সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানিতে অনিহা ব্যাবসায়ীদের
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে গত ৭ দিনে ভারত থেকে চাল এসেছে ৪০০ মেট্রিক টন। সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ব্যাবসায়িরা বলছেন, “ভারতে চালের দাম বেশি হওয়ায় ব্যাবসায়িদের চাল আমদানি করতে আগ্রহ নাই। তাদের দাবী আমদানি করা চাল বাজারমূল্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে না। তবে সরবরাহ কমে গেলে বাজারে যে সংকট তৈরি হবে এতে চাল সিন্ডিকেটের দল, দাম বাড়িয়ে দিবে। অন্যদিকে আমদানি কারকগন সরকারের কাছে চাল আনার ক্ষেত্রে আরও সুযোগ চেয়েছেন।”
সোনা মসজিদ স্থলবন্দর পরিচালনকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মাইনুল ইসলাম চাল আমদানির এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, ভারত থেকে প্রায় চারশত মেট্রিক্স টন চাল আমদানী করা হলেও কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি বলে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউ মার্কেটের মুদি ব্যাবসায়ী আসগর আলি।
পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মাইনুল ইসলাম বলেন, “প্রায় ৬ মাস পর সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে গত রোববার চাল আমদানি শুরু হয়। ওইদিন চারটি ট্রাকে ২০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়। গত সোমবার দুটি ট্রাকে ৭০ মেট্রিক টন এবং গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আরো দুটি ট্রাকে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।”
আমদানিকারক সফিকুল ইসলাম বলেন, “চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে মোটা চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে দুই শতাংশ শুল্কে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ভারতে চালের যে দাম সে তুলনায় বাংলাদেশে দাম খুব বেশি নয়। কাজেই আমদানি করে ব্যবসায়ীরা খুব একটা লাভবান হতে পারবেন না। তাই ব্যবসায়ীদের চাল আমদানিতে আগ্রহ কম।”
আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, “সারা দেশে ১০২ প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চাল আমদানির ক্ষেত্রে পাঁচটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। শর্তগুলো হলো- বরাদ্দপ্রাপ্ত আমদানিকারকদের আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে চাল দেশে বাজারজাত করতে হবে। আমদানি করা চালের পরিমাণ, গুদামজাত ও বাজারজাতকরণের তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অবহিত করতে হবে। বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি (আমদানি অনুমতি) জারি করা যাবে না। আমদনি করা চাল অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে পুনঃপ্যাকেটজাত করা যাবে না। আমদানি করা বস্তায় চাল বিক্রি করতে হবে।”
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি কাজী শাহাবুদ্দীন বলেন, “চাল আমদানিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের শর্তের কারণে আগ্রহ হারিয়েছেন অনেকে আমদানিকারক। এরপরও যারা অনুমোদন নিয়ে চাল আমদানি করছেন তারা খুব বেশি লাভবান হতে পারবেন না।”
আমদানি কারক আলমগীর জুয়েল বলেন চাল আমদানি করে লাভ না হলে তো ব্যাবসায়ীরা চাল আমদানি করবেন। সরকার আরও একটু সুযোগ বাড়ালে হয়তো ব্যাবসায়িরা চাল আমদানিতে আগ্রহী হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউ মার্কেটের চাল ব্যাবসাায়ি আব্দুর রাজ্জাক বলেন “আগের বর্ধিতদামে চাল বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকা, মাঝারি চাল ৬৬টাকা, মোটা চাল প্রতিকেজি ৫০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।”