অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন থাকলে পুনরায় ফ্যাসিবাদের উত্থান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভয়েস অব টাইমস এর উদ্যোগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পুঁজি করে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যর দাবিতে ও মহান বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, একটা কথা বার বার বলা হয়, ভারত নাকি যুদ্ধের সময় আমাদেরকে সাহায্য করেছে, আমি এই বিষয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। ভারত তার স্বার্থে বাংলাদেশের মানুষকে সহযোগিতা করার ভান করেছিল। এর কারণ হলো, ভারত তাদের প্রয়োজনে এবং করদ রাজ্য হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে পারবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। বাংলাদেশে একটি পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে তারা দখল না করলেও, বাংলাদেশকে তাদের মতো করে ব্যবহার করতে পারবে। সে কারণেই তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদেরকে সাহায্য করার ভান করেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত কখনো বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের আচরণ দিয়ে বন্ধুত্বের প্রমাণ রাখতে পারেনি। বাংলাদেশে যতবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সময় হয়েছে, ততবার ভারত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিনষ্ট করার জন্য অবদান রেখেছে। তাদের পুতুল ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবকে ক্ষমতায় এনে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হত্যা করেছিল। ২১ বছর পরে আবার শেখ মুজিবের কন্যা ‘খুনি’ হাসিনাকে তাদের পুতুল বানিয়ে বাংলাদেশের মসনদে বসিয়েছিল এই ভারত।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ ছিল দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের ক্রয়ের ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অন্তর্বর্তী সরকার গত চার মাসে দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে পারেনি। তারা আওয়ামী লীগের গোড়া সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রব্যমূল্য এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
বিএনপির এই নির্বাহী কমিটির সদস্য বলেন, খুনি হাসিনা সহ যারা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ছিল সরকারের, কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। বাংলাদেশের ২৮ লাখ কোটি টাকা যারা পাচার করেছে, সে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। একটি জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এসরকারকে প্রধান কাজ ছিল। আজকে যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
ভয়েস অব টাইমস এর সভাপতি মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জামায়াত ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ নায়েবে আমীর এড. ড. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ফারুক হাসান, এনডিপি’র মহাসচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আকন, ভয়েস অব টাইমস এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন।