে দেশের সব সরকারি বিদ্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে গত ১২ নভেম্বর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়, চলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। গত ১৭ ডিসেম্বর চান্সপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করে নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেয় দুটি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপর ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ভর্তির কার্যক্রম। যা গতকাল ২২ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। ফলাফলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩৫ জন ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভিজে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৮ চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর বয়স সরকার নির্ধারিত বয়স ৯ বছর পার হয়ে যাওয়ায় তারা ভর্তি হতে পারেনি।

 

অভিভাবকদের অভিযোগ, সরকারি নিতীমালা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় এবং চুয়াডাঙ্গা ভি.জে. সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সালের আগে জন্ম হতে হবে, যা অনেক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি। এ কারণে লটারিতে নির্বাচিত হয়েও ভর্তির যোগ্যতা হারিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।

 

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাইদ হোসেন বলেন, চুয়াডাঙ্গা ভি.জে. সরকারি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারিতে নির্বাচিত হয়েছে তার ভাস্তে আব্দুল আল রোমান। রোমানের বয়স মাত্র ৫ মাস বেশি হওয়ায় তাকে ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। এটা খুবই অন্যায়। স্বর্ণালী খাতুন নামে এক অভিভাবক তার মেয়ে নুসরাত জান্নাত সিনহার চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লটারিতে নির্বাচিত সম্পর্কে বলেন, নুসরাতের জন্ম ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট। বয়স সামান্য কম হওয়ায় তাকে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। স্কুলের নিয়ম এত কঠোর হলে আমরা কোথায় যাব? বকুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবক তার ছেলে ফাহিম বিন ইসলাম (প্রদীপন) সম্পর্কে বলেন, তার সন্তানের জন্ম ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর। মাত্র ২৬ দিনের পার্থক্যের জন্য তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, ফর্ম তোলার সময় কেন আমাদের জানানে হলো না, যদি বয়সের জটিলতায় ভর্তি নেয়া হবে না, তাহলে কেন আবেদন করার সুযোগ দেয়া হলো? আর কেনই বা লটারিতে উত্তীর্ণ করা হলো?

 

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘আমার স্কুলে দুই শিফটে ২১০ জন করে ভর্তি হবে। ভর্তি প্রায় শেষ। তবে কিছু শিক্ষার্থী বয়সজনিত জটিলতায় ভর্তি হতে পারছে না। এটা উর্দ্ধতনরা দেখবেন। আমি ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসক মহোদয় ও শিক্ষা বোর্ডে বিষয়টি জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় জানান, ‘প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দিয়েছি। শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করে বিধি মতো ব্যবস্থা তিনি নিবেন। তারা যেহেতু চান্স পেয়েছে, কিভাবে তাদেরকে ভর্তি নেয়া যায় সেটি বোর্ড বিবেচনা করবে।’