চুয়াডাঙ্গা ১০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনী ভুমি অফিসে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ভুমি অফিসে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা প্রার্থীরা। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে এই অফিস কেন্দ্রিক শক্তিশালী দালালচক্রও গড়ে উঠেছে।

এছাড়াও সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেন ইচ্ছেমত অফিস করার কারনে মাসের পর মাস নামজারিসহ নানা ফাইল পড়ে থাকায় দূর্ভোগ বেড়েছে ভুমি মালিক ও সেবা প্রত্যাশীদের। দ্রুত সময়ের মধ্যে নামজারিসহ কাজে গতি আনতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে ভুক্তভুগীরা।

 

গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক হারুন অর রশিদ রবি জানান, কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত, খতিয়ানের ভুল সংশোধন, নামজারি আপত্তি-নিষ্পত্তি, দেওয়ানি আদালতের রায় বা আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি, কেসের আদেশের নকল বা সার্টিফায়েড কপি নিতে ভুমি মালিকরা সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে। এসিল্যান্ড ঠিকমতো অফিস করেন না। কেউ কাজে গেলে নানা ধরনের নিয়মনীতি দেখায় অফিসের লোকজন। সেখানে যেসব দালাল থাকে তাদের মাধ্যমে কাজ করালে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। এক্ষেত্রে গ্রাহককে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় যার ভাগ পান অফিসের সকলেই।

 

বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র সঙ্গীত শিল্পি ও পরিচালক আশরাফ মাহমুদ জানান, ভুমি সংক্রান্ত একটি শুনানীতে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন। দিন শেষে শুনানী হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এধরনের অনেকেই ফিরে যান দিনের পর দিন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাহারবাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা একজন পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) জানিয়েছেন,তাদের একটি জমি অন্যজন নামজারি করে দিয়ে গেছে। সেই নামজারি বাতিল করার জন্য দীর্ঘদিন ভুমি অফিসে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। পরে দালালের মাধ্যমে কাজটি সমাধান করা হয়েছে।

 

পৌর শহরের শিশিরপাড়া গ্রামের রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষেল কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিস থেকে জারি করা নোটিশ তাকে না দিয়ে গায়েব করা হয়েছে। একারনে তার নামজারি বাতিল করেছে। পরবর্তীতে দিনের পর দিন ঘুরে আপিল করা হয়েছে। অবিলম্বে এসিল্যান্ড অফিসের অনিয়ম দূর্নীতি ও হয়রানী বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

 

জানা গেছে,বিগত বছরে প্রতিমাসে প্রায় ৩ হাজার নামজারি সম্পন্ন করা হতো সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেনের যোগদানের পর থেকে প্রতি মাসে নামজারি কমে গেছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছে ভুমি মালিকরা। এদিকে নামজারী না থাকার কারনে জরুরী প্রয়োজনেও ভূমি রেজিস্ট্রিও করতে পারছে না অনেকে। নামজারিসহ ভুমির কাজের ফাইলের স্তুুপ বাড়ছে। দ্রত সময়ের মধ্যে নামজারি সহ অন্যান্য কাজ করতে জমি মালিকদের অনেককেই দালালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।

 

এবিষয়ে কথা বলতে অফিসে গিয়ে সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেকে পাওয়া যায়নি। ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও ডিসি অফিসে মিটিং আছে মর্মে অফিসের লোকজন জানান। তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

গাংনী ভুমি অফিসে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতি

আপডেটঃ ০৪:১৬:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ভুমি অফিসে পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা প্রার্থীরা। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে এই অফিস কেন্দ্রিক শক্তিশালী দালালচক্রও গড়ে উঠেছে।

এছাড়াও সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেন ইচ্ছেমত অফিস করার কারনে মাসের পর মাস নামজারিসহ নানা ফাইল পড়ে থাকায় দূর্ভোগ বেড়েছে ভুমি মালিক ও সেবা প্রত্যাশীদের। দ্রুত সময়ের মধ্যে নামজারিসহ কাজে গতি আনতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে ভুক্তভুগীরা।

 

গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক হারুন অর রশিদ রবি জানান, কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত, খতিয়ানের ভুল সংশোধন, নামজারি আপত্তি-নিষ্পত্তি, দেওয়ানি আদালতের রায় বা আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি, কেসের আদেশের নকল বা সার্টিফায়েড কপি নিতে ভুমি মালিকরা সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে। এসিল্যান্ড ঠিকমতো অফিস করেন না। কেউ কাজে গেলে নানা ধরনের নিয়মনীতি দেখায় অফিসের লোকজন। সেখানে যেসব দালাল থাকে তাদের মাধ্যমে কাজ করালে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। এক্ষেত্রে গ্রাহককে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় যার ভাগ পান অফিসের সকলেই।

 

বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র সঙ্গীত শিল্পি ও পরিচালক আশরাফ মাহমুদ জানান, ভুমি সংক্রান্ত একটি শুনানীতে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন। দিন শেষে শুনানী হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এধরনের অনেকেই ফিরে যান দিনের পর দিন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাহারবাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা একজন পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) জানিয়েছেন,তাদের একটি জমি অন্যজন নামজারি করে দিয়ে গেছে। সেই নামজারি বাতিল করার জন্য দীর্ঘদিন ভুমি অফিসে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। পরে দালালের মাধ্যমে কাজটি সমাধান করা হয়েছে।

 

পৌর শহরের শিশিরপাড়া গ্রামের রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষেল কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এসিল্যান্ড অফিস থেকে জারি করা নোটিশ তাকে না দিয়ে গায়েব করা হয়েছে। একারনে তার নামজারি বাতিল করেছে। পরবর্তীতে দিনের পর দিন ঘুরে আপিল করা হয়েছে। অবিলম্বে এসিল্যান্ড অফিসের অনিয়ম দূর্নীতি ও হয়রানী বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

 

জানা গেছে,বিগত বছরে প্রতিমাসে প্রায় ৩ হাজার নামজারি সম্পন্ন করা হতো সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেনের যোগদানের পর থেকে প্রতি মাসে নামজারি কমে গেছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছে ভুমি মালিকরা। এদিকে নামজারী না থাকার কারনে জরুরী প্রয়োজনেও ভূমি রেজিস্ট্রিও করতে পারছে না অনেকে। নামজারিসহ ভুমির কাজের ফাইলের স্তুুপ বাড়ছে। দ্রত সময়ের মধ্যে নামজারি সহ অন্যান্য কাজ করতে জমি মালিকদের অনেককেই দালালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।

 

এবিষয়ে কথা বলতে অফিসে গিয়ে সহকারী কমিশনার ভুমি সাদ্দাম হোসেকে পাওয়া যায়নি। ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও ডিসি অফিসে মিটিং আছে মর্মে অফিসের লোকজন জানান। তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।