চুয়াডাঙ্গা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবহেলার দায়ে ম্যারাডোনার চিকিৎসকদের বিচার শুরু


ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে বহুল প্রতীক্ষিত বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রসিকিউটরদের দাবি, ম্যারাডোনার মৃত্যু এড়ানো সম্ভব ছিল, তবে চিকিৎসকরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর, ৬০ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান ম্যারাডোনা। এর আগে, সেই মাসের শুরুতে তিনি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার করেন ও সুস্থ হয়ে উঠছিলেন।

ম্যারাডোনা কন্যা

আদালত কক্ষের সামনের সারিতে বসে আছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার মেয়েরা, ছবি: ডয়চে ভেলে

প্রসিকিউটররা বলছেন, তার অবস্থা গুরুতর জানা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। অপরদিকে, আসামিপক্ষের যুক্তি, ম্যারাডোনা অতিরিক্ত চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ও অস্ত্রোপচারের পর আরও দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন ছিল।

প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের আট থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা প্রমাণ করতে চান যে ম্যারাডোনার মৃত্যুর সময় চিকিৎসকরা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন।

জয়ী ম্যারাডোনা

১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ জয় করেন ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

প্রসিকিউটর প্যাট্রিসিও ফেরারি আদালতে বলেন, ‘আজ ডিয়েগো ম্যারাডোনা, তার পরিবার ও আর্জেন্টিনার জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে।’

তদন্তকারীদের মতে, ‘এটি অনিচ্ছাকৃত হত্যার শামিল’। তারা মনে করেন, অভিযুক্তরা জানতেন ম্যারাডোনার শারীরিক অবস্থা কতটা গুরুতর, তবু তাকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি।

হিরো

১৯৮৪ সালে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির হিরো ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

বিচারের আওতায় আনা চিকিৎসক ও মেডিকেল কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, এক নিউরোসার্জন, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, নার্সিং কো-অর্ডিনেটর, চিকিৎসক ও এক নাইট নার্স।

এক নাইট নার্স স্বীকার করেছেন যে তিনি সতর্কতার লক্ষণ দেখেছিলেন, তবে ম্যারাডোনাকে না জাগানোর নির্দেশ ছিল। এই বিচার প্রক্রিয়ায় ১০০ জনেরও বেশি সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেবেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিচারকার্য জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে।

মেসি

২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ম্যারাডোনা, ছবি: বিবিসি

ডিয়েগো ম্যারাডোনা সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল করে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি কোকেন আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন এরপর ১৯৯১ সালে ড্রাগ পরীক্ষায় পজিটিভ আসায় ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন।

ম্যারাডোনা

ক্যারিয়ার শেষে প্রতিবেশি রাষ্ট্র কিউবা সফরকালে প্রেসিডেন্ট ফিডেল কাস্ত্রোর সঙ্গে দেখা করেন ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

তার মৃত্যু বিশ্ব ফুটবলকে শোকে ভাসিয়ে দেয়। বুয়েনস আয়ার্সের রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে হাজার হাজার মানুষ তার কফিনের সামনে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন।

সূত্র: বিবিসি, ডয়চে ভেলে ও ইএসপিএন

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

অবহেলার দায়ে ম্যারাডোনার চিকিৎসকদের বিচার শুরু

আপডেটঃ ০৫:২১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫


ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে বহুল প্রতীক্ষিত বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রসিকিউটরদের দাবি, ম্যারাডোনার মৃত্যু এড়ানো সম্ভব ছিল, তবে চিকিৎসকরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর, ৬০ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান ম্যারাডোনা। এর আগে, সেই মাসের শুরুতে তিনি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার করেন ও সুস্থ হয়ে উঠছিলেন।

ম্যারাডোনা কন্যা

আদালত কক্ষের সামনের সারিতে বসে আছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার মেয়েরা, ছবি: ডয়চে ভেলে

প্রসিকিউটররা বলছেন, তার অবস্থা গুরুতর জানা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। অপরদিকে, আসামিপক্ষের যুক্তি, ম্যারাডোনা অতিরিক্ত চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ও অস্ত্রোপচারের পর আরও দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন ছিল।

প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের আট থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা প্রমাণ করতে চান যে ম্যারাডোনার মৃত্যুর সময় চিকিৎসকরা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন।

জয়ী ম্যারাডোনা

১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ জয় করেন ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

প্রসিকিউটর প্যাট্রিসিও ফেরারি আদালতে বলেন, ‘আজ ডিয়েগো ম্যারাডোনা, তার পরিবার ও আর্জেন্টিনার জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে।’

তদন্তকারীদের মতে, ‘এটি অনিচ্ছাকৃত হত্যার শামিল’। তারা মনে করেন, অভিযুক্তরা জানতেন ম্যারাডোনার শারীরিক অবস্থা কতটা গুরুতর, তবু তাকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি।

হিরো

১৯৮৪ সালে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির হিরো ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

বিচারের আওতায় আনা চিকিৎসক ও মেডিকেল কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, এক নিউরোসার্জন, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, নার্সিং কো-অর্ডিনেটর, চিকিৎসক ও এক নাইট নার্স।

এক নাইট নার্স স্বীকার করেছেন যে তিনি সতর্কতার লক্ষণ দেখেছিলেন, তবে ম্যারাডোনাকে না জাগানোর নির্দেশ ছিল। এই বিচার প্রক্রিয়ায় ১০০ জনেরও বেশি সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেবেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিচারকার্য জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে।

মেসি

২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ম্যারাডোনা, ছবি: বিবিসি

ডিয়েগো ম্যারাডোনা সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল করে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি কোকেন আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন এরপর ১৯৯১ সালে ড্রাগ পরীক্ষায় পজিটিভ আসায় ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন।

ম্যারাডোনা

ক্যারিয়ার শেষে প্রতিবেশি রাষ্ট্র কিউবা সফরকালে প্রেসিডেন্ট ফিডেল কাস্ত্রোর সঙ্গে দেখা করেন ম্যারাডোনা, ছবি: ডয়চে ভেলে

তার মৃত্যু বিশ্ব ফুটবলকে শোকে ভাসিয়ে দেয়। বুয়েনস আয়ার্সের রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে হাজার হাজার মানুষ তার কফিনের সামনে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন।

সূত্র: বিবিসি, ডয়চে ভেলে ও ইএসপিএন