মোংলায় বিস্তীর্ন ধান ক্ষেতে লবণ পানি ঢুকানোতে শতশত বিঘা জমির ধান পুড়ে ও পঁচে নষ্ট হচ্ছে। ধান চাষের জন্য ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত চিংড়ি ঘের মালিকদেরকে ঘেরে লবণ পানি তুলতে নিষেধ করেন স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘের মালিকেরা রাতে আধারে চিংড়ি চাষের জন্য লবণ পানি ঢুকানোতে মাঠের ধানে পচন ধরেছে এবং লবণে পুড়ে যাচ্ছে।
লবণ পানি ঢুকিয়ে ধানের ক্ষতি করায় এর প্রতিবাদ, প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ দাবীতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন ধান চাষীরা।বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া ও বালুরমোড় এলাকার ধান চাষীরা এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এ সময় চাষীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা রাখা যাবেনা, তার ওই কথার গুরুত্বে আমরা গত ডিসেম্বরে ধানের চাষাবাদ শুরু করি।
ধান চাষাবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানালে তিনি ধান লাগাতে এবং জমি/ঘেরে লবণ পানি না ঢুকাতে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন মাইংকি করিয়ে দেন। তাতে ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত নদী, খাল, ব্রিজ, কালভার্ট থেকে লবণ পানি ঢুকানো যাবেনা বলে নিষেধাজ্ঞা থাকে।
ফলে ধান চাষাবাদে ফলনও ভাল হয়, কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে ঘের মালিকেরা লবণ পানি ঢুকানোতো আমাদের শত শত বিঘা জমির হাজার হাজার মণ ধান নষ্ট হওয়ায় আমরা বিরাট ক্ষতিতে পড়েছি। আমরা প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার, বিচার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
আর এমনই অবস্থা বিরাজ করছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জমির ধান ও চিংড়ি চাষীদের মধ্যে।
গত বছর যেখানে ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিলো, এবছর সেখানে ২০০হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় লবণাক্তায় আক্রান্ত হয়েছে মাঠের বোরো ধান। তবে আগেভাগে ডিসেম্বর না করে নভেম্বরে বীজ বপন করে চাষাবাদ করলে লবণের আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এখানকার কৃষকদের।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সহকারী কমিশনার ভূমি) মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, লবণ পানি ঢুকানো ও ধানের ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।