যশোরের ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে ছিনতাই, ইভটিজিং, যাত্রী হয়রানি এখন নিত্য দিনকার ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলা, তদারকির অভাব আর কর্মস্থলে অনুপস্থিতির সুযোগে এই স্টেশনটি এখন ইভটিজার আর উঠতি বয়সী ছিনতাইকারীদের দখলে। রাতের বেলা তো বটেই এখন দিনের বেলাতেও এখানে হরহামেশা ছিনতাই হচ্ছে। বিশেষ করে বাইরে থেকে ফুলের রাজধানী গদখালিতে বেড়াতে আসা তরুন তরুনী এবং কিশোর কিশোরী এবং প্রেমিক যুগল ছিনতাইকারী দের মুল টার্গেটে পরিনত হয়েছে।
গত শুক্রবার (৩ মার্চ) যশোর থেকে গদখালিতে ঘুরতে আসা তিন কিশোর এবং এক কিশোরী ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। যশোরের রাজারহাটের ভুক্তভোগী জীসান(১৫) জানান, সে তার দুই বন্ধু এবং এক বান্ধবী মিলে গদখালি ফুল দেখে যশোরে ফেরার উদ্দেশ্যে ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে আসে। এসময় ৫/৬ জন উঠতি বয়সী ছেলে তাদেরকে ডেকে এক পাশে নিয়ে যায় এবং সাথে মেয়ে নিয়ে ঘুরতে এসেছি কেন এই বলে মারতে উদ্যত হয়।
এসময় ঐ ছেলেদের সাথে আরও ১০/১৫ জন এসে যুক্ত হয়। প্রথমে রেল ব্রীজের উপরে এবং সন্ধ্যার পরে পাশের একটি বাড়িতে আটকে রেখে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তাদের কাছে থাকা একটি স্যামসাং এবং একটি রেডমি ফোন নিয়ে কাউকে কিছু বললে জানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে ছেড়ে দেয়। তারা ভয়ে কাউকে কিছু না বলে বাসে চেপে বাড়িতে ফিরে যায়। গদখালি ঘুরতে আসা পর্যটকরা প্রায়শঃই এরকম ছিনতাই আর ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছেন কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে কেউ কোথাও অভিযোগ দিচ্ছেন না। ফলে অপরাধীরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
এবিষয়ে কথা বলতে ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে গেলে দায়িত্বরত কোনো কর্মকর্তাকে স্টেশনে পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করা হলে স্টেশন মাস্টার নিগার সুলতানা বলেন আজ তার ডিউটি নেই। তিনি ৭ তারিখে আসবেন। আর পারভীন সুলতানা বলেন, ব্যক্তিগত কাজে স্টেশনর বাইরে আছি। ছিনতাই বা ইভটিজিং এর বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
ঝিকরগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত বলেন, এধরণের ঘটনা রোধে আমাদের পুলিশি টহল জারি আছে। কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বেও ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে কর্মরত মাস্টারের কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতি, দায়িত্বে অবহেলা, আর্থিক দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হলেও কতৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মুলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনতিবিলম্বে স্টেশনটিকে ইভটিজার এবং ছিনতাইকারী মুক্ত করতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা সেই সাথে স্টেশন মাস্টারের বদলী দাবি করেছেন ভুক্তভোগী সহ স্থানীয় জনগণ।