চুয়াডাঙ্গা ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
এটাই বাংলাদেশ, যেখানে মুসলমানরা মন্দির পাহারা দেয়: সংস্কৃতি উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও কম্বল বিতরণ  টিউলিপ সিদ্দিকির এমপি পদে থাকা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে: সিপিডি নির্বাহী পরিচালক নব্য দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জামায়াত আমিরের লাল সন্ত্রাস ঘোষণাকারী মেঘমোল্লার বসুকে গ্রেফতারের দাবি জীবননগরে ১৬ বছর পর ৬৭ একর বিএডিসির জমি উদ্ধার নির্ধারিত সময়েই হবে বিশ্ব ইজতেমা: ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বাংলাদেশ ডাক বিভাগ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ গণহত্যার বিচারের আগে আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: রাশেদ সংবাদ মাধ্যমে কপিরাইট ইনফোর্সমেন্ট খুবই জরুরি

নব্য দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জামায়াত আমিরের


জুলাই বিপ্লবের পর নব্য চাঁদাবাজ, দখলদার, ঘুষ ও মামলা বাণিজ্যকারীদের বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহীতে জামায়াতে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর কোনো চাঁদাবাজ আছেন? দুর্নীতিবাজ আছেন? ঘুষ বাণিজ্য আছে? যদি থেকে থাকে তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ এসব ছেড়ে দেন। আল্লাহর ওয়াস্তে ছেড়ে দেন। আমাদের বিনীত অনুরোধ যদি কেউ না মানেন, তাহলে জেনে রাখুন, আমাদের যুদ্ধ কিন্তু শেষ হয়নি। ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে। এজন্য আমাদের ছেলেরা এখনো স্লোগান দিচ্ছে ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ/ শেষ হয়নি যুদ্ধ’।’

ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত এ সম্মেলনে জামায়াতের আমির আরো বলেন, ‘একমাত্র কোরআনের শাসন বাংলাদেশে ইনসাফ কায়েম করতে পারে। চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ কতক্ষণ? যতক্ষণ না ইনসাফ কায়েম হয়। এই ইনসাফ দিতে পারে একমাত্র আল কোরআন। এই কোরআনের শাসন দিয়ে আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ন্যায়-ইনসাফের মাধ্যমেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য আমাদের লড়াই এখনও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা ত্যাগ অনেক করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। জীবন খুব ছোট, কাজ অনেক বড়। বিশ্রামের কোনো সময় নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী, যেটাকে শিক্ষার ভিলেজ বলা হয়, শিক্ষার গ্রাম। আমি আশা করি, ৫ আগস্টের পর রাজশাহীতে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। এখানকার মানুষ ভদ্র, বিনয়ী এবং সৎ। কেউ চাঁদাবাজি এখানে করে না, ঠিক না?’ 

এ সময় নেতাকর্মীরা ‘চাঁদাবাজি হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। আমির প্রশ্ন করেন, ‘এখানেও চাঁদাবাজি হয়? এখানেও ফুটপাত দখল হয়? হাটবাজার, বালুমহাল, জলমহাল, যানবাহন স্ট্যান্ড, সবগুলোতে দখলদারি হয়?’ তখনও মাঠভরা নেতাকর্মীরা ‘হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাহলে আমাদের শহিদদের রক্তের প্রতি এটা কি ভালোবাসা? এই কাজ যারা করেন, বিনয়ের সাথে অনুরোধ করি এই কাজটা ছেড়ে দেন। আমাদের শহিদেরা কষ্ট পাবেন। অফিস আদালতে ঘুষ বাণিজ্য আছে, আবার মামলা বাণিজ্যও অনেকে করেন। তাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অনুরোধ- ভাই, এই কাজগুলো করিয়েন না। আমাদের শহিদদের আত্মা বড় কষ্ট পাবে। আমাদের জীবন্ত সন্তানেরা যারা শহিদ হওয়ার নিয়্যত করে রাস্তায় নেমেছিল, তারা কষ্ট পাবে। তাদেরকে কষ্ট দিবেন না।’

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর শক্তিতে বলিয়ান একটি জাতি গঠন করতে চাই। সে জাতি হবে সাহসী জাতি, বীরের জাতি। সে জাতি আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথানত করবে না। এটা করেনি বলেই বিগত ১৫টি বছর আলেম-ওলামাদের ওপর বিগত সরকার তান্ডব চালিয়েছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করেছে তাদের গুম করেছে। অসংখ্য ভাইকে খুন করেছে। চাকরি কেড়ে নিয়েছে। ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়েছে। কাউকে কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। মানুষের কল্যাণে কাজ করার কারণে অনেকে জিন্দা শহিদ হয়ে আছে। হাত পা টুকরা-টুকরা। এই কষ্টের জীবন নিয়ে তারা বেঁচে আছেন। কেবল অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় শত শত নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে, অসংখ্য ভাই বোনকে গুম করেছে। তাদের ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে। কাউকে কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। হাজার মামলায় তাদের হয়রানি করেছে। লাখো সহকর্মীদের জেলে নেওয়া হয়েছে। কী অপরাধ ছিল তাদের! কোনো অপরাধ করেন নি।

রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা ড. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন। 

মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমীর আবু জার গিফারি, নাটোর জেলা আমীর ড. মীর নূরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা আমীর খন্দকার মো. আব্দুর রাকীব, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস রাজশাহী মহানগর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাজশাহীর আহŸায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী প্রমুখ। 

এর আগে সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জুলাই বিপ্লবে রাজশাহীতে শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক।



Source link

প্রসংঙ্গ :
avashnews

এটাই বাংলাদেশ, যেখানে মুসলমানরা মন্দির পাহারা দেয়: সংস্কৃতি উপদেষ্টা

avashnews

Powered by WooCommerce

নব্য দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জামায়াত আমিরের

আপডেটঃ ০৪:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫


জুলাই বিপ্লবের পর নব্য চাঁদাবাজ, দখলদার, ঘুষ ও মামলা বাণিজ্যকারীদের বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহীতে জামায়াতে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর কোনো চাঁদাবাজ আছেন? দুর্নীতিবাজ আছেন? ঘুষ বাণিজ্য আছে? যদি থেকে থাকে তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ এসব ছেড়ে দেন। আল্লাহর ওয়াস্তে ছেড়ে দেন। আমাদের বিনীত অনুরোধ যদি কেউ না মানেন, তাহলে জেনে রাখুন, আমাদের যুদ্ধ কিন্তু শেষ হয়নি। ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে। এজন্য আমাদের ছেলেরা এখনো স্লোগান দিচ্ছে ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ/ শেষ হয়নি যুদ্ধ’।’

ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত এ সম্মেলনে জামায়াতের আমির আরো বলেন, ‘একমাত্র কোরআনের শাসন বাংলাদেশে ইনসাফ কায়েম করতে পারে। চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ কতক্ষণ? যতক্ষণ না ইনসাফ কায়েম হয়। এই ইনসাফ দিতে পারে একমাত্র আল কোরআন। এই কোরআনের শাসন দিয়ে আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ন্যায়-ইনসাফের মাধ্যমেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য আমাদের লড়াই এখনও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা ত্যাগ অনেক করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। জীবন খুব ছোট, কাজ অনেক বড়। বিশ্রামের কোনো সময় নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী, যেটাকে শিক্ষার ভিলেজ বলা হয়, শিক্ষার গ্রাম। আমি আশা করি, ৫ আগস্টের পর রাজশাহীতে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। এখানকার মানুষ ভদ্র, বিনয়ী এবং সৎ। কেউ চাঁদাবাজি এখানে করে না, ঠিক না?’ 

এ সময় নেতাকর্মীরা ‘চাঁদাবাজি হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। আমির প্রশ্ন করেন, ‘এখানেও চাঁদাবাজি হয়? এখানেও ফুটপাত দখল হয়? হাটবাজার, বালুমহাল, জলমহাল, যানবাহন স্ট্যান্ড, সবগুলোতে দখলদারি হয়?’ তখনও মাঠভরা নেতাকর্মীরা ‘হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাহলে আমাদের শহিদদের রক্তের প্রতি এটা কি ভালোবাসা? এই কাজ যারা করেন, বিনয়ের সাথে অনুরোধ করি এই কাজটা ছেড়ে দেন। আমাদের শহিদেরা কষ্ট পাবেন। অফিস আদালতে ঘুষ বাণিজ্য আছে, আবার মামলা বাণিজ্যও অনেকে করেন। তাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অনুরোধ- ভাই, এই কাজগুলো করিয়েন না। আমাদের শহিদদের আত্মা বড় কষ্ট পাবে। আমাদের জীবন্ত সন্তানেরা যারা শহিদ হওয়ার নিয়্যত করে রাস্তায় নেমেছিল, তারা কষ্ট পাবে। তাদেরকে কষ্ট দিবেন না।’

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর শক্তিতে বলিয়ান একটি জাতি গঠন করতে চাই। সে জাতি হবে সাহসী জাতি, বীরের জাতি। সে জাতি আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথানত করবে না। এটা করেনি বলেই বিগত ১৫টি বছর আলেম-ওলামাদের ওপর বিগত সরকার তান্ডব চালিয়েছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করেছে তাদের গুম করেছে। অসংখ্য ভাইকে খুন করেছে। চাকরি কেড়ে নিয়েছে। ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়েছে। কাউকে কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। মানুষের কল্যাণে কাজ করার কারণে অনেকে জিন্দা শহিদ হয়ে আছে। হাত পা টুকরা-টুকরা। এই কষ্টের জীবন নিয়ে তারা বেঁচে আছেন। কেবল অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় শত শত নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে, অসংখ্য ভাই বোনকে গুম করেছে। তাদের ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে। কাউকে কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। হাজার মামলায় তাদের হয়রানি করেছে। লাখো সহকর্মীদের জেলে নেওয়া হয়েছে। কী অপরাধ ছিল তাদের! কোনো অপরাধ করেন নি।

রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা ড. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন। 

মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমীর আবু জার গিফারি, নাটোর জেলা আমীর ড. মীর নূরুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা আমীর খন্দকার মো. আব্দুর রাকীব, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস রাজশাহী মহানগর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাজশাহীর আহŸায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী প্রমুখ। 

এর আগে সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জুলাই বিপ্লবে রাজশাহীতে শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক।



Source link