রাজধানীর মতিঝিল থেকে দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে এগুলে ফুটপাতে ষাটোর্ধ মনিরুল ইসলামের অস্থায়ী দোকান। নানা ধরনের জুতা বিক্রি করেন তিনি। এসব জুতার দর ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। গত সোমবার দুপুরে যখন তার সঙ্গে কথা হয়, তখন তিনি জুতাগুলো সাজাচ্ছেন। কারণ, ক্রেতার চাপ কম। তার আশা কয়েক দিনের মধ্যে ঈদের বাজার জমে উঠবে।
বেচাকেনা কেমন প্রশ্ন করতেই মনিরুল ইসলাম হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, ‘রোজার কারণে সকালের দিকে বেচাকেনা কম হলেও দুপুরের পর জমে উঠে। আগামী সপ্তাহে থেকে ঈদের কেনাকাটা শুরু হলে বেচাকেনা অনেক বাড়বে ।’
মনিরুল ইসলামের মতো বায়তুল মোকাররম এলাকায় আরও কয়েকজন অস্থায়ী দোকানি জানান, বেচাবিক্রি কম হলেও আস্তে আস্তে বাড়ছে। একই কথা জানান, গুলিস্তানের ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও। উভয় জায়গাতেই দুপুরের দিকে ক্রেতার আনাগোনা বাড়ছিলো। ফুটপাত থেকে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষেরা কেনাকাটা করেন।
মতিঝিল ও বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েকদিন আগেও রাজধানীর ফুটপাত ছিল চাঁদাবাজদের দখলে। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। এখন আর ফুটপাতে বসলে দিতে হয় না চাঁদা। ফলে স্বস্তি ফিরেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাদের চাওয়া, এমন পরিস্থিতি বজায় থাক সারা বছর।
মতিঝিল সিটি সেন্টার পার হয়ে ওই এলাকার মূল সড়কের ফুটপাতে মামুন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে বলেন, আগে প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৫০ চাঁদা দিতে হতো, মাসে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। ৫ আগস্টের পর তা দিতে হয় না। এটা আমার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক বড় স্বস্তির। আশা করি আগামী দিনেও এ ধারা বজায় থাকবে।
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতের জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ আনাগোনা। কেডস, চটি, ফরমাল স্যু থেকে শুরু করে তরুণদের পছন্দের সব জুতা পাওয়া যাচ্ছে গুলিস্তানের ফুটপাতেই।
জুতা কিনতে আসা ইমন বলেন, নিয়মিত এখান থেকে জুতা কিনি। মূলত বাজেট ফ্রেন্ডলি, সঙ্গে এক জায়গায় হরেক রকমের জুতা আর কোথাও পাওয়া যায় না। পরিচিত দেশিয় ব্র্যান্ডের দোকানে যে জুতা ৩০০০-৪০০০ টাকা, প্রায় একই রকমের জুতা এখানে পাওয়া যায় ১২০০-১৫০০ টাকার মধ্যে। জুতাও বেশ টেকসই।
আরেক ক্রেতা ফয়সাল জানান, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা থাকলেও এ জুতার বাজার থেকে একটু দেখেশুনে কিনতে হয়। দরদাম করে মোটামুটি কম দামে জুতা পাওয়া যায় বলে সবাই আসে এখানে।