অ্যাজমা আক্রান্তরা প্রায় গোটা বছরই সমস্যায় থাকেন। একটু বেচাল হলেই অ্যাজমা অ্যাটাকের জন্য তাদের জটিলতায় পড়তে হয়। তাই সব রকমভাবে সাবধান থাকতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে অবশ্যই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য চিকিৎসার পাশাপাশি জীবনযাত্রা ও ডায়েটে পরিবর্তন আনা জরুরি।
অ্যাজমা হল ফুসফুসের সমস্যা। এই রোগে ফুসফুসে অ্যালার্জিজনিত কারণে প্রদাহ হয়। ফলে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। অ্যাজমা অ্যাটাকের সময় হাতের কাছে ইনহেলার থাকলে সব থেকে সুবিধা হয়। এই ওষুধটি এই সমস্যার চটজলদি সমাধান করতে পারে।
তবে, অ্যাজমা অ্যাটাক এলে না হয় ইনহেলার দিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু সেই পর্যন্ত সমস্যা গড়াতে দেওয়াই উচিত নয়। বরং আপনাকে অ্যাজমা অ্যাটাক প্রতিরোধের রাস্তা জানতে হবে। তবেই নিশ্চিন্তে সুস্থ থাকা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ধুলো-বালি, পোষ্যের রোম ইত্যাদি থেকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি রোগীদের ডায়েটে জোর দিতে হবে। তবেই অসুখ থেকে বাঁচতে পারবেন।
১. ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার খান
অ্যাজমার সমস্যা ভুক্তভোগীদের অবশ্যই খেতে হবে ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ছোটদের মধ্যে অ্যাজমার সমস্যা দূর করে দিতে পারে এই ভিটামিন। তাই নিয়মিত এই ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে এই কয়েকটি খাবারে ভিটামিন ডি পাবেন-
১. স্যালমন মাছ
২. দুধ ও ফর্টিফায়েড দুধ
৩. ফর্টিফায়েড অরেঞ্জ জুস
৪. ডিম
তবে আপনার ডিম ও দুধে অ্যালার্জি থাকলে এই দু’টি খাবার এড়িয়ে চলুন।
২. ভিটামিন-এ খেলেই সমস্যা কমবে
হেলথলাইন জানাচ্ছে, ভিটামিন-এ অ্যাজমা অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতে পারে। আসলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ভিটামিন-এ শরীরে কম থাকলে এই রোগ জাপটে ধরে। আর এই ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত থাকলে ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে গাজর, মিষ্টি আলু, সবুজ শাক, সবজি, ব্রকোলি পাতে রাখুন। এই খাবারগুলিতে অনেকটা পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে। নিয়মিত খেলে শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি দ্রুত কমবে।
৩. আপেল খেলেই মোক্ষলাভ
আপেলের স্বাদের জাদুতে সকলেই প্রায় মজে থাকেন। তবে শুধু রূপ ও স্বাদের দিকে নজর দিলেই হবে না, বরং এই ফলের গুণও অপরিসীম। গবেষণা জানাচ্ছে, নিয়মিত আপেল খেলে অ্যাজমার আশঙ্কা কমে। এমনকি ফুসফুসও নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে। এই কারণে অ্যাজমা রোগীরা অবশ্যই ‘অ্যান অ্যাপেল এ ডে’ থিওরিতে ভরসা রাখুন। রোজ দিনের যে কোনো সময় আপেল খান। আশা করছি সুস্থ থাকবেন।
৪. কলায় কমবে শ্বাসকষ্ট
অনেকেই ভাবেন, কলা খেলেই বুঝি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাবে, ঠাণ্ডা লাগবে। যদিও বিষয়টি একবারেই তেমন নয়। উল্টে কলা খেলে শরীর সুস্থ থাকে। কলা খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত শিশুরা সুস্থ থাকে। এতে এমন কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা লাং ফাংশন বৃদ্ধি করে। ফলে শ্বাস নিতে সুবিধা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতেই হবে।
৫. ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার থাকুক পাতে
আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিওলজি-তে জানানো হয়, ১১ থেকে ১৯ বছরের বালক বা বালিকা যাদের শরীরে ম্যাগনেশিয়াম কম রয়েছে, তাদের ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করে না। তাই অ্যাজমা আক্রান্ত সব বয়সিদের ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে পাতে রাখুন, পালং, কুমড়োর বীজ, ডার্ক চকোলেট, স্যালমন ইত্যাদি। আশা করছি কিছুদিনেই সমস্যা কমবে।