বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চলছে অভিযোগ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের কথা ভাবছে।
ভারতের আসাম থেকে প্রকাশিত ইংরেজি পত্রিকা দ্য আসাম ট্রিবিউনের অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা প্রেসক্লাবে গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের বিষয়ে তারা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।’ এর আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধীদলীয় নেতা বিজেপির সুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, ‘হিন্দু সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে হামলা-নিপীড়ন বন্ধের কোনো আভাস নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর খড়্গ নেমে এসেছে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেদিনই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়েছেন, সেদিনই আমরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। আমি বিএসএফ কর্মকর্তা ও পুলিশের মহাপরিচালকের সঙ্গে কয়েকবার বসে ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার সীমান্তের নিরাপত্তা।’ এদিকে ভারতের স্থলবন্দর সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য আসাম ট্রিবিউন জানিয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। কয়লা, মাছ ও অন্যান্য পণ্যের আমদানি-রপ্তানি ব্যাপক হারে কমেছে। এখন শুধু অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাণিজ্য চলছে।
ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হারে কমে গেছে। এ জন্য তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করছে। ভারতের অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের আর আগের মতো ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। কেবল স্বাস্থ্যগত জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে একই অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও ত্রিপুরার আগরতলার দুটি হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেবে না।