বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে রপ্তানি করা মাছের ট্রাকের মধ্য থেকে শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় দুই কোটি ৭৮ লাখ ভারতীয় রুপি মূল্যের ৪ কেজি ৬৬৭ গ্রাম ওজনের ৪০ টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে ভারতীয় বিএসএফ। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এঘটনার পর আমদানি-রপ্তানিতে নজরদারি শুরু করছে প্রশাসন। স্বর্ণ পাচারকারী গডফাদাররা বৈধ পণ্যের অন্তরালে এ অবৈধ কারবার শুরু করায় বৈধ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছে। ব্যবসায়ীদের দাবি বেনাপোল বন্দরে প্রশাসনের নজরদারির অভাবে একের পর এক অনিয়ম ধরা পড়ছে।
বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখা সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরার মোস্তফা অর্গানিক নামক একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩ টন তেলাপিয়া মাছ সাতক্ষীরা ড-১১-০০৪৭ নং ট্রাকের মাধ্যমে ভারতে রপ্তানি করেন। যার বিল অব এন্ট্রি নং সি-১৯২৫১ তারিখ ১২/০৩/২০২৩। পণ্যের মূল্য ৭৫০০ মার্কিন ডলার।
পণ্য চালানটি রপ্তানির জন্য ব্রাদার্স সেন্ডিগেট নামক সিএন্ডএফ এজেন্ট বেনাপোল কাস্টমসে ডকুমেন্টস দাখিল করেন। পণ্য চালানটি আমদানি করেন ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাবা ইন্টারন্যাশনাল। পেট্রাপোল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট রয়েস ইন্টারন্যাশনাল। বৈধ মাছের মধ্য থেকে ৪০ টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট ষ্টাফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশী মাছ বোঝাই ট্রাকটি নোম্যান্সল্যান্ডে পৌছালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভারতের কল্যানী থেকে আসা ১৪৫ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা ট্রাকটি তাদের জিম্মায় নিয়ে নেন। পরে ট্রাক থেকে মাছের প্যাকেট নামিয়ে তল্লাশি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তেলাপিয়া মাছের মধ্য থেকে ৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৪ কেজি ৬৬৭ গ্রাম। আটক করা সোনার মোট মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ভারতীয় রুপি।
বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, সোনা-সহ ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে। ওই পাচারকারীর নাম সুশঙ্কর দাস। তিনি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই ট্রাকচালক জানিয়েছেন, তিনি ১৫ বছর ধরে ট্রাক চালাচ্ছেন। ট্রাকমালিক সফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরার বাসিন্দা বলেও জানিয়েছেন তিনি। ওই মাছ কলকাতার বাবা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থাকে হস্তান্তরের করার কথা ছিল। অভিযুক্তকে সোনার বিস্কুট এবং ট্রাকসহ পেট্রাপোলের শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দিয়েছ বিএসএফ। এ ব্যাপারে পেট্রাপোল থানায় একটি মামলা হয়েছে।