চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দলবাড়িয়া দেহাটি মাঠ পাড়ার মতিয়ার রহমান মতিকে (৫৫) হত্যা জবাই করে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার আপন মেয়ে ময়না (২২) ও তার স্ত্রী তাসলি খাতুন (৫০)।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মতিউর রহমান মতি কাশিপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মতিউর রহমান মতি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বড় ছেলে ২৭ বছর বয়সি তাজমুল ও ছোট ছেলে ২৪ বছর বয়সে নাজমুল। এবং তার মেয়ে ২২ বছরে বয়সী ময়না খাতুন।
নিহত মতিউর রহমান মতির মেয়ে ময়না খাতুনের স্বামী কাশিপুর গ্রামের মোজামের ছেলে সুমন হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে ১৩ দিন যাবত ময়না খাতুন তার বাপের বাড়ি অবস্থান করছিল। এদিকে তার বড় ছেলে তাজমুল হোসেন তিন বছর যাবত শ্বশুরবাড়িতে থাকে এবং তার ছোট ছেলে নাজমুল গত বৃহস্পতিবারে তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। এবং শনিবারে মতিউর রহমান মতি নিহতের ঘটনা ঘটে।
নিহত মতির মেয়ে ময়না পিতা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে আমি আমার রুমে শুয়ে ছিলাম। রাত এগারোটার দিকে আমার বাবা আমার কাছে আসে এবং আমাকে কু- প্রস্তাব দেয় এতে আমি বিব্রত হওয়া সহ বাবাকে ধমক দেই। আর এতে আমার বাবা আমার মাকে যেন কিছু না বলি এই প্রতিশ্রুতিতে তার নিজ স্বয়ন কক্ষে চলে যায়। এরপর সকাল সাতটার দিকে আমার বাবা নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। কিন্তু আমি কিছুতেই রাতের ঘটনা মেনে নিতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার বাবার গলা কেটে দেই এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতবিক্ষত সহ পুরুষাঙ্গ কেটে বিচ্ছিন্ন করি। তখন আমার মা আমার সাথেই ছিল। আর এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, নিহত মতিউর রহমান মতি ছিলেন একজন কিস্তি ব্যবসায়ী। তিনি দেহাটি মাঠ পাড়ায় নতুন বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছিলেন। আমরা কখনো তার এরকম কথা শুনিনি। এছাড়াও এরকম হত্যা মা ও মেয়ে দুজনই মহিলা হয়ে এরকম ঘটনা ঘটাতে পারে না। এর পেছনে অন্য কোন ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন তারা।
নিহত মতির তার বড় ছেলে তাজমুল হোসেন বলেন, আমি তিন বছর যাবত আমার শ্বশুরবাড়ি মহেশপুর থানার কুসুমপুরে বসবাস করছি। আমার বাবার সাথে প্রায় আমার ফোনে কথা হয়। কিন্তু আমার বাবার বিষয়ে এরকম অপবাদ কখনো আমার মা বা বোনের কাছ থেকে শুনিনি।
নিহত মতির ছোট ছেলে নাজমুল হোসেন বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার রাতে আমার শ্বশুর বাড়ি যাই। কিন্তু আজ সকালে শুনতে পারি আমার মা ও বোন আমার বাবাকে হত্যা করেছে। তাছাড়া আমার মা ও বোনের কাছ থেকে আমি কখনো আমার বাবার সম্বন্ধে এরকম অপবাদ শুনিনি।
এছাড়াও স্থানীয়রা বলেন , কোন মেয়ের একার পক্ষে কখনো এরকম হত্যাকান্ড ঘটানো সম্ভব না। এই খুনের সাথে আরো কেউ জড়িয়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাবেদ হাসান বলেন, আমরা হত্যা কান্ডের ঘটনাটা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেই সাথে মা ও মেয়েকে আটক করি এবং তারা মতিউর রহমান মতি কে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে সত্যতা স্বীকার করেন। এছাড়াও ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেটি আমরা তদন্তপূর্বক পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।