চুয়াডাঙ্গায় কবিরাজ রাজ্জাক শেখ ওরফে রাজাই হত্যা ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। চিকিৎসার নামে রাতে মাঠের একটি পান বরজে নিয়েগিয়ে স্ত্রীকে সম্ভ্রমহানি করার অপরাধে কবিরাজ রাজাইকে জবাই করে হত্যা করে গৃহবধুর স্বামী রুবেল মিয়া (২৩) ও তার সহযোগী সোহেল আলী (২১)।
এ ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো চাকু, মোটরসাইকেল ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার সুবদিয়া গ্রামের আব্দুর সেলিমের ছেলে রুবেল মিয়া ও একই এলাকার আনিসের ছেলে সোহেল রানা। মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সন্মেলনে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান জানান গ্রেফতারকৃত রুবেল ও সোহেল পুলিশকে এমন তথ্য দিয়েছেন। সংবাদ সন্মেলনে পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান জানান, ভিকটিম আব্দুর রাজ্জাক কবিরাজি করে মানুষের বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা প্রদান করতেন।
আসামি রুবেল মিয়া ও তার স্ত্রী শারীরিক চিকিৎসার জন্য ভিকটিম আব্দুর রাজ্জাকের স্মরণাপন্ন হলে গত ৩১ মে সন্ধ্যায় আব্দুর রাজ্জাক জ্বিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে আসামি রুবেল ও তার স্ত্রীকে সদর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের নবগঙ্গা ব্রিজ এলাকায় পান বরজের কাছে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় এবং আসামিকে সিগারেট আনতে দোকানে পাঠায়।
কিছুক্ষণ পরে আসামি রুবেল পান বরজে এসে কবিরাজ রাজ্জাক ও তার স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে স্ত্রীর মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পায়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে আনুমানিক ৩৫/৪০ মিনিট পরে ভিকটিম ও তার (রুবেলের) স্ত্রী পানবরজের কাছে ফিরে আসে। এসময় তার স্ত্রীকে দেখে খারাপ কোনো কাজ করেছে বলে সন্দেহ পোষন করে রুবেল।
পরবর্তীতে আসামি বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার স্ত্রী কান্নাকাটির একপর্যায়ে স্বীকার করে আব্দুর রাজ্জাক কবিরাজ চিকিৎসার দেওয়ার নামে সম্ভ্রমহানি করেছে। ওই রাতেই আসামি রুবেল তার সহযোগী সোহেল রানাকে সঙ্গে নিয়ে কৌশলে কবিরাজ রাজাই ডেকে মোটরসাইকেলে তুলে ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় পোচ দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় ফেলে দেয়। পুলিশের একাধিক টিম দ্রুত অভিযান চালিয়ে এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে ৫ জুন রাত ১২ টার দিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন ভান্ডারদহ-জুগিরহুদা রাস্তার পাশে মাঠ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজাই (৫০) নামে এক কবিরাজের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। # #