আগামীকাল রোজা রাখবেন বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (১৩ মার্চ) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
গত বছর মিসর ও জর্ডান সফর করেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। সেসময় মুসলিমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোজা রেখেছিলেন তিনি।
এদিকে চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বিকেল ৫টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু এবং অগ্রাধিকারবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত হাই-রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে জাতিসংঘের প্রধান সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন।
জাতিসংঘের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মহাসচিব গুতেরেস বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজে বিশ্বাসী। তাই তিনি পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের মতো রোজা পালন করবেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানের সঙ্গে তিনি এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইফতার করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও আলোকপাত করতে পারেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ ছাড়া জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাদের প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে প্রায় ১৪০০ মানুষ মারা যাওয়ার তথ্য দিয়েছে। ফলে এমন হত্যাকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতার প্রসঙ্গও আনতে পারেন জাতিসংঘ প্রধান।
আগামী শনিবার (১৫ মার্চ) সিভিল সোসাইটির সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকটিকে তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া আন্তর্জাতিক মহলের প্রত্যাশা। গুতেরেস একই প্রত্যাশার কথা বলতে পারেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ থেকে কারিগরি সহযোগিতার আশ্বাস দিতে পারেন গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর নিয়ে বুধবার (১২ মার্চ) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ঘটনার কারণে রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গটি ধামাচাপা পড়ে গেছে। প্রফেসর ড. ইউনূস চাচ্ছেন, এই বিষয়টিকে সবার কাছে হাইলাইট করতে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস উনার (জাতিসংঘ মহাসচিব) সফরের ফলে রোহিঙ্গা বিষয়টি আবার বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসবে।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা আশা করছি উনি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভালো একটি ম্যাসেজ দিবেন। আমরা চাই রোহিঙ্গারা তাদের সম্মান নিয়ে নিজের দেশে যাতে ফিরে যেতে পারে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের টপ প্রাইরোটি। আপনারা জানেন রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা অনেক হ্রাস পেয়েছে। আমরা আশা করছি জাতিসংঘ মহাসচিবের আগমনে এই সহায়তা আরও বৃদ্ধি পাবে।
বার্তাবাজার/এস এইচ