চুয়াডাঙ্গা ০১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ

জেনে নিন রোজা ভাঙ্গার কারণ গুলো

রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহ সঠিকভাবে রোজা পালন করতে চায়। কিন্তু অনেকেই জানে না কী কী কারণে রোজা ভেঙে যায়।

 

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, হে ঈমানদাররা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর করা হয়েছে, যাতে তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’(সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

রোজা ভঙ্গের কারণগুলো

সাধারণত দুই কারণে রোজা ভঙ্গ হয়। প্রথমত. রোজা ভঙ্গ হবে এবং কাজা ও কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব। আর দ্বিতীয়ত. রোজা ভঙ্গ হবে এবং শুধুমাত্র কাজা আবশ্যক হবে।

প্রথম প্রকারের কারণ উল্লেখ করা হলো:

 

১. রমজানে রোজা রেখে দিনে ইচ্ছাকৃত স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

২. রোজা রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে।

ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, ‘রমজানে রোজা রেখে ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে এর বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে দিনে সহবাসকারীর বিধানের মতো হবে।’অর্থাৎ তাকে কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে। (মাবসুত, পৃষ্ঠা : ৩/৭৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৬)

 

 

৩. বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা পান করলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং কাজা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে। (রদ্দুল মুহতার, পৃষ্ঠা : ৩/৩৮৫)

৪. সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানার পরও বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খাবার খেলে বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত থাকলে কাযা-কাফফারা উভয়ই জরুরি হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭; মাআরিফুল কুরআন, পৃষ্ঠা : ১/৪৫৪-৪৫৫)

পক্ষান্তরে, যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং শুধুমাত্র কাজা করা ওয়াজিব।

কারণগুলো উল্লেখ করা হলো-

 

 

১. ভুলে পান করা বা খাওয়া ও স্ত্রী সহবাসের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে খেলে বা পান করলে রোজা ভেঙে যায়। (ফতোয়ায়ে শামি, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা ৩৭৫)

৩. কানে বা নাকের ছিদ্রে তরল ওষুধ দিলে রোজা ভেঙে যায়। (এমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ১২৭)

৮. দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে যদি থুথুর সঙ্গে ভেতরে চলে যায়। আর রক্তের পরিমাণ যদি থুথুর সমান বা বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে [বুখারি ১/২৬০]। বিড়ি সিগারেট, হুঁকা পান করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করা জরুরি [শামি ৩/৩৬৬]।

৯. যদি কোনো ব্যক্তি মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যায় এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক হয়ে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। (এমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ১৭২)

১০. হস্তমৈথুন করলেও রোজা ভেঙে যায়। (দারুল উলুম, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা ৪১৭)

 

১১. কুলি করার সময় যদি অনিচ্ছাকৃত পানি গলা দিয়ে পেটে চলে যায় তাহলে রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি রোজার কথা স্মরণই না থাকে, পানি মুখে নিয়ে খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙবে না [তাতারখানিয়া ৩/৩৭৮]।

১২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ৩৩৭)

১৩. নাকের রক্ত পেটে চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা ৪২৯)

১৪. যদি রোজা অবস্থায় এমন ইঞ্জেকশন গ্রহণ করে যা পেটের মধ্যে অথবা মস্তিষ্কের মধ্যে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে [জাওরাহিরুল ফিকহ ১/৩৭৯]।

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ সদর দফতর

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

জেনে নিন রোজা ভাঙ্গার কারণ গুলো

প্রকাশ : ০৯:২৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহ সঠিকভাবে রোজা পালন করতে চায়। কিন্তু অনেকেই জানে না কী কী কারণে রোজা ভেঙে যায়।

 

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, হে ঈমানদাররা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর করা হয়েছে, যাতে তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’(সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

রোজা ভঙ্গের কারণগুলো

সাধারণত দুই কারণে রোজা ভঙ্গ হয়। প্রথমত. রোজা ভঙ্গ হবে এবং কাজা ও কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব। আর দ্বিতীয়ত. রোজা ভঙ্গ হবে এবং শুধুমাত্র কাজা আবশ্যক হবে।

প্রথম প্রকারের কারণ উল্লেখ করা হলো:

 

১. রমজানে রোজা রেখে দিনে ইচ্ছাকৃত স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

২. রোজা রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে।

ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, ‘রমজানে রোজা রেখে ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে এর বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে দিনে সহবাসকারীর বিধানের মতো হবে।’অর্থাৎ তাকে কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে। (মাবসুত, পৃষ্ঠা : ৩/৭৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৬)

 

 

৩. বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা পান করলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং কাজা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে। (রদ্দুল মুহতার, পৃষ্ঠা : ৩/৩৮৫)

৪. সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানার পরও বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খাবার খেলে বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত থাকলে কাযা-কাফফারা উভয়ই জরুরি হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭; মাআরিফুল কুরআন, পৃষ্ঠা : ১/৪৫৪-৪৫৫)

পক্ষান্তরে, যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং শুধুমাত্র কাজা করা ওয়াজিব।

কারণগুলো উল্লেখ করা হলো-

 

 

১. ভুলে পান করা বা খাওয়া ও স্ত্রী সহবাসের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে খেলে বা পান করলে রোজা ভেঙে যায়। (ফতোয়ায়ে শামি, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা ৩৭৫)

৩. কানে বা নাকের ছিদ্রে তরল ওষুধ দিলে রোজা ভেঙে যায়। (এমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ১২৭)

৮. দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে যদি থুথুর সঙ্গে ভেতরে চলে যায়। আর রক্তের পরিমাণ যদি থুথুর সমান বা বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে [বুখারি ১/২৬০]। বিড়ি সিগারেট, হুঁকা পান করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করা জরুরি [শামি ৩/৩৬৬]।

৯. যদি কোনো ব্যক্তি মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যায় এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক হয়ে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। (এমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ১৭২)

১০. হস্তমৈথুন করলেও রোজা ভেঙে যায়। (দারুল উলুম, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা ৪১৭)

 

১১. কুলি করার সময় যদি অনিচ্ছাকৃত পানি গলা দিয়ে পেটে চলে যায় তাহলে রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি রোজার কথা স্মরণই না থাকে, পানি মুখে নিয়ে খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙবে না [তাতারখানিয়া ৩/৩৭৮]।

১২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ৩৩৭)

১৩. নাকের রক্ত পেটে চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা ৪২৯)

১৪. যদি রোজা অবস্থায় এমন ইঞ্জেকশন গ্রহণ করে যা পেটের মধ্যে অথবা মস্তিষ্কের মধ্যে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে [জাওরাহিরুল ফিকহ ১/৩৭৯]।