আল হিলাল নাকি বার্সেলোনা—গত কয়েকদিন ধরে চলা গুঞ্জনের অবসান অবশেষে ঘটেছে। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি জানালেন, ইন্টার মায়ামিতে যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার (৭ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত একটায় দুটি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান আর্জেন্টাইন এ ফরোয়ার্ড।
মেসির পিএসজি ছাড়ার খবর আগেই জানা গিয়েছিল। ৩৫ বছর বয়সী মেসি এ ফুটবলারকে দলে ভেড়ানোর দৌড়ে ছিল তিনটি ক্লাব। তার (মেসি) সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা, সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল ও যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ইন্টার মায়ামি।
এর মধ্যে আল হিলালের মোটা অঙ্কের আর্থিক প্রস্তাব ও বার্সাকে ঘিরেই বেশি গুঞ্জন রটে ছিল। তবে সব গুঞ্জন উড়িয়ে শেষ পর্যন্ত মায়ামিমুখীই হয়েছেন কাতার বিশ্বকাপজয়ী এ আর্জেন্টাইন।
স্পেনের মুন্দো দেপোর্তিভো ও স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বললেন, আমি মায়ামিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চুক্তি সম্পন্নের কাজ এখনও শতভাগ শেষ হয়নি। কিছু বিষয় এখনও বাকিও আছে। তবু এ পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।
মায়ামিকে বেছে নেওয়ার কারণও জানিয়েছেন আকাশি-নীল শিবিরের এ অধিনায়ক। মেসির দাবি, আমি ইউরোপ ছাড়তে চেয়েছি। এটা সত্য যে আমার সামনে অন্য ইউরোপিয়ান দলের প্রস্তাবও ছিল। তবে সেটা নিয়ে একদমই ভাবিনি। কারণ, ইউরোপে খেললে শুধু বার্সেলোনায় যেতাম।
মেসির মতে, আমি বার্সেলোনাতেই ফিরতে চেয়েছিলাম। তবে এই ভয়ও ছিল, আগের ব্যাপারটা আবারও ঘটতে পারে।
বিশ্বকাপজয়ী এ আর্জেন্টাইনের মন্তব্য, বিশ্বকাপ জিতেছি আর বার্সেলোনায়ও যেতে পারছি না, এমন পরিস্থিতিতে ফুটবলে ভিন্ন রূপে বাঁচতে এবং দৈনন্দিন জীবনকে আরও উপভোগ করতে এখন এমএলএসে যাওয়াকে সঠিক মনে হয়েছে।
এদিকে ইন্টার মায়ামিতে চুক্তির অংশ হিসেবে অ্যাপল ও অ্যাডিডাসের সঙ্গে মুনাফা ভাগাভাগির সুযোগ পাচ্ছেন মেসি।
এর আগে, স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে ২১ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন লিওনেল মেসি। বেতন নিয়ে ঝামেলায় ২০২১ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তবে ফরাসি জায়ান্টদের সঙ্গে তার সম্পর্ক দুই বছরও টেকেনি। প্যারিসের ক্লাবটিতে মেসির দুই বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩০ জুন। ফলে মাত্র ২২ মাসের ব্যবধানেই প্যারিস ছাড়ছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এ ফরোয়ার্ড।
যদিও অনেক আশা-ভরসা নিয়েই পিএসজিতে এসেছিলেন মেসি। মেসিকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার স্বপ্ন দেখেছিল পিএসজি। তবে এর কিছুই পূরণ হয়নি, অধরাই থেকে গেছে। এ ছাড়া মাঠের বাইরের নানান ইস্যুতেও মেসির সঙ্গে পিএসজির সম্পর্কে টানাপোড়নের বিষয়টি বারবার উঠে আসে গণমাধ্যমে।
এ ছাড়াও ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতার পর থেকেই মেসির প্রতি ফরাসি সমর্থকদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। প্রায় প্রত্যেকটি ম্যাচেই মেসিকে দুয়ো দিয়েছেন পিএসজির সমর্থকরা। মেসির বিদায়ী ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গ্রহের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে যে সম্মানটুকু প্রাপ্য মেসির, সেটি কখনোই পিএসজিতে পাননি তিনি।
পিএসজির জার্সিতে দুই মৌসুমে ৭৫ ম্যাচ খেলেছেন মেসি। ৭৫ ম্যাচে ৩২ গোলের পাশাপাশি ৩৫ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। বিদায় বেলায় দলকে লিগ ওয়ানের শিরোপা জিতিয়েছেন আর্জেন্টাইন এ সুপারস্টার।