আওয়ামী লীগের সভাপতী মণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রজ্জাক বলেছেন, জনগণের বিপুল সমর্থনে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছিলেন। সেই ২০০৯ সাল থেকে আজকে তৃতীয় মেয়াদে এদেশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে এই সরকার। যতই সমাবেশ হোক না কেন সরকারের পতন হবে না ৷ জনগণ নির্ধারণ করবে কে ক্ষমতায় আসবে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছাসহ ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের সকল শহিদ স্মরণসভায় কৃষিমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে সবসময় জনগণের সমর্থন নিয়ে। এমনকি আন্দলোনের আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়নি। অথচ জিয়া বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করে এদেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলো কিন্তু আন্দোলনের মুখে তাদেরও ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। প্রতিদিন প্রেসক্লাব ও নয়াপল্টনে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করছেন। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার। আপনারা সমাবেশ করছেন তো করেন। কিন্তু জনজীবনকে ধ্বংস করবেন, নষ্ট করবেন সেটি কি গণতন্ত্র?
তিনি বলেন, এই সরকারের দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। জনগণের বিপুল সমর্থনে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছিলেন। সেই ২০০৯ সাল থেকে আজকে তৃতীয় মেয়াদে এদেশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে এই সরকার। যতই সমাবেশ হোক না কেন সরকারের পতন হবে না ৷ জনগণ নির্ধারণ করবে কে ক্ষমতায় আসবে। আমরা নির্বাচন কমিশন করে দিয়েছি। আইন করে নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুন্দর ও সুষ্টু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। অথচ পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নিরপেক্ষ সরকার নাই তবুও তারা নিরপেক্ষ সরকার চায়। যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনের সময়ও তারা ক্ষমতাই থাকবে। আর জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার নির্বাচন করবে। যদি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পতন হয় তাহলে ক্ষমতা হস্তান্তর করব যেমনটি আমরা পূর্বেও করেছিলাম। কিন্তু আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সকলেই অবগত যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা মুখ্য। বঙ্গবন্ধুর ২৩ বছরের সকল আন্দোলন সংগ্রামের সকল অংশ জুড়ে রয়েছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। আর স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ইকবাল হল (বর্তমান শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছিলো ছাত্রলীগের দূর্গ। ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময় আগরতলা হত্যামামলার ফাসির কাঠগড়া থেকে এসে এই হলেই ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে যুগ দিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা পড়ালেখা করে এবং এখান থেকে এদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের তিনটি মূলনীতির প্রথমটি হলো শিক্ষা। এই থেকে ছাত্রলীগকে প্রথমত শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষা নিশ্চিতকরতে হবে ৷
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, আজকের প্রজন্ম জানতে চাই কারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে ষড়যন্ত্রকারী, কারা কারা এই পথটা তৈরি করেছিল, কারা কীভাবে সহোযোগিতা করেছিল। সেজন্য আজকের প্রজন্মের প্রত্যাশা হলো একটি কমিশন গঠন। কমিশন গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদেরকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে চিরতের উৎঘাত করতে হবে। তাহলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের সঞ্চালনায় ও সভাপতি কামাল উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতী মণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুর রহিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মের্শেদুজ্জামান, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিফাত জামান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।