ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর কমপক্ষে ১৮ সদস্য নিহত হয়েছেন। উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পৃথক হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি আত্মঘাতী হামলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১০ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে একটি গোয়েন্দা সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে। এই হামলার এক দিনেরও কম আগে হওয়া আরেকটি হামলায় আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আরও আটজন সৈন্য নিহত হয়েছেন।
বান্নুর সর্বশেষ হামলার বিষয়ে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, “একজন সন্দেহভাজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী চেকপয়েন্টের কাছে এসে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটায়, তারপরে তার সহযোগীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, হামলায় ১০ জন নিহত এবং আরও সাতজন আহত হয়েছেন।”
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, বিস্ফোরণ ও হামলার এই ঘটনা মালি খেল চেকপয়েন্টের অবকাঠামোর পাশাপাশি সামরিক যানের “উল্লেখযোগ্য ক্ষতি” করেছে। হাফিজ গুল বাহাদুর সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এদিকে খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আরেকটি হামলার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে মঙ্গলবার এই বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বলে অন্য একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বলছে, যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি, তবে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, খাইবার পাখতুখাওয়ার তিরাহ উপত্যকায় জঙ্গিদের সাথে ভয়ঙ্কর বন্দুকযুদ্ধে কমপক্ষে আট নিরাপত্তা কর্মী নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
বার্তাসংস্থা এএফপি মঙ্গলবার জানিয়েছে, বন্দুকযুদ্ধে ৯ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছে। বাগ-ময়দান মারকাজের কাছে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা একটি সামরিক ক্যাম্পে হামলা চালানোর পর সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল।
অন্যদিকে গত সোমবার আহমেদজাই মহকুমার রোচা পোস্ট থেকে অপহৃত হওয়া সাতজন পুলিশকে স্থানীয় উপজাতীয় প্রবীণদের সহায়তায় সফল আলোচনার পর নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম বলছে, উপজাতীয় প্রবীণদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল অজ্ঞাত স্থানে সশস্ত্র অপহরণকারীদের সাথে আলোচনা করে। আলোচনা সফলভাবে সমাপ্ত হয় এবং এর ফলে পুলিশদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয়।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো মুক্তিপণ বা শর্ত ছাড়াই পুলিশ সদস্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে উপজাতীয় প্রবীণরা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।