বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, এই মুহূর্তে দেশ ও গণতন্ত্র উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে।
আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের (ইউবিআই) কার্যকারিতা মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংলাপে ইউবিআইয়ের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন যে সরকার গঠিত হয়েছে তাদের প্রতি মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা বেশি। সরকারও মানুষের এ আশার প্রতি সম্মান ও সহনশীল। আমি এই মুহূর্তটাকে দেশ, গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের সন্ধিক্ষণ হিসেবে আখ্যায়িত করছি। এরকম সন্ধিক্ষণে আমাদের যত ধরনের স্বপ্ন, যত ধরনের আকাঙ্ক্ষা আছে তুলে ধরতে হবে। এটিই সঠিক সময়।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটা সমাজ গড়ব যেখানে মানুষ উন্নয়ন ও বিকাশের নিশ্চয়তা পাবে। সেই সেই নিশ্চয়তার অন্যতম বিষয় হলো, মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া, জীবনধারণের ন্যূনতম উপকরণ আছে সেইগুলোকে নিশ্চয়তা দেওয়া। আমাদের সংবিধানেও প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক, আর্থিক ও মানবিক নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া আছে।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার আলোচনা চলছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটিই এখন সময়; এ রকম প্রতিশ্রুতিশীল ধারণাকে জনগণের সামনে নিয়ে আসা। সমস্ত নাগরিকের জন্য পর্যায়ক্রমে একটি ন্যূনতম আর্থিক নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি কি না তা এই গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টচার্য বলেন, আমাদের দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু বৈষম্য বেড়েছে। দারিদ্র্য এমন অবস্থায় আছে যদি হঠাৎ করে একটা শক আসে, তাহলে দেখা যায় অনেক মানুষ আবার দরিদ্র হয়ে যায়। সামাজিক নিরাপত্তায় অনেক দুর্বলতা আছে। ভাতা অনেকেই পায় না। আবার দীর্ঘদিন ধরে ভাতার পরিমাণ না বাড়ায় এর কার্যকারিতা হারায়। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা খুব একটা ভালো না। ট্যাক্স জিডিপি রেশিও অনেক কম।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সবার জন্য ন্যূনতম জীবন মান নিশ্চিত করা যায় এজন্য ইউবিআই করা হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, তা এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এই ইউবিআই শুধু উন্নত দেশেই নয়, নিম্ন মধ্য আয়ের দেশও নিম্ন আয়ের দেশেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। সবাইকে ন্যূনতম আয় দেওয়া হলে এটায় কোনো অসুবিধা নেই; কিন্তু এখানে বড় চিন্তার জায়গা হলো আর্থিক সক্ষমতা হবে কীভাবে।