হত্যা মামলার দীর্ঘ পাঁচ মাস বাইশ দিন পর তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে থেকে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে নাছরিন বেগম (৩৮) নামে এক মহিলার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। মৃত নাছরিন বেগম রায়পুর গ্রামের রফিক শেখের স্ত্রী।

সোমবার (২ ডিসেম্বর )দুপুর ১২ টায় আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য রায়পুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন তালার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল-আমিন, তালা সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাসানুর রহমান এবং তালা থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ শাহিনুর রহমান সহ থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

নিহতের স্বামী রফিক শেখ জানান, আমি জীবন জীবিকার তাগিদে ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে হিসেবে কাজ করি। আমার স্ত্রী নাসরিন আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকে। গত ১০ জুন জানতে পারলাম আমার স্ত্রী মারা গেছে। আমি বাড়িতে এসে দেখি আমার স্ত্রীকে গোছল করিয়ে আমার পরিবারের লোকজন কাফন পড়িয়ে রেখেছে।

আমার স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয় টা নিয়ে আমি মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় গ্রামবাসী আমার মৃত স্ত্রী নাছরিকে জানাজা শেষ কবর দিয়ে দেয়। পরে জানতে পারলাম যে দিন আমার স্ত্রী মারা গেছে ওই দিন রাতে আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়েছিলো মাছিয়াড়া গ্রামের মোসলেম গাজীর পুত্র আলমগীর গাজী ও ইমাম আলী গাজীর পুত্র আবুবকর গাজী। সেই সাথে আমার মৃত স্ত্রী জামাকাপড় দেখলাম ছেড়া, এতে আরো সন্দেহ বেড়ে গেলো।

পরে মৃত স্ত্রীকে গোছল করানো আবিরন বিবি জানান গোছল করানোর সময় স্ত্রী নাসরিন বেগমের যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে রক্ত জমাট বাধা ছিল। বিষয়টি জানার পর বুঝতে পারলাম আমার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার বিষয় নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে বিলম্ব হওয়ার কারণে দায়িত্বরত অফিসার কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। কোর্টে মামলা করলে তালা থানাকে মামলাটি নেওয়ার নির্দেশ দেয়। চলতি বছরের ২৬ জুলাই তালা থানায় মামলা দায়ের হয়। যার নং ১৮। মামলা রুজু হওয়ার পরে ১নং আসামি আলমগীর গাজী আর ২ নং আসামি আবুবকর গাজীকে আটক করে জেলে প্রেরন করেছে তালা থানা পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামীকে করা হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল-আমিন বলেন, নাসরিন বেগমের মৃত্যুর পর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়েছিলো। তাই ঘটনার সত্যতা জানার জন্য আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।