টানা বর্ষণে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় কাঁচা মরিচের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে যৎসামান্য মিললেও দর আকাশচুম্বি। প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে। তবে এখন বাজারে মরিচ নেই বললেই চলে।
তাছাড়া কেজি দরে দাম চাওয়াও হচ্ছে না। বিক্রেতাদের কাছে দাম যানতে চাইলে তারা জানাচ্ছেন, কাঁচামরিচ ৮০-৮৫ টাকা শ’। অর্থাৎ, ১০০ গ্রাম কাঁচামরিচের দাম হাঁকাচ্ছেন তারা। বিক্রেতারা আর কেজির দর বলছেন না।কারণ, তাদের কাছে যেমন কাঁচামরিচ নেই, তেমনি ক্রেতাদেরও কেজি ধরে কেনার সাধ্য নেই।
কৃষকরা বলছেন, বর্ষায় ফলন কমে যাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী কার্পাসডাঙ্গা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে শতাধিক কাঁচামাল ব্যবসায়ী থাকলেও একজনের কাছে মাত্র ৩ কেজি মরিচ আছে। আজ রবিবার (২ জুলায়) একই অবস্থা দেখা গেছে দামুড়হুদা উপজেলার হাট-বাজারে।
প্রায় ৫০ জন ব্যবসায়ীর মধ্যে শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে রয়েছে মাত্র আধাকেজির মতো মরিচ। উভয় বাজারেই একই অবস্থা, ১০০ গ্রাকাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।কাঁচামাল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে এমনিতে ঝালের বাজার একটু বেশি হয়। কিন্তু এবার অতিরিক্ত হয়ে গেছে। কোনো আমদানি নেই চুয়াডাঙ্গা আড়তে।ঘণ্টাখানেক বসে থেকে ফিরে যাচ্ছিলাম। পথে এক চাষি আধাকেজির মতো মরিচ বিক্রি করেন ৭০০ টাকা কেজি দরে। পরে তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছি।কোনো ক্রেতা ১০০ গ্রামের বেশি কিনছেন না।
কার্পাসডাঙ্গা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী রেজাউল হক বলেন, কোথাও কাঁচা ঝাল পাওয়া যাচ্ছে না। এক অনুষ্ঠানে এক কেজি ঝাল দেওয়ার কথা ছিল। কোথাও মেলেনি। পরে তিন কেজি এক চাষির কাছে পেয়েছিলাম। তবুও দাম নিয়েছে ৮০০ টাকা কেজি।
ক্রেতা কার্পাসডাঙ্গার কোমরপুর গ্রামের জাহিদুর রহমান মুকুল বলেন, কাঁচামরিচ এত দাম কখনো দেখিনি। বাজারে কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে এক ব্যবসায়ীর কাছে সামান্য কিছু ছিল। ১০০ গ্রাম ৮৫ টাকায় কিনলাম।কৃষক আবু হানিফ বলেন, তার উপজেলার জয়রামপুর মাঠে দুই বিঘা জমিতে কাঁচামরিচের চাষ করেছি। অতিরিক্ত তাতে গাছের ফুল ঝরে গেছে। আবার বর্তমানে অতিবৃষ্টির কারণে ফুল-ফল হচ্ছে না। দুই বিঘায় চাষ করা সত্বেও গতকাল বাজার থেকে ৮০ টাকা দিয়ে ১০০ গ্রাম কিনতে হয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি অতিরিক্ত তাবদাহে ক্ষেতের ফুল-ফল ঝরে গেছে। বর্তমানে সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতের অধিকাংশ জমির মরিচের গাছ নষ্ট হওয়ায় চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে।