ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের প্রতারনার মাধ্যেমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে চেকপোষ্ট এলাকায় বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত দুই দিন কড়া অভিযান এবং প্রতারনার মাধ্যেমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কয়েকটি ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় সাধারন পাসপোর্ট যাত্রী এবং চেকপোষ্ট এলাকার ব্যবসায়িদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেেেছ।
বেনাপোল চেকপোষ্ট এলাকায় বেশ কিছু দিন যাবৎ এক শ্রেনীর প্রতারক চক্র ও কিছু ছিনতাইকারী দুর থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের বিভিন্ন কৌশলে বুঝিয়ে তাদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এসব প্রতারক চক্র গাড়ি থেকে পাসপোর্ট যাত্রী নামলে তাদের ইমিগ্রেশন এর আনুষ্ঠানিকতা সহজে করে দিবে লোভনীয় সব কথা বলে নিজেদের কাউন্টারে নিয়ে আসে। কাউন্টারে বসিয়ে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন পুলিশের হয়রানি বাদে পাসপোর্ট বইয়ে ইমিগ্রেশন এর সীল মারা সব যাত্রীদের আগে যাওয়া, ইমিগ্রেশন ফর্ম পুরুন করা ( ফর্ম পুরুণ উঠে গেছে প্রায় এক বছর) সরকারী ট্যাক্স লাইন বাদে ব্যাংক থেকে কেটে দেওয়ার ফাঁদে ফেলে অবশেষে তাদের কত টাকা আছে ফরমে লিখতে হবে বলে টাকা হাতে নিয়ে গুনতে থাকে।
এসব চৌকস গননাকারীরা চোখের পলকে টাকা গুনতে গুনতে তাদের পায়ের নিচে টেবিলের আড়ালে ফেলে দেয়। এভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলে বেনাপোল পোর্ট থানা চেকপোষ্ট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে কয়েকটি কাউন্টার বন্দ ও করে দেয়। এবং পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় দালাল চক্র চেকপোষ্ট এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।
বেনাপোল চেকপোষ্ট এলাকার ব্যবসায়ি মোন্তাজ হোসেন বলেন, পুলিশের অভিযানে বহিরাগত প্রতারক চক্রকে গত দুই দিন ধরে দেখা যায় না। এখানকার ব্যবসায়ি ও সাধারন পাসপোর্ট যাত্রী এদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়ে অর্থ হারাতো। এসব থেকে আমরা অনেকটা শান্তি বোধ করছি।
ঢাকার পাসপোর্ট যাত্রী আলমগীর হোসেন মঙ্গলবার সকালে বলেন, আগে বেনাপোল চেকপোষ্টে পাড়া দিয়ে দালালদের ডাকাডাকি এবং তাদের লোভনীয় কথা বার্তায় অতিষ্ট হতাম। আজ কাউকে দেখছি না। ভাল লাগছে। সকল যাত্রী লাইনে দাড়িয়ে সু-শৃঙ্খল ভাবে ভারত গমন করছে। এর আগে স্থানীয় কিছু লোক এসে লাইনের মধ্যে তাদের লোক ঢুকানো এবং স্থল বন্দরে কর্তব্যরত কিছু নিরাপত্তা প্রহরীদের যোগসাজসে ভিতরে পিছনের লোক আগে প্রবেশ করাত। এতে কতে করে বিশৃঙ্খলা হতো। এবং সাধারন যাত্রী রোগী ও বয়স্ক যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হতো।
বেনাপোল চেকপোষ্টের ব্যবসায়ি কোরবান হোসেন বলেন, দুর দুরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীরা বেনাপোলে আসলে কিছু লোক তাদের বুঝিয়ে সুজিয়ে অর্থ আত্নসাৎ করার অভিযোগ দির্ঘ দিনের থাকলেও গত কযেকদিনে বেনাপোল পোর্ট থানার অভিযানে ওইসব বহিরাগতরা পালিয়েছে । এতে করে যাত্রীরা এ পথে আরো বেশী যাতায়াত করবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন এর এস আই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর যাত্রীদের নিকট থেকে বহিরাগতদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের টাকা ও উদ্ধার করেছি। তবে পরিবেশ এখন ভালো। আমাদের থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় প্রতারকরা পালিয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি করার অভিযোগে ইতিমধ্যে চেকপোষ্ট এলাকার কয়েকটি ঘর তালাবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া এর আগে কয়েকজনকে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আমি চাই সুশৃঙ্খল ভাবে যাতে যাত্রীরা ভারত গমন করতে পারে সেরকম সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে।
এছাড়া বেনাপোল ট্রেন ষ্টেশন ও লোকাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায়ও পুলিশের টহল দল থাকছে। যাতে ওই সকল স্থান থেকে কোন পাসপোার্ট যাত্রীকে কৌশলে কোন দালাল বা প্রতারক নিয়ে যেতে না পারে। এবং চেকপোষ্ট এলাকায় আসলে কে কি ভাবে কি ব্যবসা করে সেগুলোও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন দোকানে বা ঘরে ব্যবসায়িক কোন পণ্য নেই শুধু নাম মাত্র ঘর রয়েছে তাদের এগুলো ও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে তারা খালি ঘরে কে কি করে।