চুয়াডাঙ্গা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবে এবারও ভোট দিল না ভারত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে একটি শুক্রবার একটি রেজল্যুশন পাস করেছে জাতিসংঘ; এবং বরাবরের মতো এবারও সেই রেজল্যুশনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারত।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিন্দাসূচক এই রেজল্যুশন উপস্থাপনের পর পরিষদের ১৪২টি সদস্যরাষ্ট্র এটির পক্ষে ভোট দেয়, ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ভারতসহ ৩২টি সদস্যরাষ্ট্র এবং রাশিয়াসহ ৭ সদস্যরাষ্ট্র রেজল্যুশনের বিপক্ষে ভোট প্রদান করে।

ভারতের ব্যতীত আরও যেসব দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশ হলো চীন, ইরান, ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আর বিপক্ষে ভোট দেওয়া ৭ সদস্যরাষ্ট্র হলো রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া, মালি ও নিকারাগুয়া।

গত এক বছরে এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কয়েকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা বা রেজল্যুশন উপস্থাপন করেছে জাতিসংঘ; কিন্তু প্রায় ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে দক্ষিণ এশিয়ার সুপার পাওয়ার বলে পরিচিত ভারত।

যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে ভারত অবশ্য একবারও সরাসরি রাশিয়াকে সমর্থন করে কোনো বক্তব্য দেয়নি, বরং দেশটির প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, রাষ্ট্রদূত ও সরকারি কর্মকর্তারা কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপের ভিত্তিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের পক্ষে বলে আসছেন।

এই অবস্থানের জন্য অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের থেকে ব্যাপক চাপ সহ্য করতে হয়েছে ভারতকে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একাধিকবার প্রকাশ্যে ভারতকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও জাতিসংঘে ‘সঠিক কাজ’ করার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু ভারত তার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। তারপর থেকেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্রতা স্থাপন করে দেশটি।

সেই হিসেবে ভারত ও রাশিয়ার মৈত্রীর বয়স ৭ দশকেরও বেশি। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করে আসছে ভারত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে ভারতকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে আসছে রাশিয়া। ফলে অন্যান্য দেশে যখন জ্বালানি তেলের জন্য হাহাকার চলছে, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, তখনও তুলনামূলকভাবে অনেক স্থিতিশীল আছে ভারতের অর্থনীতি।

কেবল অস্ত্র-জ্বালানিই নয়, নিজেদের সবচেয়ে স্পর্ষকাতর ইস্যু কাশ্মির নিয়েও রাশিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ ভারত। কয়েক বছর আগে কাশ্মির ইস্যু সমাধানে জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মাধ্যমে পরিষদে এ বিষয়ক প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিল দেশটি।

কিন্তু পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়ার আপত্তির (ভেটো) কারণে আর পাস হয়েনি সেই প্রস্তাবটি।

শুক্রবার নতুন নিন্দা রেজল্যুশনের ওপর যখন ভোট আহ্বান করা হয় সাধারণ পরিষদে, সে সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেন, ‘কোনো (নিন্দা) প্রস্তাবনা মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান নয়।’

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

শখ থেকে শুরু, ক্ষুদ্র ব্যবসায় সফল নিপুন 

avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবে এবারও ভোট দিল না ভারত

প্রকাশ : ০৪:০০:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে একটি শুক্রবার একটি রেজল্যুশন পাস করেছে জাতিসংঘ; এবং বরাবরের মতো এবারও সেই রেজল্যুশনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারত।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিন্দাসূচক এই রেজল্যুশন উপস্থাপনের পর পরিষদের ১৪২টি সদস্যরাষ্ট্র এটির পক্ষে ভোট দেয়, ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ভারতসহ ৩২টি সদস্যরাষ্ট্র এবং রাশিয়াসহ ৭ সদস্যরাষ্ট্র রেজল্যুশনের বিপক্ষে ভোট প্রদান করে।

ভারতের ব্যতীত আরও যেসব দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশ হলো চীন, ইরান, ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আর বিপক্ষে ভোট দেওয়া ৭ সদস্যরাষ্ট্র হলো রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া, মালি ও নিকারাগুয়া।

গত এক বছরে এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কয়েকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা বা রেজল্যুশন উপস্থাপন করেছে জাতিসংঘ; কিন্তু প্রায় ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে দক্ষিণ এশিয়ার সুপার পাওয়ার বলে পরিচিত ভারত।

যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে ভারত অবশ্য একবারও সরাসরি রাশিয়াকে সমর্থন করে কোনো বক্তব্য দেয়নি, বরং দেশটির প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, রাষ্ট্রদূত ও সরকারি কর্মকর্তারা কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপের ভিত্তিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের পক্ষে বলে আসছেন।

এই অবস্থানের জন্য অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের থেকে ব্যাপক চাপ সহ্য করতে হয়েছে ভারতকে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একাধিকবার প্রকাশ্যে ভারতকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও জাতিসংঘে ‘সঠিক কাজ’ করার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু ভারত তার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। তারপর থেকেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্রতা স্থাপন করে দেশটি।

সেই হিসেবে ভারত ও রাশিয়ার মৈত্রীর বয়স ৭ দশকেরও বেশি। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করে আসছে ভারত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে ভারতকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে আসছে রাশিয়া। ফলে অন্যান্য দেশে যখন জ্বালানি তেলের জন্য হাহাকার চলছে, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, তখনও তুলনামূলকভাবে অনেক স্থিতিশীল আছে ভারতের অর্থনীতি।

কেবল অস্ত্র-জ্বালানিই নয়, নিজেদের সবচেয়ে স্পর্ষকাতর ইস্যু কাশ্মির নিয়েও রাশিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ ভারত। কয়েক বছর আগে কাশ্মির ইস্যু সমাধানে জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মাধ্যমে পরিষদে এ বিষয়ক প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিল দেশটি।

কিন্তু পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়ার আপত্তির (ভেটো) কারণে আর পাস হয়েনি সেই প্রস্তাবটি।

শুক্রবার নতুন নিন্দা রেজল্যুশনের ওপর যখন ভোট আহ্বান করা হয় সাধারণ পরিষদে, সে সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেন, ‘কোনো (নিন্দা) প্রস্তাবনা মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান নয়।’