পৌর সভার মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে আজ শনিবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সকল রুটের দুরপাল্লার পরিবহন গুলো অনিদৃস্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ফলে ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে।
পরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বেনাপোলের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে নারী শিশু, বৃদ্ধ, রোগীরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। অনেকে বেনাপোল থেকে ইজিবাইক ও লোকাল বাসে করে যশোর যাচেছ। সেখান থেকে ট্রেনে করে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
বেনাপোলে যানজট নিরসনের নামে গত সপ্তাহে যশোরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে স্থানীয় লোকজন ও পরিবহন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বেনাপোল চেকপোস্টে বন্দরের নিজস্ব পরিবহন টার্মিনাল থাকা সত্বেও চেকপোস্ট থেকে ২ কি: মি: দুরে ভারতগামী যাত্রীদের পৌর সভার টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হচেছ রাত ৩ টায়। যা যাত্রীদের জন্য খুবই কষ্টকর।
ফলে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে চেকপোস্টে নির্মিত পরিবহন টার্মিনালটি অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বন্দরের পরিবহন টার্মিনাল থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় বন্ধ রয়েছে।
পাসপোর্ট যাত্রীরা এ ধরনের হয়রানিমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না। গত ২০ বছর ধরে ঢাকা চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নৈশ ও দিবা পরিবহন গুলো যাত্রীদের সরাসরি চেকপোস্টে বন্দরের টার্মিনালে নামিয়ে দিয়ে আসছে। পরে খালি পরিবহন গুলো বন্দরের টার্মিনালে রাখা হতো। ফলে বন্দরে যেমন রাজস্ব আয় হতো তেমনি যাত্রীরাও পায়ে হেটে ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করতে পারতো।
অনক পাসপোর্ট যাত্রী অভিযোগ করে বলেন পার্শ্ববর্তী ভারতীয় চেকপোস্টে পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী পরিবহন টার্মিনাল। বাংলাদেশে বর্ডারে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট যাত্রীদের।
পাসপোর্ট যাত্রী শামীম হোসেন জানান, ঢাকা থেকে পরিবহনে এসে বর্ডার থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে বাস থেকে রাত ৩ টা নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২ ঘন্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর একটা ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি। একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীর নিকট থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর পোর্ট ব্যবহারের জন্য টাকা নিয়ে থাকেন।তাহলে পোর্ট আমাদের কি সেবা দিলো।আমরা চাই চেকপোস্টে অবস্থিত স্থলবন্দর পরিবহন থেকে বাস গুলো চালু হোক।
এ ব্যাপারে পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সাথে আমাদের এবং স্থানীয় সুধী সমাজের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যানজটের কথা বলে সকল পরিবহন বাস গুলি চেকপোস্টের টার্মিনাল থেকে সরিয়ে নিয়ে বেনাপোল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে কাগজপুকুর টার্মিনাল নিয়ে যায় এবং গাড়ি সেখান থেকেই ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলি যাত্রী গুলো বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে কাগজপুকুর চলে যাচ্ছিল।
হঠাৎ করে গতকাল শুক্রবার রাত ৩ টার দিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দুরপাল্লার পরিবহন বাসগুলো আসার পর যাত্রীদের জোরপূর্ব টার্মিনালে নামিয়ে দেয়। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং নানা ধরনের হয়রানি শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীগুলো লোকাল বাসে করে চেকপোষ্টে পাঠান টার্মিনালের থাকা পৌর সভার লোকজন ।
প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে কোন গাড়ি ছাড়িনি এবং বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন বাস এবং দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি।
বেনাপোল পৌর সভার প্রশাসক কাজী নজির হাসান বলেন, রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে সকল দুর পাল্লার পরিবহন বেনাপোল চেকপোস্টে যেতে পারবে। বন্দরে যানজট নিরসনের জন্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। তবে বন্দরের যে পরিবহন টার্মিনাল বর্তমানে খালি অবস্থায় পড়ে আছে। কেন টার্মিনাল খালি পড়ে আছে এটা তাদের বিষয়, এটা আমাদের বিষয় নয়।