ছোট, বড় আর মাঝারি গরুর সমাহারের মধ্য দিয়ে জমতে শুরু করেছে মেহেরপুরের কোরবানির পশু হাট। রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্রগ্রাম থেকে আসছেন গরুর ব্যাপারিরা। তাদের সাথে টক্কর দিয়ে কোবানির পশু কিনছেন স্থানীয় ক্রেতারা। পর্যাপ্ত পশু আমদানি আর কাঙ্খিত ক্রেতার উপস্থিতিতে স্বস্তিতে রয়েছেন গরু পালনকারীরা।
তবে গতকাল শুক্রবার বামন্দী-নিশিপুর পশু হাটে গরুর সমাহার হলেও কাঙ্খিত ক্রেতা ছিল না। অন্যদিকে দেশে পর্যাপ্ত গুরু আছে দাবি করে বাইরে থেকে গরু আমদানি না করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ব্যাপারি ও খামারীরা।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলাসহ আশেপাশের জেলার মধ্যে যেকয়টি বড় পশু হাট রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গাংনীর বামন্দী-নিশিপুর পশু হাট। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার এখানে পশু হাট বসে। প্রতি হাটের স্বাভাবিক বেচাকেনার সাথে যুক্ত হয়েছে কোরবানির পশু কেনাবেচা।
মেহেরপুর জেলা ছাড়াও কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনাসহ আশেপাশের জেলা থেকে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ আসছে এই হাটটিতে। হাটের প্রবেশপথের আশেপাশের এক কিলোমিটার জুড়ে গরু বাহনের যানের ভিড়। হাটের মধ্যে ব্যাপারিদের হাকডাক আর সাধারণ ক্রেতাদের গরু পছন্দের প্রতিযোগিতা। গরু ছাগলের আকার অনুযায়ী দরাদম করছেন ক্রেতা ও পশু মালিকরা। গেল বছরের মতো এবারও এ হাটটিতে পাওয়া যাচ্ছে ছোট, বড় আর মাঝারি আকারের গরু। এর মধ্যে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত কিংবা দলগত কোরবানির জন্য বেড়েছে মাঝারি আকারের গরুর কদর।
এদিকে শুক্রবারের হাটে জেলা ছাড়াও বাইরের অনেক জেলার গরযু আমদানি হয়েছিল। তবে কাঙ্খিত ক্রেতার দেখা না পেয়ে হতাশ হয়ে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেকে। গরুর দাম নিয়ে স্থানীয় ব্যাপারি আর বাইরের ব্যাপারিদের কথার মধ্যে ভিন্নমত লক্ষ্যণীয়।
চট্রগ্রাম থেকে আসা ব্যাপারি আনোয়ার হোসেন জানান, আজকের বাজার অনেক চড়া। এখানে যে দাম হাকা হচ্ছে তাতে সুবিধা হচ্ছে না। কারণ চড়া দামে কিনে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছুতে গিয়ে অনেক খরচ রয়েছে। তাই কাঙ্খিত পরিমাণ গরু না কিনেই ফিরে গেছেন অনেক ব্যাপারী।
স্থানীয় ব্যাপারি ইখলাছ হোসেন জানান, গ্রাম থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতি মণ মাংস আনুমানিক ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা হিসেবে গরু কেনা হচ্ছে। অথচ হাটে এসে কেনা দামই পাচ্ছেন না তারা। ফলে অনেক ব্যাপারি গরু না বেচে বাড়ি ফিরে গেছেন। আগামি দিনের হাটে ভাল দামের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় ব্যাপারি ও খামারীরা।
কয়েকজন খামারী জানান, গেল এক বছরে গো খাদ্যের ব্যাপক দর বৃদ্ধিতে গরু পালন খরচ বেড়েছে। কিন্তু গরু বিক্রি করতে গিয়ে সেই দাম উঠছে না। এর মধ্যে যদি বাইরে থেকে গরু আনা হয় তাহলে খামারীদের পথে বসতে হবে। দেশে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে যা দিয়ে কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে বলেও দাবি করেন খামারীরা।
এদিকে হাটের সার্বিক নিরাপত্তায় হাট মালিকদের নিজস্ব ব্যবস্থার পাশাপাশি র্যাব পুলিশের টহল রয়েছে।
বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই ইসরাফিল হোসেন জানান, পোষাকী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকেও নজরদারি করছেন পুলিশ সদস্যরা। হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা।
কোরবানির এই পশু হাট সপ্তাহে দুইদিন করে চলমান থাকবে ২৬ জুন পর্যন্ত।
আগামি হাটগুলোতে কাঙ্খিত দর পাওয়ার মধ্য দিয়ে হাট আরও জমজমাট হবে বলে আশা প্রকাশ করলেন হাট ইজারাদার আমিরুল ইসলাম শেখ।