জলবায়ু-সহনশীল কৃষি প্রবৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সড়ক নিরাপত্তা উন্নত করতে মোট ৮৫৮ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংক।
বুধবার (০৭ জুন) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অধ্যায়ের পরিচালক আবদুলায়ে সেক চুক্তিতে সই করেন।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাপ্ত অর্থ প্রধানত দুটি খাতে ব্যয় করা হবে। প্রথমত, জলবায়ু সহনশীল কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা। সেই লক্ষ্যে প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এনটারপ্রিনিয়ারশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স (পার্টনার) নামে ৫০ কোটি ডলারের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জলবায়ু সহনশীলতা, খাদ্য নিরাপত্তা ও শস্য বৈচিত্র্য আনয়নের মধ্যদিয়ে কৃষিখাতের রুপান্তরে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি কৃষি উদ্যোগ বৃদ্ধি, কুষি সরঞ্জামগুলো আরও সহজলভ্য করা, উন্নত খাদ্য নিরাপত্তা প্রক্রিয়া এবং নারী ও যুব উদ্যোক্তা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এটি উন্নত তথ্য ব্যবস্থাপনা, গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতের সাথে অংশীদারত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান ও নীতির আধুনিকায়নে সহায়তা করবে বলেও প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রাপ্ত অর্থের বাকি অংশ খরচ করা হবে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পে। সেই লক্ষ্যে রোড সেফটি প্রোজেক্ট নামে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যা দেশের সড়ক নিরাপত্তা উন্নত করতে ও নির্বাচিত উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়ক ও জেলার সড়কগুলোতে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই অনুদানের ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অধ্যায়ের পরিচালক আবদুলায়ে সেক বলেন, স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি করেছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মতো নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাঁধা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই প্রকল্পের আওতায় দুটি জাতীয় মহাসড়ক-এন৪ (গাজীপুর-এলেঙ্গা) ও এন৬ (নাটোর থেকে নবাবগঞ্জ) প্রকল্পে উন্নত নকশা, সংকেত ব্যবস্থা, পথচারীদের জন্য অবকাঠামো, গতিরোধকের মতো জরুরি সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বলেন, এই দুই প্রকল্প ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কৃষি নীতি পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু সহনশীল কৃষি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বেশি অগ্রাধিকার ও নতুন সড়ক পরিবহন আইন সড়ক নিরাপত্তার ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।