চুয়াডাঙ্গা ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নীরব ভাষায় সবার মন জয় করলো ‘ফ্লো’


গভীর ঘন জঙ্গলে একদল হিংস্র কুকুর তীব্র বেগে ছুটছে এক বিড়ালের পিছে। কোনোরকমে নিজের জীবন বাঁচিয়ে বিড়ালটি নিজের বাড়িতে ফিরে আসে, কিন্তু সেখানে কেও নেই। প্রায় ক্ষয় হয়ে যাওয়া বাড়ি দেখে বোঝা যায় কোনো এক সময় এখানে মানুষের বসবাস ছিল, আর তাদের সাথেই থাকতো বিড়ালটি। বাড়িটি এখন জনমানব শূন্য, দূর দুরান্তেও নেই কোনো মানুষের অস্তিত্ব। 

‘ফ্লো’-তে পোস্ট এপোক্যালিপ্টিক এক সময় দেখানো হয়েছে যেখানে গল্পের প্রধান চরিত্র একটি কালো বিড়াল। জনমানবহীন পৃথিবীতে শান্ত স্বভাবের বিড়ালটির প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে বেঁচে থাকার লড়াই দিয়ে কাহিনী আগাতে থাকে। ভয়ঙ্কর বন্যার পানিতে যখন সমস্ত পৃথিবী তলিয়ে যেতে থাকে তখন ছোট এক পাল তোলা নৌকায় আশ্রয় নেয় বিড়ালটি। ঘটনাক্রমে সেখানে তার সঙ্গী হয় একটি অতি বন্ধুসুলভ কুকুর, এক অলস ক্যাপিবারা, এক বুদ্ধিমান সেক্রেটারি পাখি ও এক ধূর্ত লেমুর। একেক প্রাণীর স্বভাব একরকম কিন্তু দুর্যোগ তাদের বাধ্য করে এক হয়ে কাজ করতে। 

m2desider

ছবি: ডিসাইডার

তবে এই সাধারণ গল্পকে অসাধারণ করে তুলেছে এর ‘ভিজুয়াল স্টোরিটেলিং’। হালের অন্যান্য এনিমেশন ঘরানার ফিল্মগুলোর মতো ‘ফ্লো’- ফিল্মটিতে কোনো পশুপাখি কথা বলে না, পশুসুলভ আচরণই করে তারা। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউসিক ও কিছু সাউন্ড এফেক্ট ছাড়া মুভিতে নেই কোনো সংলাপ। তবে চরিত্রগুলোর কর্মকান্ড দিয়ে তাদের আবেগের প্রকাশ স্ক্রিনের দিকে মনোযোগ ধরে রাখতে বাধ্য করে। 

লাতভিয়ার পরিচালক গিন্টস জিলবালোডিসের এই সৃষ্টি ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর মুক্তি পায়। মুক্তির পর থেকেই বিশ্বজুড়ে সবার মন জয় করে নিয়েছে ‘ফ্লো’, সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে এটি। লাতভিয়া থেকে অস্কারে যে কোনো ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পাওয়া এবং অস্কার জেতা প্রথম চলচ্চিত্র ফ্লো। ৯৭তম অস্কার আসরে সেরা অ্যানিমেটেড ফিচার চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় ফ্লো।

3npr

ছবি: এন পি আর

গোল্ডেন গ্লোব এও ছিল ‘ফ্লো’ এর জয়জয়কার। অ্যানি অ্যাওয়ার্ডস: ৩টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার, নিউ ইয়র্ক ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডস: সেরা অ্যানিমেটেড ফিল্ম, লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডস: সেরা অ্যানিমেটেড ফিল্ম, ন্যাশনাল বোর্ড অফ রিভিউ: সেরা অ্যানিমেটেড ছবি এবং ফিল্ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্পিরিট অ্যাওয়ার্ডস: সেরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ মোট ১১ টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে এই সংলাপবিহীন মাস্টারপিস। 

‘ফ্লো’ যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী, এখান থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। চলচ্চিত্রটির কাহিনীর স্বচ্ছতা, সরলতা, অ্যানিমেশন মাধ্যমের ভিজ্যুয়াল ইমারশনকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে। মাত্র ৮৫ মিনিটের ফিল্মটি দীর্ঘসময়ের জন্য মনে দাগ কাটবে।

সূত্র: বিবিসি ও  দ্য গার্ডিয়ান 



Source link

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

নীরব ভাষায় সবার মন জয় করলো ‘ফ্লো’

আপডেটঃ ১১:১৭:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫


গভীর ঘন জঙ্গলে একদল হিংস্র কুকুর তীব্র বেগে ছুটছে এক বিড়ালের পিছে। কোনোরকমে নিজের জীবন বাঁচিয়ে বিড়ালটি নিজের বাড়িতে ফিরে আসে, কিন্তু সেখানে কেও নেই। প্রায় ক্ষয় হয়ে যাওয়া বাড়ি দেখে বোঝা যায় কোনো এক সময় এখানে মানুষের বসবাস ছিল, আর তাদের সাথেই থাকতো বিড়ালটি। বাড়িটি এখন জনমানব শূন্য, দূর দুরান্তেও নেই কোনো মানুষের অস্তিত্ব। 

‘ফ্লো’-তে পোস্ট এপোক্যালিপ্টিক এক সময় দেখানো হয়েছে যেখানে গল্পের প্রধান চরিত্র একটি কালো বিড়াল। জনমানবহীন পৃথিবীতে শান্ত স্বভাবের বিড়ালটির প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে বেঁচে থাকার লড়াই দিয়ে কাহিনী আগাতে থাকে। ভয়ঙ্কর বন্যার পানিতে যখন সমস্ত পৃথিবী তলিয়ে যেতে থাকে তখন ছোট এক পাল তোলা নৌকায় আশ্রয় নেয় বিড়ালটি। ঘটনাক্রমে সেখানে তার সঙ্গী হয় একটি অতি বন্ধুসুলভ কুকুর, এক অলস ক্যাপিবারা, এক বুদ্ধিমান সেক্রেটারি পাখি ও এক ধূর্ত লেমুর। একেক প্রাণীর স্বভাব একরকম কিন্তু দুর্যোগ তাদের বাধ্য করে এক হয়ে কাজ করতে। 

m2desider

ছবি: ডিসাইডার

তবে এই সাধারণ গল্পকে অসাধারণ করে তুলেছে এর ‘ভিজুয়াল স্টোরিটেলিং’। হালের অন্যান্য এনিমেশন ঘরানার ফিল্মগুলোর মতো ‘ফ্লো’- ফিল্মটিতে কোনো পশুপাখি কথা বলে না, পশুসুলভ আচরণই করে তারা। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউসিক ও কিছু সাউন্ড এফেক্ট ছাড়া মুভিতে নেই কোনো সংলাপ। তবে চরিত্রগুলোর কর্মকান্ড দিয়ে তাদের আবেগের প্রকাশ স্ক্রিনের দিকে মনোযোগ ধরে রাখতে বাধ্য করে। 

লাতভিয়ার পরিচালক গিন্টস জিলবালোডিসের এই সৃষ্টি ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর মুক্তি পায়। মুক্তির পর থেকেই বিশ্বজুড়ে সবার মন জয় করে নিয়েছে ‘ফ্লো’, সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে এটি। লাতভিয়া থেকে অস্কারে যে কোনো ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পাওয়া এবং অস্কার জেতা প্রথম চলচ্চিত্র ফ্লো। ৯৭তম অস্কার আসরে সেরা অ্যানিমেটেড ফিচার চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় ফ্লো।

3npr

ছবি: এন পি আর

গোল্ডেন গ্লোব এও ছিল ‘ফ্লো’ এর জয়জয়কার। অ্যানি অ্যাওয়ার্ডস: ৩টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার, নিউ ইয়র্ক ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডস: সেরা অ্যানিমেটেড ফিল্ম, লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডস: সেরা অ্যানিমেটেড ফিল্ম, ন্যাশনাল বোর্ড অফ রিভিউ: সেরা অ্যানিমেটেড ছবি এবং ফিল্ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্পিরিট অ্যাওয়ার্ডস: সেরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ মোট ১১ টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে এই সংলাপবিহীন মাস্টারপিস। 

‘ফ্লো’ যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী, এখান থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। চলচ্চিত্রটির কাহিনীর স্বচ্ছতা, সরলতা, অ্যানিমেশন মাধ্যমের ভিজ্যুয়াল ইমারশনকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে। মাত্র ৮৫ মিনিটের ফিল্মটি দীর্ঘসময়ের জন্য মনে দাগ কাটবে।

সূত্র: বিবিসি ও  দ্য গার্ডিয়ান 



Source link