চুয়াডাঙ্গা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় তীব্র খরায় সেচ নিয়ে বিপাকে কৃষককুল

দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড দাবদাহের কারণে বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার কৃষকরা। ইতিমধ্যে ক্ষেতের ধান পরিপুষ্ট হচ্ছে।

 

আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে অনেক ধান কাটা শুরু হবে। আবার অনেক ক্ষেতে ধানের আশানুরূপ ফলনের জন্য ক্ষেতে সবসময়ের জন্য পানি রাখা প্রয়োজন। প্রচন্ড খরা ও তাপদাহে পানির উৎসগুলো ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নিচের নেমে গেছে। ফলে শ্যালো ইঞ্জিনগুলোতে পানি উঠছে কম। এ কারণে ক্ষেতে যেখানে দুই ঘণ্টা পানি লাগতো, সেখানে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তারপরও পানি জমানো যাচ্ছে না জমিতে। এতে যেমন উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি উৎপাদনও কম হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

 

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বাড়ছে তাপমাত্রা। শনিবার (১৫এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জেলার সর্বত্র বোরো আবাদ, মৌসুমী ফল ও ফসলের ক্ষেত চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছে। পানির অভাব পূরণ করতে গিয়ে সেচের বাড়তি খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দামুড়হুদা উপজেলায় ৯ হাজার ৯৩০ হেক্টর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাষ হয়েছে সাত হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। এর অর্ধেক ধান প্রায় পেকে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে কাটা যাবে।

 

দামুড়হুদার কৃষক আব্দুস ছামাদ জানান, দেউলির মাঠে তার ২২ কাঠা জমিতে ধান চাষ করেছেন। ধানের শীষ বের হচ্ছে। এখন সবসময় জমিতে পানি রাখা দরকার। কিন্তু পানির স্থর নিচে নেমে গেছে, শ্যালো মেশিনে পানি খুব কম উঠছে। এক ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা মেশিন চালিয়ে পানি দিতে হচ্ছে তার পরে ও জমিতে একদিন পানি থাকছে না।

 

 

প্রতিদিন পানি দিতে হচ্ছে এতে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।দামুড়হুদার হাউলি গ্রামের কৃষক মৃত সাজাহান আলির ছেলে হাবলু জানান, তিনি হাউলির মাঠে আড়াই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। প্রতিদন সেচ দিতে হচ্ছে। আগে তার ওই ক্ষেতে দুই ঘণ্টা পনি দিতে হতো। মেশিনে এখন পানি কম উঠছে ফলে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তবুও পানি থাকছে না। প্রচন্ড খরায় শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে তার উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

 

 

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, মাঠের অর্ধেক ধান প্রায় পেকে গেছে। এসব ধান এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক ক্ষেতের ধান কাটা যাবে। অর্ধেক ধান একটু দেরিতে লাগানো হওয়ায় এগুলোর ফুল সেরে গেছে। এসব ক্ষেতে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির প্রয়োজন। সবসময় জমিতে অন্তত দুই ইঞ্চি পানি বাঁধিয়ে রাখতে হবে। না হলে পরাগায়ণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা পড়ে ফলন কমে যেতে পারে। এ কারণে কৃষকদেরকে সকল সময় ক্ষেতে পানি রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জীবননগরে অধিকমূল্যে সার বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

দামুড়হুদায় তীব্র খরায় সেচ নিয়ে বিপাকে কৃষককুল

প্রকাশ : ০৭:৩৯:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড দাবদাহের কারণে বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার কৃষকরা। ইতিমধ্যে ক্ষেতের ধান পরিপুষ্ট হচ্ছে।

 

আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে অনেক ধান কাটা শুরু হবে। আবার অনেক ক্ষেতে ধানের আশানুরূপ ফলনের জন্য ক্ষেতে সবসময়ের জন্য পানি রাখা প্রয়োজন। প্রচন্ড খরা ও তাপদাহে পানির উৎসগুলো ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নিচের নেমে গেছে। ফলে শ্যালো ইঞ্জিনগুলোতে পানি উঠছে কম। এ কারণে ক্ষেতে যেখানে দুই ঘণ্টা পানি লাগতো, সেখানে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তারপরও পানি জমানো যাচ্ছে না জমিতে। এতে যেমন উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি উৎপাদনও কম হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

 

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বাড়ছে তাপমাত্রা। শনিবার (১৫এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জেলার সর্বত্র বোরো আবাদ, মৌসুমী ফল ও ফসলের ক্ষেত চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছে। পানির অভাব পূরণ করতে গিয়ে সেচের বাড়তি খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দামুড়হুদা উপজেলায় ৯ হাজার ৯৩০ হেক্টর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাষ হয়েছে সাত হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। এর অর্ধেক ধান প্রায় পেকে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে কাটা যাবে।

 

দামুড়হুদার কৃষক আব্দুস ছামাদ জানান, দেউলির মাঠে তার ২২ কাঠা জমিতে ধান চাষ করেছেন। ধানের শীষ বের হচ্ছে। এখন সবসময় জমিতে পানি রাখা দরকার। কিন্তু পানির স্থর নিচে নেমে গেছে, শ্যালো মেশিনে পানি খুব কম উঠছে। এক ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা মেশিন চালিয়ে পানি দিতে হচ্ছে তার পরে ও জমিতে একদিন পানি থাকছে না।

 

 

প্রতিদিন পানি দিতে হচ্ছে এতে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।দামুড়হুদার হাউলি গ্রামের কৃষক মৃত সাজাহান আলির ছেলে হাবলু জানান, তিনি হাউলির মাঠে আড়াই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। প্রতিদন সেচ দিতে হচ্ছে। আগে তার ওই ক্ষেতে দুই ঘণ্টা পনি দিতে হতো। মেশিনে এখন পানি কম উঠছে ফলে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে। তবুও পানি থাকছে না। প্রচন্ড খরায় শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে তার উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

 

 

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, মাঠের অর্ধেক ধান প্রায় পেকে গেছে। এসব ধান এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক ক্ষেতের ধান কাটা যাবে। অর্ধেক ধান একটু দেরিতে লাগানো হওয়ায় এগুলোর ফুল সেরে গেছে। এসব ক্ষেতে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির প্রয়োজন। সবসময় জমিতে অন্তত দুই ইঞ্চি পানি বাঁধিয়ে রাখতে হবে। না হলে পরাগায়ণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা পড়ে ফলন কমে যেতে পারে। এ কারণে কৃষকদেরকে সকল সময় ক্ষেতে পানি রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।