চুয়াডাঙ্গা ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরকীয়ার অভিযোগে নারী ও পুরুষকে জুতার মালা ; গ্রেপ্তার ৩

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তিয়রবিলা গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে জুতাপেটা করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সালিশকারীরা। পরে তাদের জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়।

 

গত ২৯ জুলাই শনিবার এই ঘটনা ঘটলেও সোমবার (৩১ জ‌ুলাই) বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সকলের নজরে আসে।

 

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৫ জন ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় সালিশকারী তিনজনকে রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, খাসকররা গ্রামের শফি মল্লিক (৬০), হাসান আলী (৩০), কলম জোয়ারদার (৬০)। মঙ্গলবার (০১ আগষ্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

 

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ী যুবক লালনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামে ওই গৃহবধূর বাড়ির সন্নিকটে সালিশ বৈঠক ডাকেন ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত লালন সালিশে আসতে না চাইলেও জোরপূর্বক তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। প্রায় ২ শতাধিক সাধারণ মানুষের উপস্থিতে বৈঠক হয়। পরে সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরকীয়া গৃহবধূ ও লালনকে শারীরিক নির্যাতনের পর জুতার মালা পড়িয়ে এলাকা ঘুরাই। এছাড়াও দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা ও দু’জনকে গ্রাম ছাড়তে নির্দেশ দেয়, খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লাল। এ ঘটনায় সালিশকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেননি।

 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পূর্ব বিরোধের জেরে ওরা আমাকে জোর করে বেধেঁ গ্রামের সবার সামনে জুতার মালা পরিয়ে সারা গ্রাম ঘুরিয়েছে। এখন আর বাঁচার ইচ্ছে নেই আমার। আমি এর বিচার চাই। সোমবার রাতেই থানায় মামলা করেছি।

 

খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লালের সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা ক‌রেও যোগা‌যোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ঘটনা শোনার পরই মামলা নিয়েছি। সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সা‌থে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও মূল হোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জীবননগরে অধিকমূল্যে সার বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

পরকীয়ার অভিযোগে নারী ও পুরুষকে জুতার মালা ; গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশ : ০৮:৩৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অগাস্ট ২০২৩

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তিয়রবিলা গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে জুতাপেটা করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সালিশকারীরা। পরে তাদের জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়।

 

গত ২৯ জুলাই শনিবার এই ঘটনা ঘটলেও সোমবার (৩১ জ‌ুলাই) বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সকলের নজরে আসে।

 

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৫ জন ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় সালিশকারী তিনজনকে রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, খাসকররা গ্রামের শফি মল্লিক (৬০), হাসান আলী (৩০), কলম জোয়ারদার (৬০)। মঙ্গলবার (০১ আগষ্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

 

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ী যুবক লালনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামে ওই গৃহবধূর বাড়ির সন্নিকটে সালিশ বৈঠক ডাকেন ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত লালন সালিশে আসতে না চাইলেও জোরপূর্বক তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। প্রায় ২ শতাধিক সাধারণ মানুষের উপস্থিতে বৈঠক হয়। পরে সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরকীয়া গৃহবধূ ও লালনকে শারীরিক নির্যাতনের পর জুতার মালা পড়িয়ে এলাকা ঘুরাই। এছাড়াও দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা ও দু’জনকে গ্রাম ছাড়তে নির্দেশ দেয়, খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লাল। এ ঘটনায় সালিশকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেননি।

 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পূর্ব বিরোধের জেরে ওরা আমাকে জোর করে বেধেঁ গ্রামের সবার সামনে জুতার মালা পরিয়ে সারা গ্রাম ঘুরিয়েছে। এখন আর বাঁচার ইচ্ছে নেই আমার। আমি এর বিচার চাই। সোমবার রাতেই থানায় মামলা করেছি।

 

খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লালের সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা ক‌রেও যোগা‌যোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ঘটনা শোনার পরই মামলা নিয়েছি। সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সা‌থে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও মূল হোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।