চুয়াডাঙ্গা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ৮ বছরের দুর্নীতির ফিরিস্তি

রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ৮ বছর মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক নেতৃত্বে ব্যাপক দুর্নীতি এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

 

 

রেলপথ মন্ত্রণালয়ে গত ১৫ বছরে মোট প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও, এর প্রায় ৮৫ শতাংশই মুজিবুল হকের নেতৃত্বে নেয়া হয়েছিল।

 

২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মুজিবুল হক ৪৫টি প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছিলেন, যার মোট ব্যয় ছিল প্রায় ৯০ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নির্দেশে মুজিবুল হকের সময়কালে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

 

 

সূত্র জানায়, মুজিবুল হকের অধীনে ৪৫টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়, যার মধ্যে নতুন রেলপথ, স্টেশন নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্প ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় এবং সময় বেড়ে যাওয়ার কারণে সেগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থের লুটপাট হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মুজিবুল হক প্রকল্পগুলো থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রকল্প পরিচালকরা প্রায়ই প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে লুটপাটের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করেছেন।

 

মুজিবুল হক এবং তার সহযোগী প্রকল্প পরিচালকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ছিল, যারা নিজেদের পছন্দের ঠিকাদার এবং আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করত। এসব প্রকল্পে জোরপূর্বক রাজনৈতিক বিবেচনায় অনিয়ম করা হয়েছে, যার ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিকভাবে বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

 

রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং দুদক উভয়ই মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে, এবং তার নিজের নামে, স্ত্রীর নামে ও অন্যান্য স্বজনদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট এবং প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পরিকল্পনা দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মুজিবুল হকসহ রেলের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এবং পিডির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৮ বছর ধরে মুজিবুল হক এবং তার সহযোগীদের দুর্নীতি-লুটপাটের প্রকৃত চিত্র এখন ধরা পড়ছে।

 

 

রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, “আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের কর্তৃপক্ষ সব তথ্য-উপাত্ত দুদক এবং মন্ত্রণালয়ে প্রদান করছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

 

 

এদিকে, রেলপথ সচিব আবদুল বাকী জানিয়েছেন, রেলে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা নজিরবিহীন। “আমরা এখনো যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করছি এবং দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছি,” তিনি বলেন।

এই ঘটনায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আরও তদন্ত চালিয়ে যাবেন, যাতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

Source link

ভারত বোকার স্বর্গে বাস করছে: রিজভী

avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Powered by WooCommerce

সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ৮ বছরের দুর্নীতির ফিরিস্তি

প্রকাশ : ১০:৪১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ৮ বছর মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক নেতৃত্বে ব্যাপক দুর্নীতি এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

 

 

রেলপথ মন্ত্রণালয়ে গত ১৫ বছরে মোট প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও, এর প্রায় ৮৫ শতাংশই মুজিবুল হকের নেতৃত্বে নেয়া হয়েছিল।

 

২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মুজিবুল হক ৪৫টি প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছিলেন, যার মোট ব্যয় ছিল প্রায় ৯০ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নির্দেশে মুজিবুল হকের সময়কালে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

 

 

সূত্র জানায়, মুজিবুল হকের অধীনে ৪৫টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়, যার মধ্যে নতুন রেলপথ, স্টেশন নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্প ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় এবং সময় বেড়ে যাওয়ার কারণে সেগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থের লুটপাট হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মুজিবুল হক প্রকল্পগুলো থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রকল্প পরিচালকরা প্রায়ই প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে লুটপাটের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করেছেন।

 

মুজিবুল হক এবং তার সহযোগী প্রকল্প পরিচালকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ছিল, যারা নিজেদের পছন্দের ঠিকাদার এবং আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করত। এসব প্রকল্পে জোরপূর্বক রাজনৈতিক বিবেচনায় অনিয়ম করা হয়েছে, যার ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিকভাবে বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

 

রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং দুদক উভয়ই মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে, এবং তার নিজের নামে, স্ত্রীর নামে ও অন্যান্য স্বজনদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট এবং প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পরিকল্পনা দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মুজিবুল হকসহ রেলের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এবং পিডির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৮ বছর ধরে মুজিবুল হক এবং তার সহযোগীদের দুর্নীতি-লুটপাটের প্রকৃত চিত্র এখন ধরা পড়ছে।

 

 

রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, “আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের কর্তৃপক্ষ সব তথ্য-উপাত্ত দুদক এবং মন্ত্রণালয়ে প্রদান করছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

 

 

এদিকে, রেলপথ সচিব আবদুল বাকী জানিয়েছেন, রেলে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা নজিরবিহীন। “আমরা এখনো যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করছি এবং দুনীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছি,” তিনি বলেন।

এই ঘটনায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আরও তদন্ত চালিয়ে যাবেন, যাতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

Source link